অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাদ্য সামগ্রী এবং তার গুণাবলী | Antioxidant Rich Foods in Bengali

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শব্দটির সাথে বর্তমাণ সময়ে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের নাম সর্বাধিক শুনতে পাওয়া যায় এর উপযোগীতার কারণেই। এখন জানা দরকার এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে কী কী উপকার করে। এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো আমাদের শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্যের ভূমিকা কী, এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি কি কি, শরীরে কতটা পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি জরুরী ইত্যাদি। তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদির বিষয়ে জানতে হলে এই প্রবন্ধে চোখ রাখুন।
In This Article
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আসলে কী –
অ্যাণ্টিঅক্সিডেন্ট এমন এক ধরণের পদার্থ যা কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাদ্যেই এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সবুজ শাক সবজি, ফল ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রধান উৎস হল বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন, লাইকোপেন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-ই। এই সব উপাদান গুলি প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া যায়। এছাড়াও কৃত্রিম উপায়ে প্রস্তুত করা যায়। (1)
সুস্বাস্থ্য গঠনের ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভূমিকা –
সুস্বাস্থ্য গঠনের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা ফ্রি র্যাডিক্যালস্ থেকে শরীর কে রক্ষা করতে সহায়তা করে। ফ্রি র্যাডিক্যাল্স বা মুক্ত অনুর কারণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগ, মধুমেহ, অ্যালজাইমারস, পারকিন্সসন রোগ, চোখের অসুখ বিশেষ করে গ্লুকোমার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
এসব ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে মানুষকে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করে। এটা ফ্রি র্যাডিক্যালসের প্রভাব হ্রাস করে এবং কোষের ক্ষতির সম্ভবনা নির্মূল করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।(2)
মনুষ্য দেহে দৈনিক কতটা পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রয়োজন –
বিভিন্ন গবেষণা সূত্রে জানা গিয়েছে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দৈনিক ২৫০০ ক্যালোরি শক্তির প্রয়োজন এবং ১১,০০০ ওআরএসি একক অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রয়োজন। প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার ক্ষেত্রে দৈনিক ১৮০০ ক্যালোরি শক্তির প্রয়োজন এবং নূন্যতম ৮,০০০ ওআরএসি একক অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রয়োজন হয়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের স্বাস্থ্যোপযোগীতা –
মানব শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে একথা মাথায় রাখা দরকার যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোনো রোগ নিরাময়কারী পথ্য নয় বরং এটা শরীর সুস্থ্য রাখতে এবং শারীরিক সমস্যা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের স্বাস্থ্যোপযোগীতার সম্পর্কে নিম্নের আলোচনা করা হলো –
১। ক্যান্সার প্রতিরোধক –
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এই সংক্রান্ত একটি বৈজ্ঞাণিক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, ফ্রি র্যাডিক্যালসের কারণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হয়। এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রভাবে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে যায় এবং ক্যান্সারের সম্ভবনা অনেকটাই বাধা প্রাপ্ত হয়।
গবেষণা থেকে আরোও জানা যায় যে, অ্যান্টি অক্সিডেন্টে উপস্থিত ভিটামিন সি পেটের ক্যান্সার এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভাবে সহায়তা করে। লাইকোপিন রাসয়নিক যৌগে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে উপকারী বলে মনে করা হয়। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী যে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত থাকলেও তা বিপদজনক। কারণ এরফলেও ক্যান্সারের সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়। তাই ক্যান্সারের মতন গুরুতর অসুখের ক্ষেত্রে অবিলম্বে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ।
২। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী –
হার্টের অসুখ থেকে শরীরকে রক্ষার ক্ষেত্রেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এনসিবিআই (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র থেকে জানা যায় যে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হার্টের সমস্যার কারণ হয়ে থাকে। বিভিন্ন ভিটামিন এবং যৌগ থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৩। স্নায়বিক রোগ প্রতিরোধক –
একটি বৈজ্ঞাণিক গবেষণা অনুসারে জানা যায় যে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিউরণকে ধ্বংস করে বিভিন্ন স্নায়বিক রোগ যেমন অ্যালজাইমারসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি করে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাদ্য অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়।
৪। ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষা করে –
অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে প্রদাহজনিত অসুখ বিশেষত অ্যাস্থমার সমস্যা দেখা যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সাহায্যে সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের প্রভাব হ্রাস করে প্রদাহ নাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এইভাবে বিভিন্ন রোগের প্রভাব থেকে ফুসফুস কে রক্ষা করা যায়।
৫। বাতজ বেদনা নাশক –
বাতজ বেদনার জন্যও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে দায়ী করা হয়। অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে আইসোপ্রোস্টেন্ট এবং প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন লিপিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যার মধ্যে আর্থ্রাইটিস বা বাতজ বেদনা অন্যতম। এইরকম অবস্থায় অক্সিডেটভ স্ট্রেস হ্রাস করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য সমূহ –
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য সমূহ গুলি হলো যথা –
১। ডার্ক চকোলেট – এনসিবিআই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে ডার্ক চকোলেট উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয়। এছাড়াও এতে উপস্থিত থাকে ফেনোলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মধুমেহ রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। শুধু তাই নয় ডার্ক চকোলেট স্থিত ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম সহ একাধিক পৌষ্টিক উপাদান শরীর সুস্থ্য রাখতেও সহায়তা করে। (3)
২। পীকন – পীকন হলো এক ধরণের বাদাম। যাতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও পীকনে রয়েছে অলিক অ্যাসিড, লিনোলিক অ্যাসিড, ফ্যাট, কেমিক্যালস এবং ফাইটোকেমিক্যালস, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানীজ, ও জিঙ্ক। (4)
৩। ব্লুবেরীজ – ব্লুবেরীজে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন প্লেবোনয়েড যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতন কাজ করে। একইসাথে এতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পৌস্টিক উপাদান। এগুলি হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী বলে করা হয়। মস্তিষ্কের কার্যকারীতা উন্নত করে তোলে, হাড়ের গঠন মজবুত করে, এবং সর্বোপরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। (5)
৪। স্ট্রবেরী – স্ট্রবেরী পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয়। যা হার্টের সুস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে এবং হার্ট সম্বদ্ধীয় যাবতীয় অসুখের সম্ভবনা থেকে শরীরকে নিরাপদে রাখে। একইসাথে এটা ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয় যা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কম করে দেয়। স্ট্রবেরী মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ব্রেন এজিংয়ের ক্ষেত্রে উপকারী বলে মনে করা হয়। সব মিলিয়ে স্ট্রবেরী সুস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (6)
৫। আর্টিচোক – অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য সমূহের মধ্যে আর্টিচোক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও যকৃৎ বা লিভার কে সুস্থ্য রাখতে সহায়ক উপাদান এবং লিপিডের হ্রাসক উপাদানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এইসব কারণেই শরীরের সার্বিক সুস্থ্যতার ক্ষেত্রে আর্টিচোকের গুরুত্ব অপরিসীম। (7)
৬। গোজি বেরিজ – শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি পূরণ করার জন্য গোজি বেরীজ সেবন করা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। একইসাথে এতে রয়েছে অ্যান্টি এজিং এবং ক্যান্সার নাশক গুণাবলী। যা অকাল বার্ধ্যক্যের সম্ভবনা খর্ব করে এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা হ্রাস করে। পাশাপাশি এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা শক্তি বৃদ্ধি করে। (8)
৭। রাস্পবেরী – রাস্পবেরী একটি অন্যতম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য। এতে রয়েছে ফেনোলিক এবং প্লেবোনয়েড নামক রাসয়নিক যৌগ যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ন্যায় কাজ করে। তাই খাদ্য হিসেবে রাস্পবেরী গ্রহণ করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্বরূপ উপকার পাওয়া যায়। (9)
৮। কেল – গাঢ় রঙের পাতা বিশিষ্ট এক প্রকার সবজি হলো কেল। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি অন্যতম উৎস হিসেবে কেল পরিচিত। কেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি রোধ করে। এছাড়াও কেল এ রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফাইবার যা মল ত্যাগের ক্ষেত্রে সহায়তা করে। (10)
৯। লাল বাঁধাকপি – শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি পূরণ করার জন্য লাল বাঁধাকপিও সেবন করা যেতে পারে। লাল বাঁধাকপিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ কার্ডিও প্রোটেক্টিভ এবং হেপাটো প্রোটেক্টিভ গুণাবলী যা হার্ট এবং লিভারের সুস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। (11)
১০। বিনস – বিনসেও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে। একই সাথে এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে ও এজিংয়ের গতি হ্রাস করে। এছাড়াও এতে রয়েছে ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ যা পরিপাক তন্ত্রের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয় কারণ পরিপাক তন্ত্র সম্বদ্ধীয় অঙ্গের ক্যান্সারের সম্ভবনা প্রতিরোধ করে এই সবজি।(12)
১১। বীট – অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য সমূহের মধ্যে বীটও একটি অন্যতম পরিচিত উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী ছাড়াও এটা প্রদাহনাশক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয় এবং হার্টের সুস্থ্যতা বজায় রাখার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয় খাদ্য হিসেবে বীট সেবন করলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কম হয় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে। (13)
১২। পালং শাক – পাতা বিশিষ্ট শাক সব্জির মধ্যে পালং শাক এমন একটি উপাদান যা একাধিক পৌষ্টিক উপাদান সমৃদ্ধ হয়। একইসাথে এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও পালং শাল ভিটামিন সি এর একটি অন্যতম উৎস যা শরীরের সুস্থ্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। (14)
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট বা সম্পূরক দ্রব্য –
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সম্পূরক দ্রব্য হিসেবে ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, সেলেনিয়াম এবং ক্যারোটিনয়েড যেমন বিটা-ক্যারোটিন, লাইকোপেন, লুটেইন এবং জ্যাক্সনথিন ইত্যাদির নাম করা যেতে পারে। তবে খাদ্য দ্রব্যের মাধ্যমেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করা ভালো সম্পূরক দ্রব্য গ্রহণের পূর্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া জরুরী।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কম মাত্রায় উপস্থিতির লক্ষণ –
আমরা এই প্রবন্ধে আগেই বলেছি, শরীর বিভিন্ন ভিটামিন এবং যৌগ থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করে। এই কারণে শরীরে সরাসরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ঘাটতির লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায়না।
ভিটামিন সি যেহেতু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি অন্যতম উৎস তাই শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি হলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হ্রাস পেয়েছে এমনটা মনে করা হয়। এমনিতে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতির কোনো লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায় না।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া –
শরীরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপস্থিতি জরুরী। এই নির্দিষ্ট মাত্রার কম বা বেশি হলে শরীরে নানা প্রকারের সমস্যা বা পার্শ্ব প্রতিরক্রিয়া দেখতে পাওয়া যায়। এবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- ধূমপায়ী ব্যক্তিরা শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি পূরণ করার জন্য যদি বিটা ক্যারোটিন সেবন করেন তাহলে ক্যান্সারের সম্ভবনা সৃষ্টি হয়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য অতিরিক্ত ভিটামিন ই গ্রহণ করলে হেমোরেজিক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। একইসাথে এটা প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে।
শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সঠিক মাত্রা বজায় রাখতে হলে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। অন্যথায় শরীরে নানান শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হবে। আশা করা যায় উপরিক্তো প্রবন্ধ পাঠকদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্বদ্ধীয় যাবতীয় তথ্যের যোগান দিতে সক্ষম হয়েছে। সুস্থ্য এবং নিরোগ শরীরের জন্য পরিমিত এবং সুষম আহার গ্রহণ করুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কী কাজ করে?
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কার্যকয়ারীতা সম্পর্কে ওপরের প্রবন্ধে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কি ক্ষতিকর হতে পারে?
না, একটি সুষম পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিকর নয়। যদি সাপ্লিমেন্টের কারণে শরীরে এর পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায়,তাহলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কী ভাইরাস নাশ করতে সক্ষম?
যেহেতু ভাইরাস ঘটিত রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যবহার করা হয় তাই মনে করা হয় ভাইরাস নাশের ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কী ত্বকের জন্য উপকারী?
হ্যাঁ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য ভালো। প্রকৃতপক্ষে ফ্রি র্যাডিক্যালস এর কারণে অকাল বার্ধক্য এবং ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট তাদের রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোনটি?
গ্লুটাথিওন সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বলা যেতে পারে।
কফি তে কি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে আছে?
হ্যাঁ, কফিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে।
মধু তে কি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে আছে?
হ্যাঁ, মধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে
Sources
Articles on StyleCraze are backed by verified information from peer-reviewed and academic research papers, reputed organizations, research institutions, and medical associations to ensure accuracy and relevance. Read our editorial policy to learn more.
- Antioxidants: In Depth
https://www.nccih.nih.gov/health/antioxidants-in-depth - Free Radicals, Antioxidants in Disease and Health
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3614697/ - Cocoa and Chocolate in Human Health and Disease
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4696435/ - A Pecan-Rich Diet Improves Cardiometabolic Risk Factors in Overweight and Obese Adults: A Randomized Controlled Trial
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5872757/ - Molecular Mechanism and Health Role of Functional Ingredients in Blueberry for Chronic Disease in Human Beings
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6164568/ - Potential impact of strawberries on human health: a review of the science
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/15077879/ - Pharmacological Studies of Artichoke Leaf Extract and Their Health Benefits
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/26310198/ - Goji Berries as a Potential Natural Antioxidant Medicine: An Insight into Their Molecular Mechanisms of Action
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6343173/ - Antioxidant and antiproliferative activities of raspberries
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/11982421/ - Healthy food trends – kale
https://medlineplus.gov/ency/patientinstructions/000729.htm - Anthocyanin-rich red cabbage (Brassica oleracea L.) extract attenuates cardiac and hepatic oxidative stress in rats fed an atherogenic diet
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/22228433/ - Healthy food trends – beans and legumes
https://medlineplus.gov/ency/patientinstructions/000726.htm - The Potential Benefits of Red Beetroot Supplementation in Health and Disease
- Enhancement of Antioxidant Quality of Green Leafy Vegetables upon Different Cooking Method
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5642804/