
জিংকো বাইলোবার উপকারিতা, ব্যবহার ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | All About Ginkgo Biloba in Bengali
সারা পৃথিবীতে হাজার-হাজার ধরনের ভেষজ ঔষধি পাওয়া যায়, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। তারমধ্যেই অন্যতম একটি হল জিংকো বাইলোবা। তবে এমনটাও হতে পারে যে, এই ভেষজ ঔষধির সম্পর্কে আপনি প্র থমবার পড়ছেন। কারণ এটি অত্যন্ত দুর্লভ এবং বহু কষ্টে এর খোঁজ পাওয়া যায়। তবে বহু প্রাচীন সময় থেকেই কিন্তু এই গাছ থেকে ভেষজ ঔষধি বানানোর চল রয়েছে। এবং তা আজও সমানভাবে চালু। শুরুতেই জানিয়ে রাখি, জিংকো বাইলোবা হল এক ধরনের ভেষজ ঔষধি যা্র মূল উৎপত্তি চীনে।শত শত বছর ধরে চীনের বিভিন্ন ভেষজ ঔষধিতে এই জিংকো বাইলোবা গাছের নির্যাস ব্যবহৃত হয়ে আসছে।জিংকো বাইলোবা গাছের কিছু অংশে খুব উন্নত ধরনের ভেষজ গুণাগুণ থাকে, যেগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের কাজেও তা বিশেষভাবে উপযোগী।এই ভেষজে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ রোধকারী উপাদান থাকে। সেগুলিও আমাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ও অসুস্থতা নির্মূলে সাহায্য করে থাকে। অনেকক্ষেত্রে এই ভেষজ ঔষধি বিভিন্ন ধরনের রোগের উপসর্গ কমাতেও ভীষণ সাহায্য করে। তার মধ্যে অন্যতম রোগগুলি হল অ্যালজাইমার ও ডিমেনশিয়া। এছাড়াও এই ভেষজ ঔষধি খেলে তা অহেতুক উদ্বেগ কমাতে, প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়তে এবং চোখের স্বাস্থ্য সুষ্ঠু রাখতে সাহায্য করে। এই প্রবন্ধে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব জিংকো বাইলোবার উপকারিতা, ব্যবহার ও এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে। চলুন দেখা যাক-
Table Of Contents
জিংকো বাইলোবা কী?
জিংকো বাইলোবা এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ, যার আকৃতি অনেকটাই বড়। এই গাছ মোটামোটি ৬০-১০০ ফিট অবধি লম্বা হয়ে থাকে। তবে এই গাছ মূলত সোজা, লম্বা এবং বহু শাখা-প্রশাখাযুক্ত হয়। এই গাছের পাতা বেশ বড় হয় এবং তাতে লম্বা ডাঁটা থাকে। জিংকো বাইলোবা গাছের পাতা, ছাল ও বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ থাকে যা বেশ কিছু ধরনের রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
জিংকো বাইলোবা গাছের ঔষধি গুণাগুণ
চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই এই জিংকো বাইলোবা গাছের ঔষধি গুণাগুণ। এতক্ষণে আপনারা জেনে গিয়েছেন ঠিক কী কারণে মানুষ এই গাছের ব্যবহার মূলত করে থাকেন।এই গাছের বহু ঔষধি গুণাগুণ থাকলেও সবচেয়ে বেশি মাত্রায় পাওয়া যায় মাল্টি ভিটামিন এবং মিনারেল। আর এই দুই উপাদানই শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি জোগায়। এছাড়াও এই গাছে অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-প্লেটলেটেরো উপাদান থাকে। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগী যাঁরা, তাঁদের রোগ নিরাময়ে এই ঔষধি দারুণভাবে কাজ করে।
জিংকো বাইলোবার উপকারিতা
আমরা আগেই আলোচনা করেছি যে জিংকো ফাইলোবা দুষ্প্রাপ্য হলেও আমাদের শরীরের জন্য কতটা স্বাস্থ্যকর। তবে এই গাছের শুধু পাতাই নয়, বরং এর শাখা প্রশাখা থেকে শুরু করে গাছের মূলের গুণাগুণ প্রচুর। এই গাছের পাতা থেকে যে নির্যাস পাওয়া যায় তা চোখ এবং হার্টের বিভিন্ন রোগ সারাতে উপকারী। অ্যাজমা, মাথা ঘোরা, একটুতেই ক্লান্তি এবং টিনিটাস অর্থাৎ কানে ভোঁ-ভোঁ শব্দ হওয়ার মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য শত শত বছর ধরে এই জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবার চলুন জানা যাক, এই জিংকো ফাইলোবার ঠিক কী কী গুণাগুণ রয়েছে।
উপকারিতা ১ঃ চোখের স্বাস্থ্য বজায়
বেশকিছু পুরনো গবেষণায় বলা হয়েছে যে, জিংকো বাইলোবা চোখের ভেতর রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহয্য করতে পারে। ফলে যাঁদের গ্লুকোমার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের চিকিৎসার জন্য এটি একটি বিশেষ উপায়। তবে এর সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত কোনও তথ্য বা বৈধতা এখনও পাওয়া যায়নি। (১) লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এবং ট্রপিকাল মেডিসিনের তরফে পেশ করা একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছিল যে, জিংকো থেকে পাওয়া নির্যাস চোখের দৃষ্টি সুষ্ঠু রাখতে ভীষণ কার্যকরী। তবে আগামীতে এনিয়ে আরও কিছু সমীক্ষা চালানোর পরই তা নিয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া যাবে বলে বিজ্ঞানীদের মত। (২) এর পাশাপাশি নরমাল-টেনশন গ্লুকোমার চিকিৎসাতেও জিংকো বাইলোবার নির্যাস কাজে লাগে। তবে দৃষ্টি সংক্রান্ত যেকোনও রোগে আদৌ জিংকো বাইলোবা কতটা কার্যকরী, তা জানতে এখনও বহু গবেষণার প্রয়োজন।
আমরা কম-বেশি সকলেই গ্লুকোমা সম্পর্কে জানি। তবু যাঁরা জানেন না, তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখি, গ্লুকোমা হল এমন একটি রোগ, যার কারণে আমাদের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর এর হাত থেকে বাঁচতে জিংকো বাইলোবা অনেকাংশেই সাহায্য করে থাকে। এই বিষয়ে এনসিবিআই (National Center for Biotechnology Information) -এর ওয়েবসাইটে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। এই গাছে ফ্লেবোনাইডস, ভিটামিন-ই এবং ভিটামিন-সি-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে। চোখের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করা ফ্রি রেডিকেলস ধ্বংস করতে সাহায্য করে এই ভেষজ উদ্ভিদ। এছাড়াও এটি গ্লুকোমার ঝুঁকি কমাতে এবং তার স্ত্র কম করতে সাহায্য করে। তাই বলা যেতে পারে যে, জিংকো বাইলোবা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে উপকারী।
উপকারিতা ২ঃ রক্ত চলাচল সুষ্ঠুু করার জন্য
জিংকো বাইলোবার পাতা থেকে যে নির্যাস পাওয়া যায় তাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পাওয়া যায় কুয়েরসেটিন, টেরেপিন ল্যাক্টোন, গ্লুকোজ, কার্বনিক অ্যাসিড, ডি-গ্লুকেরিক এবং জিংকগোলিক অ্যাসিডের গুণ। এই প্রত্যেকটি উপাদান আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে রক্ত চলাচলে উন্নতি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি প্লেটলেটকেও এক জায়গায় জড়ো হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তাই বলা যেতেই পারে যে, জিংকো বাইলোবা রক্ত সঞ্চালনে উন্নতি ঘটাতে বিশেষভাবে উপকারী।
উপকারিতা ৩ঃ উদ্বেগ, ডিপ্রেশন কমাতে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে
জিংকো বাইলোবা গাছ থেকে যে নির্যাস পাওয়া যায় তা অতিরিক্ত চাপ এবং উদ্বেগের হাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এই নির্যাসই ঐতিহ্যবাহী চৈনিক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার করা হত। মূলত নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডারের চিকিৎসাতেই এই জিংকো বাইলোবার নির্যাস ব্যবহার করা হত।(৩) প্রাণী সংক্রান্ত একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে যে, জিংকো বাইলোবায় যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তা অতিরিক্ত উদ্বগের লক্ষণ ও অন্যান্য আরও কিছু প্রতিবন্ধকতা রোধে সাহায্য করে।(৪)
অপর একটি সমীক্ষায় ১০৭ জনের ওপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। সেখানে ওই ১০৭ জনকে উচ্চমাত্রার জিংকো বাইলোবার ওষুধ হিসেবে দেওয়া হয়। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গিয়েছে যে, তাঁদের প্রত্যেকেরই বহু অংশে অহেতুক উদ্বেগ করার বিষয়টি অনেকতাই কমে গিয়েছে। তবুও এক্ষেত্রে জিংকো বাইলোবার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আরও অনেক বেশি গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। আরও জানিয়ে রাখি, জিংকো বাইলোবা থেকে নিঃসৃত নির্যাসে প্রদাহ রোধকারী উপাদান থাকে, যা ডিপ্রেশন বা অবসাদ কমাতে সাহায্য করে। তবু এবিষয়ে আরও যথাযথ তথ্য পেতে এখনও বেশ কিছু গবেষণার প্রয়োজন। এছাড়াও জিংকো বাইলোবা স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটিয়ে মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এবিষয়ে আরও তথ্য পেতে বিজ্ঞানীরা এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপকারিতা ৪ঃ হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
জিংকো বাইলোবা রক্তনালীর সম্প্রসারণ ঘটিয়ে রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। রক্ত চলাচল নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে এই ভেষজ উদ্ভিদকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত চলাচল বারাতেও এটি ভীষণ উপকারী। জিংকো বাইলোবার নির্যাসকে সংক্ষেপে GBE বলা হয়ে থাকে। এই নির্যাস একটি অত্যন্ত আশাদায়ী ভেষজ উপাদান যা কার্ডিওভাসকুলার এবং ইস্কেমিক রোগের নিরাময়ে কাজে লাগে। ইস্কেমিক হল এক প্রকার রোগ যার ফলে দেহের সব অংশে সঠিকভাবে রক্ত পৌঁছাতে পারে না। এটি ভাসকুলারের (রক্তনালীর) সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। হেবেই মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সেকেন্ড হসপিটালের তরফে এনিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে বলা হয়, যেসব রোগী করোনারি আর্টারির রোগে ভুগছেন তাঁদের করোনারি আর্টারির চলাচলে জিংকো বাইলোবার নির্যাস উন্নতি ঘটায়। (৫) বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রেও এটি সমানভাবে কাজ করে। এই নির্যাস মানুষের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভীষণ রক্ষাকারী একটি ভূমিকা পালন করে। এছাড়া স্নায়ুতন্ত্র ও কার্ডিও-সেরেব্রোভাসকুলারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও এই নির্যাস দারুণ উপযোগী।(৬) পাশাপাশি ডায়াবেটিক মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরি অর্থাৎ হার্টের ঝিল্লি পর্দা সংক্রান্ত রোগ নির্মূল করতেও এটি ভীষণ উপকারী। এতক্ষণে আপনারা জেনে গিয়েছেন যে, হার্টের বিভিন্ন রোগের সমাধানে জিংকো বাইলোবা কতটা উপকারী। এর পিছনে মূল কারণ হল যে, এই গাছের নির্যাসে থাকে অ্যান্টিটাইপারট্রপিক গুণ যা হার্টকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এখানেই আরও বলে দিই, টাইপারট্রপিকের কারণে হার্টের মাংসপেশী প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই মোটা হয়ে যায়। এর ফলে হার্টের রক্ত সঞ্চালনকে তা কিছুটা প্রভাবিত করে। এভাবেই জিংকো বাইলোবার নির্যাস হার্টকে সুস্থ রেখে শরীরে রক্ত সঞ্চালন করার কাজ করে থাকে।
উপকারিতা ৫ঃ ব্যথা কমাতে সাহায্য
বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা কমাতে জিংকো বাইলোবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া অনেকসময় দেখা যায় পায়ের কিছু স্নায়ু সংকুচিত হয়ে যাওয়ার ফলে পায়ে তীব্র ব্যথা শুরু হয়। যাকে আমরা সাধারণত চলতি ভাষায় রগে টান ধরা বলে থাকি। এই ব্যথা থেকে মুক্তি দিতেও জিংকো বাইলোবা সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হলে ন্যুরোপ্যাথিকের মতো পুরনো ব্যথা চাগাড় দিয়ে ওঠার একটা সম্ভাবনা তৈরী হয়। তবে সেই ব্যথা উপশম করতেও অনেকে জিংকো বাইলোবা থেকে নিঃসৃত নির্যাস ব্যবহার করে থাকেন। তাই বলা যেতেই পারে যে, ব্যথার হাত থেকে মুক্তি দিতে জিংকো বাইলোবা অনেকাংশেই সম্ভব।
উপকারিতা ৬ঃ মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে
জিংকো বাইলোবার বহু গুণাগুণ নিয়ে আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম। এবার চলুন দেখে নিই, এই ভেষজ উদ্ভিদ কীভাবে আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই জিংকো বাইলোবার নির্যাসে রয়েছে এমন কিছু গুণ যা মানুষের অহেতুক উদ্বেগ, চাপ কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, বরং অ্যালজাইমার ও বয়স সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগের লক্ষণ কমাতেও এটি অত্যন্ত উপযোগী। বয়স হলে অনেকের মধ্যে মানসিকভাবে একটা নেতিবাচক প্রবণতা চলে আসে। দেখা যায়, তাঁরা অনেক কিছুই মনে করতে পারছেন না, কিছু মুহূর্ত আগে ঘটা জিনিসও ভুলে যাচ্ছেন, নতুন জিনিস শিখতে আপত্তি করছেন, কোনও কিছুতে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারছেন না কিংবা কোনও সিদ্ধান্তও সঠিকভাবে নিতে পারছেন না। এই সমস্ত লক্ষণই কিন্তু তাঁদের জীবনের ওপর একটা বিরাট প্রভাব ফেলে। এই সমস্ত সমস্যার সমাধানেও কিন্তু বহুদিন ধরেই জিংকো বাইলোবা ভীষণভাবে সাহায্য করে। লিবার্টি ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের তরফে এই নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায় জিংকো বাইলোবাকে মস্তিষ্ক ঘটিত কোনও সমস্যায় ওষুধের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা হলে তা দুর্দান্ত কাজ করে। (৭) মিউনিখ ইউনিভার্সিটির করা অপর একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, এই ভেষজ উদ্ভিদটি মানুষের মানসিক কার্যকলাপকে উন্নত করে ও মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে শোনা যায়, জিংকো বাইলোবা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল উন্নত করতেও বিরাট ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এনসিবিআই-এর ওয়েবসাইটের একটি গবেষণা পত্র থেকে জানা যায় যে, জিংকো সুস্থ মানুষের মানসিক ক্ষমতাতেও উন্নতি করে। তবে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার জন্য আরও কিছু গবেষণার প্রয়োজন। পাশাপাশি আরেকটি গবেষণা পত্রের মোতাবেক, জিংকো বাইলোবার নির্যাসে থাকে পলিফেনলস। আর এই পলিফেনলসে পাওয়া যায় নিউরোট্রপিক ফ্যাক্টর। এই নিউরোট্রপিক ফ্যাক্টর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। তাই আমরা বলতেই পারি, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য জিংকো বাইলোবা খুবই লাভজনক।
উপকারিতা ৭ঃ এনার্জি বা কর্মশক্তি বাড়াতে
আমরা অনেকসময় দেখি আমাদের আশেপাশের কেউ কিংবা অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই আচমকা কর্মশক্তি বা এনার্জি হারিয়ে ফেলছি। ঠিক এই ক্ষেত্রে ভীষণভাবে কাজে আসে জিংকো বাইলোবা।এনিয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাসে ফ্লেবোনাইডস এবং টেরপেনেস থাকে। এই দুটি উপাদান এন্ডোথিলিয়াম-ড্রাইভড রিল্যাক্সিং ফ্যাক্টর নিঃসৃতিকে উত্তেজিত করতে সক্ষম। এর ফলে আমাদের দেহের মাংসপেশীতে শক্তি সঞ্চার হয় ও তাতে আমাদের কর্মশক্তি বৃদ্ধি পায়।
উপকারিতা ৮ঃ শ্বাস-প্রশ্বাস সুস্থ স্বাভাবিক রাখে
আমরা এতক্ষণে জেনে গিয়েছি যে, জিংকো বাইলোবায় থাকে প্রদাহ রোধকারী বেশ কিছু উপাদান। এই উপাদানগুলি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ যেমন- অ্যাজমা ও ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি)-এর লক্ষণগুলি নির্মূল করতে সাহায্য করে।জিলিন ইউনিভার্সিটির তরফে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, জিংকো বাইলোবায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো প্রদাহ কমাতে উপযোগী। অপর একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, শুধুমাত্র প্রথাগত চিকিৎসার বদলে অ্যাজমা রোগীদের জিংকো বাইলোবা দিয়ে চিকিৎসা করা হলে তাঁদের শরীরে দ্রুত উন্নতি হয়। (৮) অপর আরেকটি সমীক্ষা করা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০০ জন্য সিওপিডি রোগীকে নিয়ে। সেখানে ওই রোগীদের একটি চৈনিক ভেষজ মিশ্রণ দেওয়া হয়। তাতে ছিল জিংকো বাইলোবাও। শেষে দেখা যায়, তাঁদের প্রত্যেকেরই ব্রঙ্কাইটিস এবং কাশির সমস্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। এছাড়া এনসিবিআই-এ প্রকাশিত একটি মেডিকেল রিসার্চে বলা হয়েছে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পর্কিত বেশ কয়েক ধরনের রোগের মোকাবিলা করা যায়। এছাড়াও এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাগুণের জন্য চিন ও জাপানে কাশি, কফ ও অ্যাজমার নিরাময়ের জন্য জিংকো বাইলোবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা কম করে লাংসের বিভিন্ন রোগ সারাতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
উপকারিতা ৯ঃ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
এর আগেও আমরা আলোচনা করেছি যে জিংকো বাইলোবার মধ্যে প্রদাহ রোধকারী বেশ কিছু উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন কারণে তৈরী হওয়া এই প্রদাহ কমাতে জিংকো অনেকটাই সক্ষম। ন্যাশনাল তাইওয়ান ইউনিভার্সিটির তরফে আয়োজিত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, পশু এবং মানুষ- এই দুই প্রজাতির কোষেই প্রদাহের মাত্রা কমাতে জিংকো বাইলোবার নির্যাস খুবই উপযোগী।(৯) এছাড়া আরও কিছু ধরনের প্রদাহ কমাতেও এই ভেষজ নির্যাস দারুণ সাহায্য করে। এই বিষয়ে নীচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।
- আর্থারাইটিস– ইঁদুরের ওপর চালানো একটি সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে জিংকো বাইলোবার নির্যাস আর্থারাইটিস কমাতে সাহায্য করে।
- স্ট্রোক– অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়ে তাঁরা অ্যাকিউট ইস্কেমিক স্ট্রোকের শিকার হচ্ছেন। তাই এমন রোগীদের অনেককেই জিংকো বাইলোবার নির্যাস ওষুধ হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। বলা হয় যে, এই ভেষজে নিউরোপ্রোটেক্টিভ উপাদান থাকে যা এই রোগের রোগীদের মস্তিষ্কের সঞ্চালনে সাহায্য করে।
- পেট পরিষ্কার না হওয়া– এই রোগটি চিকিৎসা জগতে ইরিটেবল বোওয়েল ডিজিজ বা আইবিডি নামে পরিচিত। কায়রো ইউনিভার্সিটির একটি সমীকশায় দেখা গিয়েছে যে, কারকুমিন এবং জিংকো বাইলোবা এই আইবিডি রোগের নিরাময় ও এই রোগ রুখতে অনেকাংশে সাহায্য করে। তবে এই সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানে জিংকো বাইলোবার নির্যাসের ঠিক কতটা অবদান, তা জানতে এখনও আরও অনেক সমীক্ষা এবং গবেষণা করতে হবে।
আর যেহেতু এই জিংকো বাইলোবার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তাই এই ভেষজ উদ্ভিদ আমাদের অহেতুক চিন্তা ও চাপ থেকে মুক্ত রাখতেও সাহায্য করে। অক্সিডেন্টিভ স্ট্রেস আমাদের মস্তিষ্ক ও হার্টের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আবার পাশাপাশি এই অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণের জন্য অনেকেই তাঁদের কোলাইটিসের সমস্যার হাত থেকেও নিস্তার পান। সাধারণ ইনফ্লেমেশন বা ফুলে যাওয়ার কারণেই এই সমস্যা আমাদের শরীরে দেখা দেয়।
উপকারিতা ১০ঃ মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
জিংকো বাইলোবা ইনফ্লেমেশন কমিয়ে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে। এটি নির্দিষ্ট কিছু ধরনের মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতেও যথেষ্ট উপযোগী। যেসব ভেষজ উদ্ভিদ প্রদাহ কমাতে উপযোগী, সেগুলি ঐতিহ্যবাহী চৈনিক আয়ুর্বেদে মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। (১০) তবে এই তথ্যের সাপেক্ষে আরও বেশ কিছু গবেষণা এখনও দরকার। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, জিংকো বাইলোবা গাছের পাতা থেকে যে নির্যাস পাওয়া যায় তাতে থাকে জিংকগোলাইড-বি। এটিও ভেষজ চিকিৎসার একটি অন্যতম উপাদান। কম বয়সীদের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা বা মাথা ব্যথা রুখতে এই উপাদান বিশেষভাবে সাহায্য করে। অপর একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, জিংকগোলাইড-বি আভাযুক্ত মাইগ্রেন (অনেক সময় দেখা যায় মাইগ্রেনের কারণে দৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে)-এর তীব্রতা ও সময়কালকে কমাতে সাহায্য করে।
উপকারিতা ১১ঃ পিএমএস-এর লক্ষণ কম করতে সাহায্য করে
জিংকো বাইলোবা পিএমএস বা প্রি-মেন্সট্রুয়ালের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জিংকো বাইলোবার নির্যাস খেলে পিএমএসের লক্ষণ ২৩% কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।(১১) তবে এই ক্ষেত্রে এই ভেষজ ঠিক কতটা সুরক্ষিত তার জন্য এখনও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে পিএমএস এর লক্ষণ কমাতে জিংকগোলাইড-বি এর অবদানও অনেকাংশে রয়েছে। পিরিয়ডস শুরু হওয়ার আগে মহিলাদের শরীরে যে লক্ষণগুলি দেখা দেয় তাকেই প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম বলে। এই সময় শরীরের কিছু কিছু অংশ ফুলে যাওয়া, মাথা ব্যথা কিংবা মুড স্যুইংয়ের মতো বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস এই লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করে।
উপকারিতা ১২ঃ এডিএইচডি রোধে সাহায্য করে
এডিএইচডি হল এক প্রকার মানসিক অস্থিরতা যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার। এই সমস্যার সমাধানে অনেক সময় এই জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই এডিএইচডি-তে আক্রান্ত রোগীরা কোনও কাজেই সঠিকভাবে মনোনিবেশ করতে পারেন না। এছাড়া নিজেদের ব্যবহারের ওপরও তাঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। একতি গবেষণা অনুসারে, জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করে মানসিক রোগের সমস্যাও নিরাময় করা যায়। তবে এক্ষেত্রে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকলেও জিংকো বাইলোবা এডিএইচডি-র চিকিৎসায় খুবই লাভদায়ক।
উপকারিতা ১৩ঃ ওজন কমাতে সাহায্য করে
জিংকো বাইলোবার নির্যাস বা জিবিই ওবেসিটি কমাতে সাহায্য করে। একটি ইঁদুরের ওপর করা পরীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস ওবেসিটি কমাতে এবং রোধ করতে সাহয্য করে। এমনকি ওবেসিটির কারণে ইনসুলিন নিতে গিয়ে যা ক্ষতি হয়, তাতেও সাহায্য করে এই জিংকো বাইলোবা। এছাড়াও জিবিই ইনসুলিন প্রতিহত করার ক্ষমতাকে উন্নত করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মেনোপজের পর যাঁদের ওজন বেড়ে যায়, সেই ওজন কমাতেও জিংকো বাইলোবা গাছের নির্যাস উপযোগী।(১২) একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, এই গাছের পাতা রক্তের লিপিড প্যারামিটারকে উন্নত করতে পারে। এটি ডিসলিপিডেমিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ডিসলিপিডেমিয়া হল এমন একতি রোগ যার ফলে রক্তে লিপিডের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। নির্দিষ্ট ডায়েটে রাখা মোটা কিছু ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে যে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে দারুণ কাজে লাগে। এছাড়া ইঁদুরের সাদা মেদ কলাতেও এটি অ্যান্টি-ওবেসোজেনিক প্রভাব বিস্তার করে। এনসিবিআই-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণাতেও এর অ্যান্টি-ওবেসোজেনিক প্রভাবের সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তবে মানুষের শরীরে এর অ্যান্টি-ওবেসোজেনিক প্রভাব বিস্তার সম্পর্কে জানতে এখনও অনেক দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে।
উপকারিতা ১৪ঃ যৌন স্বাস্থ্য সুষ্ঠু রাখতে
জিংকো বাইলোবার নির্যাস বা জিবিই রক্ত সঞ্চালনকে মসৃণ করে এবং নাইট্রিক অক্সাইড গতিবিধিকে প্রভাবিত করে। এর পাশাপাশি মাসল টিস্যুকে মসৃণ ও শিথিল করে। মহিলাদের শরীরে যৌন উত্তেজনা জাগিয়ে তোলার জন্য এই পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর জিবিই মহিলাদের শরীরে যৌন স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ও জাগিয়ে তুলতে ভীষণ উপযোগী। আরেকটি গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে যে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস নাইট্রিক অক্সাইডের রক্তের মাত্রাকে উন্নত করে তোলে। এটিই মহিলাদের যৌন কার্যকলাপেও উন্নতি ঘটায়। এর থেকে বোঝা যায় যে, মহিলাদের যৌন চাহিদা ও স্বাস্থ্য সুষ্ঠু রাখতে জিংকো বাইলোবা বেশ ভালোই কাজ করে। তবে এই ক্ষেত্রে জিংকোর গতিবিধি বুঝতে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন।
উপকারিতা ১৫ঃ পাইলসের নিরাময়ে
পাইলস বা অর্শরোগের নিরাময়েও জিংকো বাইলোবা নিজের গুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। একটি মেডিকেল রিসার্চ অনুযায়ী জিংকো বাইলোবার নির্যাস অত্যন্ত বেদনাদায়ক এই রোগের হাত থেকে রোগীদের নিস্তার দিতে সাহায্য করে। মলদ্বার ও মলাশয়ে জিংকো বাইলোবারের নির্যাস লাগালে ফুলে যাওয়া, রক্তস্রাব ও সংক্রামিত অংশে ব্যথার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
উপকারিতা ১৬ঃ ফাইব্রোমায়লজিয়ার হাত থেকে মুক্তি পেতে
মাংসপেশিতে ব্যথা ও ক্লান্তিকে চিকিৎসার পরিভাষায় ফাইব্রোমায়লজিয়া বলে। এই সমস্যা হলে যদি আপনি মাংসপেশীতে জিংকো বাইলোবার নির্যাস লাগান, তাহলে সেখানকার ব্যথা ও ক্লান্তিবোধ দুই-ই দূর হবে। ফলে ফাইব্রোমায়লজিয়ার সমস্যারও সমাধান অনেকাংশে হয়। তাই বলা যেতে পারে যে, জিংকো বাইলোবার নির্যাস ফাইব্রোমায়লজিয়ার হাত থেকে মুক্তি পেতে অনেকটাই সাহায্য করে।
উপকারিতা ১৭ঃ ত্বকের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখতে
বলা হয় যে, জিংকো বাইলোবার মধ্যে অ্যান্টি-এজিং উপাদানও থাকে, যা সহজে আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলার হাত থেকে রক্ষা করে। এই জিংকো বাইলোবার পাতা থেকে নিঃসৃত নির্যাসে তাহকে কুয়েরেসেটিন এবং ক্যাম্পিফেরল। ক্যাম্পিফেরল হল প্রাকৃতিক ভেষজ ফ্ল্যাবোনয়েডস যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। কুয়েরেসেটিন এবং ক্যাম্পিফেরল- এই দুটি উপাদান আপনার ত্বককে রেডিক্যাল মুক্ত রাখে। এই উপাদানগুলি ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলার লক্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বকের চামড়া যাতে চট করে ঝুলে না যায় এবং ত্বকের বাঁধন শক্ত রাখতে জিংকো বাইলোবা সাহায্য করে।গ্রিন টি-এর সঙ্গে এই নির্যাস মিশিয়ে মাখলে এর সিনার্জিস্টিক প্রভাব ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও জিংকো বাইলোবাকে আপনি ফেসপ্যাক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। জিংকো বাইলোবায় থাকে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের সমস্ত গুণাগুণ। সূর্যের যে হানিকারক রশ্মি আপনার ত্বকের ক্ষতি করে, তার হাত থেকে আপনার ত্বককে বাঁচাতে এই গাছের নির্যাস সাহায্য করে। এই কারণেই বাজার চলতি বেশ কিছু সানস্ক্রিনে এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা ১৮ঃ চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে
পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, চুল পড়া কমাতে জিংকো বাইলোবা ভীষণ ভাবে উপকারী। এমনকি এর নির্যাস চুল গজাতেও সাহায্য করে। একটি ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এই সমীক্ষার ফলাফল জানা যায়। আরও জানিয়ে রাখি, জিংকো বাইলোবার পাতা থেকে পাওয়া নির্যাস চুলের গোড়ায় কোষের বিস্তার ঘটায়। এবং অপোপ্টোসিস অর্থাৎ মৃত কোষ সরিয়ে দিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এই জন্য অনেক চিকিৎসক এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস্কে হেয়ার টনিক হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শও দেন। এর ফলে নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াও অনেক দ্রুত গতিতে হয়র
এতক্ষণ আমরা জানলাম জিংকো বাইলোবার বিভিন্ন গুণাগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। এবার আমরা জেনে নেব কীভাবে এই জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করা যেতে পারে।
জিংকো বাইলোবার ব্যবহার
বিভিন্ন রূপে জিংকো বাইলোবা পাওয়া যায়। তবে সঠিক কোন ভাবে ব্যবহার করলে আপনি এর সম্পূর্ণ ফলাফল পাবেন , তা আমরা নীচে আলোচনা করলাম।
- পাতা হিসেবে জিংকো বাইলোবা কিনতে পাওয়া যায়। যা আপনারা কিনে চা হিসেবে পান করতে পারেন।
- ক্যাপসুল হিসেবেও এই জিংকো বাইলোবা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ীই এটি খাওয়া উচিত।
- ওষুধের গুলি হিসেবেও জিংকো বাইলোবা কিনতে পাওয়া যায়। ডাক্তারের সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী তবেই এই ওষুধ খাওয়া উচিত।
- জিংকো বাইলোবার পাতাকে পিষে পেস্ট বানিয়ে তা ত্বকে লাগানো যেতে পারে।
- এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস্কে তেলের মধ্যে মিশিয়ে মাথার চুলেও লাগানো যেতে পারে।
এবার চলুন জেনে নিই ঠিক কতটা পরিমাণে এই নির্যাস লাগানো বা ব্যবহার করা উচিৎ।
জিংকো বাইলোবা ব্যবহারের সঠিক পরিমাণ ও রূপ
- আমরা এর আগেই জেনে গিয়েছি যে, জিংকো বাইলোবা বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন রূপে বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে যেমন রয়েছে তরল জিংকো বাইলোবা, তেমনই পাওয়া যায় জিংকো বাইলোবার ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, শুকনো পাতা যা চা হিসেবে খাওয়া যায়। তবে সারাদিন ধরে যদি জিংকো বাইলোবা বেশ কয়েকবার খাওয়া যায় তবেই এর সবথেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে। প্রতিদিন ১২০-২৪০ মিলিগ্রাম অবধি এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- তবে মনে রাখবেন কখনওই এই গাছের কোনও অংশ অপরিশোধিত অবস্থায় খাওয়া উচিৎ নয়। আর অপরিশোধিত অবস্থায় খেলে তা আপনার শরীরে কিন্তু বিষক্রিয়া অবধি ঘটাতে পারে।
- জিংকো বাইলোবার ব্যবহার করার ৪-৬ সপ্তাহ পর আপনি এর ফলাফল দেখতে পাবেন।
- যাঁদের ডিমেনশিয়া রয়েছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন তিনবার করে ৪০ মিলিগ্রাম ডোজে জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে তাঁরা দ্রুত ভালো ফল পাবেন।
- সুস্থ মানুষদের মধ্যে যাঁদের মস্তিষ্ক ও মানসিক কিছু সমস্যা থাকে, তাঁরা যদি প্রতিদিন ১২০-৬০০ মিলিগ্রাম অবধি এই ভেষজ উদবিদের নির্যাস ব্যবহার করেন, তাহলে তাঁদের অবস্থার দ্রুত উন্নতি হয়।
তবে এই মূল্যায়নগুলির প্রত্যেকটি প্রচলিত আর সেখান থেকেই এই তথ্যগুলি জানা গিয়েছে। তাই ব্যবহার করার আগে এবং জিংকো বাইলোবা সম্পর্কে নিজের জন্য আরও কিছু জানার হলে অবশ্যি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তাঁর নির্দেশ মতোই এটি ব্যবহার করা উচিৎ।
তবে জিংকো বাইলোবা সাধারণত খুব একটা ক্ষতিকারক নয়। তবে আর পাঁচটা জিনিসের মতো এরও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ব্যবহারের আগে আপনার সেগুলি সম্পর্কে একবার জেনে নেওয়া উচিৎ। নীচে আমরা তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম।
জিংকো বাইলোবা ব্যবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এতক্ষণ আমরা জানলাম জিংকো বাইলোবার উপকারিতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে। এবার আমরা দেখে নেব এর কী কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে এবং কার কার জন্য এই ভেষজ উদ্ভিদটি ক্ষতিকারক। চলুন দেখে নিই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি-
- প্রয়োজনের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে জিংকো বাইলোবা খেলে বা ব্যবহার করলে নানা ভাবে তা হিতে বিপরীত হয়। যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে জিংকো বাইলোবা খেলে অ্যালার্জি, মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা, ডায়ারিয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, বমি বমি ভাব ও আপনার কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে বিষক্রিয়াও হতে পারে।
- আবার কিছু ক্ষেত্রে এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস বেশি পরিমাণে খেলে তা আপনার শরীরে বহু ক্ষতি করতে পারে। অ্যাকিলফেনলস থাকা গাছে যাঁদের অ্যালার্জি আছে বা যাঁরা সন্তানসম্ভবা কিংবা যাঁরা শিশুদের এখনও স্তন্যপান করান তাঁদের এটি ব্যবহার করা উচিৎ না। এছাড়া যাঁরা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত তাঁদেরও এটি এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ। যাঁরা নিয়মিত কিছু ওষুধ খান, তাঁদের উচিৎ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করা।
- কারো কারো ক্ষেত্রে এই ভেষজ উদ্ভিদ বেশী পরিমাণে ব্যবহার করলে তা স্তন এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া জিংকো বাইলোবা কোনও ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেই সাহায্য করে না। তবে প্রচলিত কিছু ধারণা অনুযায়ী, জিংকো বাইলোবা কিছু কিছু ওষুধের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া ঘটায়। জমাট বাঁধা রক্ত পাতলা করতে সাহায্য করে যে ওষুধগুলি যেমন অ্যাসপিরিন, ওয়ারফারিন এবং অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট কিছু ওষুধের সঙ্গে এটি মিথষ্ক্রিয়া ঘটায়।
- যদি কেউ রক্তস্রাবের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে এই জিংকো বাইলোবা খেলে তাঁর শরীর খারাপ হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
- অধিক পরিমাণে জিংকো বাইলোবা খেলে তা লিভার এবং থাইরয়েডে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
ঝুঁকি
এর পাশাপাশি জিংকো বাইলোবা ব্যবহারের অন্যান্য ঝুঁকিও রয়েছে। সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল।
- সাধারণ সুস্থ মানুষদের জন্য জিংকো বাইলোবা ততটাও ক্ষতিকর নয়। পরিমাণ মতো ছ’মাস পর্যন্ত এটি খেলে তাঁদের শরীরে তেমন কোনও সমস্যা দেখা দেয় না।
- দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জিংকো সাপ্লিমেন্ট কিংবা কোনও ওষুধে এই ভেষজ উপাদান থাকলে সেটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কিংবা নিয়মের আওতায় রাখে না।
- প্রচলিত রয়েছে, জিংকো বাইলোবার সুগার লেভেল কমিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তাই যাঁরা ডায়াবেটিক রোগী তাঁদের খুব সাবধানে এটি ব্যবহার করা উচিৎ।
- অপরিশোধিত, কাঁচা কিংবা শুধু সেঁকে নিয়ে এই জিংকো বাইলোবা খেলে তা শরীরে বিষক্রিইয়া অবধি ঘটাতে পারে। তবে এই ক্ষতির ব্যাপারে গবেষণা খুবই কম। এবিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতে আরও অনেক সমীক্ষার প্রয়োজন।
উপসংহার
এই প্রবন্ধের মধ্যে দিয়ে আমরা আপনাদের সামনে জিংকো বাইলোবার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানালাম। এই ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার, উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও আপনাদের বিশদে তথ্য দিয়েছি। তাই কেউ যদি এই জিংকো বাইলোবা খেতে বা ব্যবহার করতে চান, তাহলে প্রথমেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই প্রতিবেদনটি মন দিয়ে পড়ুন। জিংকো বাইলোবার উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সঠিকভাবে জানার পরই আপনাদের এটি ব্যবহার করা উচিত। আর কেউ যদি আগে থেকেই অসুস্থ থাকেন কিংবা কোনও অসুখের জন্য নিয়মিত ওষুধ খান তাহলে তাঁর উচিত এটি ব্যবহার করা শুরুর আগে অবশ্যই একবার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। এছাড়াও আরও অন্যান্য কিছু ভেষজ উদ্ভিদ সম্পর্কে জানার হলে আমাদের ওয়েবসাইট্টি একবার ঘুরে আসবেন। সেখানে এই বিষয়ে বিশদে অনেক তথ্য পাবেন।
এবার আমরা জেনে নেব জিংকো বাইলোবা সম্পর্কিত আরও কিছু তথ্য, যা নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রায়শই প্রশ্ন করে থাকেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নঃ
রাতে জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করা কি উচিৎ?
জিংকো বাইলোবা আমাদের মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে তোলে এবং সারা রাত জাগিয়ে রাখে। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে এটি খাওয়া বা ব্যবহার করা উচিৎ না।
প্রতিদিন কি জিংকো বাইলোবা খাওয়া ভালো?
একজন সাধারণ সুস্থ মানুষ প্রতিদিন জিংকো বাইলোবা খেলে তা একেবারেই সুরক্ষিত। কিন্তু যদি কোনও গুরুতর অসুস্থ মানুষ এটি খেতে চান, তাহলে আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
জিংকো বাইলোবা কি লিভারের ক্ষতি করে?
না জিংকো বাইলোবা লিভারের ক্ষতি করে না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এটি লিভারে ক্যান্সার ঘটানোর কাজ করে থাকে।
যৌন সংসর্গের ক্ষেত্রে কি জিংকো বাইলোবা সাহায্য করে?
হ্যাঁ, যৌন সংসর্গের ক্ষেত্রে জিংকো বাইলোবা সাহায্য করে। প্রচলিত রয়েছে যে, এই ভেষজ উদ্ভিদ পুরুষাঙ্গে রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কি জিংকো বাইলোবা সাহায্য করে?
হ্যাঁ, জিংকো বাইলোবা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।এই ভেষজ উদ্ভিদের পাতা থেকে নিঃসৃত নির্যাস প্রায়শই স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
জিংকো বাইলোবা কি রক্তচাপ বাড়ায়?
না, জিংকো বাইলোবা রক্তচাপ বারাতে সাহায্য করে এমন কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। এমনকি এটি যে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এমন কোনও বৈধতাও এখনও পর্যন্ত মেলেনি।f
জিংকো বাইলোবা কি ঠাণ্ডা নাকি গরম?
মূলত গরম কাল কিংবা উষ্ণ পরিবেশেই এই গাছ তাঁর বীজ উৎপন্ন করে থাকে। তবে এর প্রকৃতি ঠিক কেমন, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য সঠিকভাবে পাওয়া যায়নি।
অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা কি জিংকো চা পান করতে পারেন?
এটি সম্পূর্ণভাবে গর্ভবতী ওই মহিলার স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করছে। তবু এই চা খাওয়ার আগে গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে একবার পয়ামর্শ করে নেওয়া উচিৎ।
জিংকো বাইলোবা কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
যেকোনও বিশ্বস্ত দোকান কিংবা ওয়েবসাইট থেকেই সব সময় এই জিংকো বাইলোবা কেনা উচিৎ।
জিংকো বাইলোবার কারণে কি স্ট্রোক হয়?
না, জিংকো বাইলোবার কারণে স্ট্রোক জাতীয় কোনও সমস্যাই হয় না। বরং এটি স্ট্রোকের মতো সমস্যার সমাধান করতে পারে।
12 sources
- Ginkgo biloba and its potential role in glaucoma-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/29206653/ - Ginkgo biloba extract for age-related macular degeneration-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/23440785/ - Chapter 23 – Ginkgo biloba extract as an antioxidant in nerve regeneration-
https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/B9780128159729000238 - GABA-modulating phytomedicines for anxiety: A systematic review of preclinical and clinical evidence- https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/29168225/
- Ginkgo biloba extract improves coronary artery circulation in patients with coronary artery disease: contribution of plasma nitric oxide and endothelin-1-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/18446847/ - Systematic Investigation of Ginkgo Biloba Leaves for Treating Cardio-cerebrovascular Diseases in an Animal Model-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/28333443/ - A double-blind, placebo-controlled, randomized trial of Ginkgo biloba extract EGb 761 in a sample of cognitively intact older adults: neuropsychological findings-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/12404671/ - The effect of Ginkgo Biloba extract on the expression of PKCalpha in the inflammatory cells and the level of IL-5 in induced sputum of asthmatic patients-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/17828490/ - EGb761 inhibits inflammatory responses in human chondrocytes and shows chondroprotection in osteoarthritic rat knee-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/23483610/ - The traditional Chinese medicine prescription patterns for migraine patients in Taiwan: a population-based study-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/24389028/ - A randomized, placebo-controlled trial of Ginkgo biloba L. in treatment of premenstrual syndrome- https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/19678774/
- Ginkgo biloba Extract (GbE) Stimulates the Hypothalamic Serotonergic System and Attenuates Obesity in Ovariectomized Rats-
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5591947/

Latest posts by StyleCraze (see all)
- কাসুরি মেথির উপকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Dried Fenugreek Leaves Benefits and Side Effects in Bengali - January 25, 2021
- লেমন বাম এর উপকারিতা, ব্যবহার এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া – Lemon Balm Benefits, Uses and Side Effects in Bengali - January 25, 2021
- বাঁধাকপির স্বাস্থ্যোপযোগীতা, গুণাগুণ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এবং ব্যবহার | All About Cabbage - January 22, 2021
- রোগা হওয়ার উপায় খুঁজছেন? জেনে নিন ৪ সপ্তাহের কিটো ডায়েট প্ল্যান, উপকারিতা এবং অন্যান্য টিপস | Keto Diet in Bengali - January 22, 2021
- অরিগ্যানোর ব্যবহার, উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া – Oregano Benefits and Side Effects - January 21, 2021
