
হাঁপানির লক্ষণ এবং এর ঘরোয়া প্রতিকার | Asthma in bengali
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বুক ভরে নিশ্বাস নিতে কে না চায় বলুন তো? মন যেমন চায়, তেমনি শরীরও প্রাণখোলা অক্সিজেন চায়। কিন্তু নিঃশ্বাস নিতে যদি আপনার সমস্যা হয় তখন কি করবেন? আর এই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধার নামই হলো হাঁপানি। এটি এমন একটি রোগ যাতে শ্বাসনালী সরু হয়ে যাওয়ার কারণে সঠিকভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া যায় না। মূলত বংশপরম্পরায় এই রোগ এগিয়ে চলে। যেকোনো ধরনের হাঁচি, কাশি, সামান্য শ্বাসকষ্ট এইসবের থেকেই হাঁপানির সৃষ্টি হয়। মূলত অত্যধিক প্রাকৃতিক দূষন, কোন জিনিসের গন্ধ, ওষুধের মধ্যে থাকা বিভিন্ন এলার্জিকারী বস্তুগুলির কারণে এই হাঁপানি রোগ দেখা যায়। হাঁপানি রোগের ফলে বুকে চাপ ব্যথা, দম বন্ধ ভাব, বুকের ভেতরে শো শো আওয়াজ হতে দেখা যায়। বাচ্চা থেকে বড় প্রত্যেকের মধ্যেই একটি সাধারণ অসুখ হিসেবে এটি বেড়ে চলে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জামা কাপড় কিংবা বিছানাপত্রে ধুলো থাকলে অথবা কোন ওষুধ লাগালে যার গন্ধ মারাত্মক সেই সব থেকে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি হয়। এই রোগ খুব সহজে কমে যাবার নয়, যারা জন্মসূত্রে এই রোগ পেয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে সারাজীবন বহন করে নিয়ে যেতে হয়। এটায় তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায় কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল হবার সম্ভাবনা একেবারেই কম। হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে যেহেতু শ্বাসনালী সরু হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে নাকের ভিতর ফোলা ভাব এবং শ্বাসনালীর পেশীগুলি ফোলা ভাব কমাতে ওষুধের সহায়তা নিতে হয়। এছাড়াও শ্বাস-প্রশ্বাস যাতে সঠিকভাবে নেওয়া যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র গ্রহণ করা, প্রত্যেকদিন সঠিক ব্যায়াম করা, এগুলো মেনে চলতে লাগে। কেননা এটি হঠাৎ যেকোনো জায়গায় শুরু হয়ে যেতে পারে। এর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তারা তাই প্রত্যেকটা সময় সতর্ক ভাবে চলার চেষ্টা করুন। তবে আজকে আমরা জানবো কিভাবে হাঁপানি কে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখবো এবং কোনও রকমের অসুবিধা হলে তৎক্ষণাৎ কীভাবে তার চিকিৎসা করব। আসুন আজকের নিবন্ধ থেকে হাঁপানি রোগের প্রতিকার গুলো জেনেনি (১) ।
Table Of Contents
হাঁপানির কারণ
শ্বাসনালীর ভেতরের পেশীগুলো হঠাৎ করে যদি ফুলে যায় সে ক্ষেত্রে যথাযথ ভাবে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নিতে ব্যাঘাত ঘটে। যার ফলে শরীরের ভেতরে সঠিকভাবে অক্সিজেন পৌছায় না। ফুসফুস যথাযথভাবে অক্সিজেন নিতে পারে না, যার ফলস্বরূপ হাঁপানি রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঠান্ডা লেগে বুকের ভেতরে যদি অত্যধিক শ্লেষ্মা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে এই একই সমস্যা দেখা দেয়। শ্বাসনালী যথাযথভাবে অক্সিজেন শরীরের ভেতরে পৌছাতে পারেনা এবং নাক দিয়ে সরাসরি অক্সিজেন ফুসফুসে পৌঁছতে পারে না, যার ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়। শীতকালে এবং বর্ষাকালে হাঁপানি রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে এই সময় কষ্ট হয়, কেননা এই দুটো সময় ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি থাকে। যার ফলে হাঁপানি রোগীরা এই সময় অন্যান্য সময়ের থেকে তুলনামূলক কষ্টে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ মানুষ সারাবিশ্বে হাঁপানির শিকার। শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাচ্চা থেকে বড় সকলের মধ্যেই দেখা দিতে পারে আর সেই থেকেই হাঁপানির সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চারা তাদের মা কিংবা বাবা কিংবা পূর্বপুরুষদের থেকে এই রোগ পেয়ে থাকে। সে কারণে যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা ধুলোবালি থেকে দূরে থাকবেন, এলার্জিকারী বস্তু কিংবা খাবার এড়িয়ে চলবেন এবং বাইরে যখন বেরোবে তখন অবশ্যই নাক রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখবেন কিংবা মাক্স ব্যবহার করবেন। যাতে সরাসরি বাইরের ধুলো-ময়লা আপনার শরীরের ভেতরে না চলে যায়। কেননা পরে তা শ্বাসনালীতে নিঃশ্বাস গ্রহণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে (২)।
হাঁপানির লক্ষণ
যারা হাঁপানি রোগের সমস্যায় ভুগছেন তাদের মধ্যে বেশ কিছু লক্ষণ শুরুতেই দেখা যায়, যা এটির সূচনা কে বোঝায়।
১) মূলত যারা কাশির সমস্যায় ভুগছেন রাতের দিকে তাদের কাশি বেড়ে যায়। শুকনো কাশি কিংবা শ্লেষ্মাজনিত ভারী কাশি হতে দেখা যায়।
২) বুকের ভেতরে শক্তভাব কিংবা বুকে শ্লেষ্মা জমাট বেঁধে আছে এরকম ভাব দেখা যায়।
৩) নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, শুতে গেলে বুকে চাপ ব্যথা, নাক বন্ধ ভাব এই কয়েকটি লক্ষণ দেখা যায়।
মূলত যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে এই লক্ষণগুলো সকলের মধ্যেই থাকে।
৪) প্রারম্ভিক হিসেবে অনেকের ক্ষেত্রে নাক বন্ধ হয়ে আসা কিংবা গলা চুলকানো ভাব লক্ষ্য করা যায়।
৫) শ্বাসনালীর পেশী গুলি সংকীর্ণতার কারণে ফুসফুসের বায়ু চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে যার ফলে শ্বাসকষ্ট দেখা যায়।
৬) নিঃশ্বাস- প্রশ্বাসে অসুবিধায় হাঁপানি রোগীদের নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় বুকের মধ্যে একটা দম বন্ধ ভাব লাগে এবং নিঃশ্বাস ভালোভাবে নিতে পারে না। যখন হাঁপানির পরিমাণ বাড়ে একসময় নাক মুখ সব দিক থেকেই নিঃশ্বাস নেওয়া যেন বন্ধ হয়ে আসছে এমন মনে হয়।
৭) কাশি হাঁপানি রোগের অন্যতম একটি উপসর্গ হলো। কাশির এক্ষেত্রে শুষ্ক কাশি কিংবা শ্লেষ্মাজনিত কাশি লক্ষ্য করা যায়। বিশেষত এইগুলো রাতের দিকে বাড়ে এবং হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়। অনেকের ক্ষেত্রে আগে থেকে কাশি না থাকলেও নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধার আগে কাশি শুরু হয়।
৮) দম বন্ধ ভাব হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। দম বন্ধ হয়ে আসায় নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে না পারার সময় মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে চায় কিন্তু সেক্ষেত্রেও সঠিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারেনা বলে বুকের মধ্যে ব্যথার সৃষ্টি হয়। মূলত রাতের দিকে কিংবা কাশি হলে অথবা খুব বেশি জোরে দৌড়াদৌড়ি করলে বা ব্যায়াম করলে এই ধরনের সমস্যা হাঁপানি রোগীদের দেখা যায়। যে কারণে হাঁপানি রোগীদের খুব বেশি দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়।
৯) বুকের ভেতর শব্দ হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। শ্বাসনালীতে বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য ফুসফুসে যথাযথভাবে পৌছাতে পারেনা এবং এই নালি ফুলে যাওয়ার কারণে শরীরের ভেতরে অক্সিজেন যেতে পারে না, ফলে যখন হাঁপানি শুরু হয় তখন জোর করে নিঃশ্বাস নেওয়ার পর সেই নিঃশ্বাস যখন বেরোয় তখন মুখের মধ্যে থেকে এক ধরনের শো শো আওয়াজ হয়। পরে হাঁপানি বাড়ার সাথে সাথে এই আওয়াজ বাড়তে থাকে। কেননা বুকের ভেতর বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে এই ধরনের আওয়াজ বের হয় (২)।
হাঁপানির প্রকারভেদ
যারা হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন তারা হয়তো বুঝতে পারবেন হাঁপানি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন ভাবে হয়ে থাকে। প্রত্যেকের হাঁপানির ধরন এক নাও হতে পারে। জেনে নিন এই রোগের আলাদা আলাদা ধরনগুলো। কেননা বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন অবস্থায় এই রোগ দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তাররা একটি আলাদা তালিকা তৈরি করেছে যেখানে আলাদা আলাদা ভাগ করে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী হাঁপানি রোগীদের চিকিৎসা করা যেতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নিন ভাগগুলো (৩)–
১) অ্যালার্জি হাঁপানি – মূলত অ্যালার্জির কারণে এই হাঁপানি দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোন জিনিস থেকে গায়ে অ্যালার্জি হওয়া কিংবা খাবারের মাধ্যমে অ্যালার্জি হওয়াতেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পরিবেশে থেকে কিংবা খাবার থেকে যখন অ্যালার্জি জনিত কারণে হাঁপানি হয় তখন তাকে অ্যালার্জি হাঁপানি বলে।
২) ব্যায়াম প্ররোচিত হাঁপানি – শারীরিক পরিশ্রমের কারণে যখন হাঁপানি দেখা দেয় তখন তাকে ব্যায়াম প্ররোচিত হাঁপানি বলে। মূলত যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তারা যখন দৌড়াদৌড়ি করেন কিংবা অনুশীলন করেন সেক্ষেত্রে অনুশীলন শুরু করার পাঁচ থেকে কুড়ি মিনিটের মধ্যেই শ্বাস নিতে কষ্ট, দম বন্ধ হয়ে আসা শুরু হয়ে যায়।
৩) কাশি বৈকল্পিক হাঁপানি – যাদের হাঁপানির লক্ষণ হিসেবে কাশি হয় শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয় তাকে কাশি বৈকল্পিক হাঁপানি বলা যায়। মূলত শ্লেষ্মাজনিত কারণে কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসে সংক্রমণ হলে অথবা ব্যায়াম করার ফলে কাশি থেকে এই ধরনের হাঁপানি লক্ষ্য করা যায়।
৪) পেশাগত হাঁপানি – এই হাঁপানি যখন আপনার কাজের আশেপাশে শুরু হয় তখন তাকে পেশাগত হাঁপানি বলে। মূলত প্রাণিজ প্রজননকারী, কৃষক, নাপিত এই ধরনের পেশার সাথে যারা রয়েছেন তাদের কাজ শুরুর পরে পরেই যদি হাঁপানি রোগ দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে যে কোন দূষণ থেকে এটি হতে পারে বলে কিংবা এলার্জি জনিত কারণে হতে পারে বলে একে পেশাগত হাঁপানি বলা হয়।
৫) নিশাচর প্রাণী হাঁপানি – হাঁপানি রোগীরা জানেন রাতের দিকে তাদের এই সমস্যা বেড়ে যায়, অনেক সময় এটি বিপদজনক আকার ধারণ করে। কাশি, শ্বাসকষ্ট, দম বন্ধ ভাব, বুকের ভেতর আওয়াজ সবকটি লক্ষণ এই রাতে বিছানায় শোয়ার পরই প্রকট হয়ে ওঠে। এই লক্ষণগুলোকে নিশাচর হাঁপানি বলা হয়। সাধারণত রাতের দিকেই এর বাড়বাড়ন্ত হয়।
হাঁপানি নিরাময়ে ঘরোয়া প্রতিকার
হাঁপানি রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে বহু লোক বহু চিকিৎসা করে থাকেন। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন আপনার ঘরে থাকা হাতের কাছের জিনিস গুলোই আপনাকে এই কষ্ট থেকে খানিকটা মুক্তি দিতে পারে। তাহলে জেনে নিন কিভাবে আপনার রান্না ঘরে থাকা জিনিস গুলো দিয়েই হাঁপানি থেকে আরাম পাবেন।
১) হাঁপানি প্রতিরোধে মধুর ভূমিকা
আপনার কি কি প্রয়োজন?
- দু চা-চামচ মধু
- এক গ্লাস গরম জল
- হাফ চামচ হলুদ
- একটা কালো এলাচ
কি করতে হবে ?
১) এক চা চামচ মধুতে জল মিশিয়ে আস্তে আস্তে খেয়ে নিন।
২) শুতে যাওয়ার আগে দারচিনির গুঁড়ো দিয়ে আরো এক চা-চামচ মধু গিলে ফেলুন। এরপরে আর জল খাবেন না।
৩) এছাড়াও এক চা চামচ মধু এবং হাফ চামচ হলুদ গুঁড়ো জলে মিশিয়ে রাতে শুতে যাওয়ার আগে পান করুন (৪)।
৪) যেকোনো একটি পদ্ধতি প্রত্যেকদিন করতে পারেন।
কতবার করতে হবে ?
দিনে তিনবার পর্যন্ত এই মধু জল খেতে পারেন এবং শুতে যাওয়ার আগে মধু দারচিনি দিয়ে মিশিয়ে খেয়ে নিন কিংবা মধু আর হলুদ মিশিয়ে উষ্ণ গরম জলে খেতে পারেন।
কিভাবে কাজ করে ?
হাঁপানি রোগের নিরাময়ের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি প্রাচীনতম এবং প্রাকৃতিক উপাদান হলো মধু। এটিতে অ্যালকোহল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে যা হাঁপানির লক্ষণগুলোকে কম করতে এবং গলা থেকে কফ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া রাতে শুতে যাওয়ার আগে উষ্ণ গরম জলে মধু দিয়ে খেলে রাতে ঘুম ভালো হবে এবং বুকের কফ ধীরে ধীরে নরম হয়ে যাবে।
২) আদা দিয়ে করুন হাঁপানি রোগের প্রতিকার
কি কি প্রয়োজন?
- ১ চা-চামচ আদা কুচি
- এক কাপ গরম জল
- হাফ চা চামচ মধু
কি করতে হবে ?
১)উনানে এক কাপ জল গরম করে নিন।
২) ফুটন্ত জলে টাটকা আদাকুচি গুলো মিশিয়ে দিন।
৩) এরপর জলটাকে ৫ থেকে ৭ মিনিট ফুটাতে থাকুন।
৪) তারপর গ্যাস নিভিয়ে দিয়ে জলটা ছেঁকে নিয়ে তাতে মধু যোগ করুন এবং গরম গরম এটি পান করুন।
৫) এর পাশাপাশি দিনের বেলাতে কয়েকবার আদার ছোট ছোট টুকরো করে চিবিয়ে খেয়ে নিন (৫)।
কতবার করতে হবে ?
দিনে দুই থেকে তিনবার এই আদা চা পান করুন।
কিভাবে কাজ করে ?
আদার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি থাকার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই বহু ঔষধি তে এই আদার ব্যবহার করা হয়ে আসছে। মূলত শ্বাসনালীর স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য হাঁপানি রোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া প্রতিকারই উপাদান হলো আদা। এটি শ্বাসনালীর পেশিগুলোকে শিথিল করে এর মধ্যে ক্যালসিয়াম গ্রহণ কে নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে সংকীর্ণতা দূর হয় এবং হাঁপানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩) হাঁপানি নিরাময়ে রসুনের ভূমিকা
কি কি প্রয়োজন ?
- দশ-বারোটা রসুনের কোয়া
- হাফ কাপ দুধ
কি করতে হবে ?
১) দুধ কিছুটা গরম করে নিয়ে এরপর এরমধ্যে রসুনের কোয়া গুলো দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
২) যতক্ষণ না রসুনের গন্ধ দুধের মধ্যে মিশে যাচ্ছে কতক্ষণ ফুটাতে থাকুন।
৩) তারপর দুধ ফুটে গেলে সেটা নামিয়ে দিন। (৬)
কতবার করতে হবে ?
দিনে একবার এটি পান করুন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে এই রসুন দুধ পান করলে হাঁপানির কষ্ট থেকে আরাম পাবেন।
কিভাবে কাজ করে ?
রসুন ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। মূলত ফুসফুসের সমস্যা গুলো দূরীকরণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার ফলস্বরূপ ফুসফুস সুস্থ থাকলে হাঁপানির সমস্যা অনেকটা কমে যায় এবং ফুসফুসের ভেতরে যে কোন ধরনের প্রদাহ কমাতে এটি সহায়তা করে।
৪) হাঁপানির প্রতিকারে জোয়ান এর ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- জোয়ান একচামচ
- গরম জল এক গ্লাস
কি করতে হবে ?
১) এক গ্লাস জল নিয়ে সেটিকে ভালোমতো ফুটিয়ে নিতে হবে এবং তার মধ্যে এক চামচ জোয়ান দিয়ে সেটা ভালো করে ফুটাতে হবে।
২) যতক্ষণ না জলের রং পরিবর্তন হচ্ছে ততক্ষণ ওটা ফুঁটিয়ে যাবেন।
৩) জলের রং পরিবর্তন হয়ে গেলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে জলটা আলাদা পাত্রে ঢেলে নেবেন।
৪) তারপর জলটা পান করুন।
কতবার করতে হবে ?
দিনে দুবার এটি খেতে পারেন। সকালে একবার ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে শুতে যাবার সময়। এতে গলায় আরাম পাবেন এবং কফের সমস্যা থাকলেও কমে যাবে।
কীভাবে কাজ করে ?
জোয়ান এর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি পেশীর সংকোচন কে কমাতে সহায়তা করে। যার ফলে শ্বাসনালীতে যে ফোলা ভাব থাকে সেগুলো কম করতে হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।
৫) হাঁপানি প্রতিরোধে হলুদ দুধের ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- কাঁচা হলুদ এক টুকরো
- দুধ 1 কাপ
কি করতে হবে ?
১) দুধ টা ভালো করে ফুটিয়ে তারমধ্যে যদি কাঁচা হলুদ পান সে ক্ষেত্রে এক টুকরো কাঁচা হলুদ থেঁতো করে দিয়ে দিতে হবে।
২) যদি কাঁচা হলুদ না পান সেক্ষেত্রে হাফ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো দুধের মধ্যে মিশিয়ে পান করতে হবে। (৭)
কতবার করতে হবে?
দশ পনেরো দিন টানা দিনে দুবার করে এই হলুদ দুধ গ্রহণ করুন। এটি হাঁপানির সমস্যাকে কম করবে এবং শ্বাসনালিকে রক্ষা করবে।
কিভাবে কাজ করে ?
হলুদের মধ্যে রয়েছে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারকুমিন’। যা হাঁপানি রোগ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মূলত শরীরের প্রদাহজনক যেকোনো সমস্যা কমাতে হলুদ অন্যতম ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। হলুদ এমন এক ধরনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উপাদান যা যেকোনো ধরনের কষ্টকে দূর করতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে শ্বাস নালীর সমস্যা দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।
৬) অপরিহার্য তেলের মাধ্যমে হাঁপানির প্রতিকার
হাঁপানি রোগের প্রতিকারের ক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু অপরিহার্য তেল ব্যবহার করতে পারি। যার মধ্যে অন্যতম হলো ল্যাভেন্ডার তেল এবং নীলগিরি তেল।
- হাঁপানির জন্য ল্যাভেন্ডার তেল
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- ৫-৬ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল
- এক বাটি গরম জল
কি করতে হবে ?
১) এক বাটি গরম জলের মধ্যে এই ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ভালো করে ভাপ নেন।
২) ভাপ নেওয়ার সময় ভালো করে মাথাটা ঢেকে রাখবেন (৮)।
কতবার করতে হবে ?
এটি প্রতিদিন একবার করে করুন।
কিভাবে কাজ করে?
ল্যাভেন্ডার তেল শ্বাসনালীর প্রদাহ কে কম করে এবং শ্লেষ্মা উৎপাদন নিয়ন্ত্রন করে, যার ফলে শ্বাসনালীর ভেতর বায়ু পৌঁছাতে সক্ষম হয়। এছাড়াও এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
- হাঁপানির জন্য নীলগিরি তেল
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- নীলগিরি তেল কয়েক ফোঁটা
- একটা তোয়ালে
কি করতে হবে ?
১) একটি তোয়ালের মধ্যে কয়েক ফোঁটা নীলগিরি তেল নিয়ে ভালো করে নিঃশ্বাস নিন।
কতবার করতে হবে?
দিনে দুবার এটি করুন।
কিভাবে কাজ করে ?
নীলগিরি তেল এমন এক ধরনের উপাদান যা কাশি কম করতে এবং শ্লেষ্মা দূর করতে সহায়তা করে। এই অপরিহার্য তেলটিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শ্বাসনালির সংক্রমণ কে কমাতে সহায়তা করে।
৭) হাঁপানি নিরাময়ে কফির ব্যবহার
কি কি প্রয়োজন ?
- এক কাপ গরম জল
- এক চামচ কফি
কি করতে হবে ?
১) গরম জল টা ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে তারমধ্যে কফি দিয়ে কাল কফি তৈরি করতে হবে।
২) এবার এটি গরম গরম থাকতেই পান করতে হবে।
কতবার করতে হবে?
হাঁপানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য হঠাৎ শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ গরম কফি পান করুন।
কিভাবে কাজ করে ?
হাঁপানির চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কফি। হঠাৎ শ্বাস নালীর সমস্যা দেখা দিলে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হলে এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কফি পান করাতে হবে। কফি পান করার ইতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করা গেছে। মূলত হাঁপানির দ্রুত প্রতিষেধক হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কফির মধ্যে থাকা ক্যাফিন নাক বন্ধ ভাব কে খুলে দিতে সহায়তা করে।
৮) হাঁপানি নিরাময়ে পেঁয়াজের ব্যবহার
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- একটি কাঁচা পেঁয়াজ
কি করতে হবে?
কাঁচা পেঁয়াজ টুকরো টুকরো করে কেটে প্রত্যেকদিন খাদ্যতালিকায় আপনাকে এটি গ্রহণ করতে হবে (৯)।
কতবার গ্রহণ করা যাবে ?
দিনে দুই থেকে তিনবার যখন খাবার খাবেন তখন গোটা পেঁয়াজ কেটে নিয়ে খাবেন।
কিভাবে কাজ করে ?
পেঁয়াজের তীব্র গন্ধ আমাদের অনেকের কাছে অসুবিধার কারণ হতে পারে, তবে এটি হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে উপকার করে। মূলত পেঁয়াজের ঝাঁজ নেওয়ার ফলে নাক থেকে চোখ দিয়ে জল বের হয় তার ফলে নাক পরিষ্কার হয়ে যায় এবং নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয় না। এছাড়াও এর মধ্যে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি হাঁপানি নিরাময়ে সহায়তা করে।
৯) হাঁপানি প্রতিরোধে আমলকির ব্যবহার
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- একটি গোটা আমলকি
কি করতে হবে ?
একটি গোটা আমলকি ভালো করে কেটে নিয়ে প্রত্যেকদিন খেতে হবে।
কতবার করতে হবে?
টানা ১৫ দিন আমলকি যদি কেটে খেতে পারেন এক্ষেত্রে হাঁপানি রোগীরা আরাম পাবেন।
কিভাবে কাজ করে ?
আমলকির মধ্যে থাকা অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলো শ্বাসনালীতে সুস্থতা প্রদান করে থাকে, যার ফলস্বরূপ শ্বাসনালীর পেশীগুলো সংকুচিত হয় এবং নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নিতে সমস্যা কম হয় এবং হাঁপানির সমস্যা দূর হয়। তাই হাঁপানি রোগীদের উচিত প্রত্যেকদিন একটি করে কাঁচা আমলকি গ্রহণ করা।
১০) হাঁপানি রোগ নিরাময়ে সরষের তেল এর ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- সরষের তেল কয়েক ফোঁটা
কি করতে হবে ?
প্রত্যেক দিন স্নান করতে যাওয়ার আগে কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেল দিয়ে ভালো করে নাকের সামনে, বুকে এবং পায়ের তলায় মাসাজ করতে হবে। যার ফলে বুকের ভেতর যে কফ জমে থাকে সেই কফ হালকা হতে শুরু করবে। সম্ভব হলে সরষের তেল গরম করে নেবেন এবং তারপর তা পায়ের তলায় প্রত্যেকদিন রাতে মালিশ করবেন।
কতবার করতে হবে ?
সকালে স্নানের আগে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে পায়ের তলায় সর্ষের তেল গরম করে নিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।
কিভাবে কাজ করে ?
সরষের তেলের মধ্যে যে ঝাঁঝ থাকে সেটি পেশিতে রক্ত সরবরাহ করতে সহায়তা করে। যার ফলস্বরূপ বুকে কিংবা গলায় যদি কফ থাকে কিংবা নাক দিয়ে সরষের তেল টানার ফলে শ্বাসনালীতে আটকে থাকা কফ হালকা হতে থাকে এবং হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া উপাদান।
১১) হাঁপানি নিরাময়ে তুলসীর ব্যবহার
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- তুলসী পাতা দশ-বারোটা
কি করতে হবে ?
রোজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দশ-বারোটা তুলসী পাতা নিয়ে ভালো করে ধুয়ে সেগুলো চিবিয়ে খেয়ে নিতে হবে।
কতবার করতে হবে?
দিনে একবার সকাল বেলা খালি পেটে এগুলি খেতে হবে।
কিভাবে কাজ করে ?
তুলসী পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত উপাদানগুলি ফুসফুস সুস্থ রাখতে এবং কফ পাতলা করতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি সংক্রমণজনিত যে সমস্ত ব্যাকটেরিয়া মুখে কিংবা শ্বাসনালীতে আটকে থাকে সেই ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস নিরাময়ে সহায়তা করে।
১২) হাঁপানি নিরাময়ে ডুমুর এর ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- ডুমুর তিন-চারটি
কি করতে হবে?
১) তিন-চারটে শুকনো ডুমুর নিয়ে সেগুলি গরম জলে ভালো করে পরিষ্কার করে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২) সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেই জলটি খেতে হবে।
৩) টানা দু’মাস এটি খেতে পারেন।
দিনে কতবার খেতে হবে?
যেদিন থেকে শুরু করবেন সেদিন থেকে টানা দু’মাস রোজ সকাল বেলা খালি পেটে খেতে হবে।
কিভাবে কাজ করে?
ডুমুরের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্ষা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এছাড়াও হাঁপানি প্রতিরোধকারী উপাদান গুলির মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো এটি। হাঁপানি রোগের পাশাপাশি কাশি নিরাময়ে এবং বুকের কফ হালকা করে রোগীকে আরাম দিতে এটি সহায়তা করে।
১৩) হাঁপানি নিরাময়ে সজনে গাছের ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- সজনে ডাটা আট-দশটি।
কি করতে হবে ?
সজনে ডাঁটা রান্না করে প্রত্যেক দিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
কতবার ব্যবহার করতে হবে?
টানা একমাস খাদ্যতালিকায় সজনে ডাটা রাখতে হবে।
কিভাবে কাজ করে ?
হাঁপানি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে সজনে। মূলত এটি শ্বাসনালির সংক্রমণ দূর করতে এবং ফুসফুস সুস্থ রাখতে এবং নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস সহজতর করে তুলতে সহায়তা করে।
১৪) হাঁপানি নিরাময়ে বাসক পাতার ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- বাসক পাতা সাত-আটটি
- এক বাটি গরম জল।
কিভাবে করতে হবে ?
১) একবাটি গরম জলে বাসক পাতা গুলো ভালো করে ধুয়ে দিয়ে দিতে হবে।
২) তারপর জলটি ভালো করে ফুটাতে হবে যতক্ষণ না সবুজ হচ্ছে ততক্ষণ ফুঁটিয়ে যাবেন।
৩) চাইলে আপনি এর মধ্যে তুলসী ও যোগ করতে পারেন কেননা এটির স্বাদ তেতো হয়।
৪) অথবা মধু ও যোগ করতে পারবেন।
৫) এরপর ফুটিয়ে নিয়ে পাতা থেকে জলটা ছেঁকে তার সাথে মধু যোগ করে খেয়ে নিন।
কতবার করতে হবে?
দিনে দুবার এটি পান করুন।
কিভাবে কাজ করে ?
বাসক পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য যুক্ত উপাদানগুলি সর্দি কাশি কমাতে এবং ফুসফুসের সংক্রমণ দূর করতে সহায়তা করে। প্রাচীন যুগ থেকেই এটি অন্যতম একটি ভেষজ ঔষধ হিসেবে সর্দি কাশি এবং হাঁপানি চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। সুতরাং হাঁপানি রোগীদের জন্য এটি অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যার ব্যবহারে হাঁপানি রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত সহজলভ্য একটি উপাদান এবং বাড়ির আশেপাশে বা জংলা জায়গায় গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এটি হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
১৫) হাঁপানি রোগ নিরাময়ে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি এর ভূমিকা
কি কি উপাদান প্রয়োজন?
- ভিটামিন ডি পরিপূরক ট্যাবলেট
- ভিটামিন সি ট্যাবলেট।
কি করতে হবে?
প্রতিদিন ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি এর পরিপূরক ট্যাবলেট কিংবা পরিপূরক খাদ্য গ্রহণ করতে হবে (১০)।
কতবার গ্রহণ করতে হবে?
এক মাসের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি এর পরিপূরক ট্যাবলেটগুলো গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে কাজ করে ?
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ভিটামিন ডি এর পরিপূরক ওষুধগুলি হাঁপানির লক্ষণ গুলি হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি প্রদাহবিরোধী ক্রিয়া এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হওয়ায় এটি ফুসফুসের সংক্রমণ কে কমাতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি হাঁপানির চিকিৎসায় কতখানি কাজ করে তা সমীক্ষায় জানা না গেলেও এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে। যে কারণে হাঁপানি রোগীদের দৈনিক ভিটামিন ডি ও ভিটামিন সি ট্যাবলেট গ্রহণ করা উচিত (১১)।
হাঁপানি রোগের নিরাময়ে খাদ্য তালিকা
আমরা যে কোনো ধরনের সমস্যার জন্য যেমন ওষুধ পত্র গ্রহণ করে থাকি তার পাশাপাশি যথাযথ পথ্য গ্রহণ করা উচিত, কেননা খাবারটা শরীরে আমাদের ভালো করার পাশাপাশি বেশ কিছু সময় খারাপ প্রভাব ফেলে থাকে। তাই যে ধরনের খাবার গুলোতে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে সেই ধরনের খাবারগুলোকে একেবারে খাদ্য তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত। জেনে নিন তাহলে হাঁপানি রোগী কি কি খাবে আর কি খাবেনা।
খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে –
১) সয়া জাতীয় খাদ্য,
২) দুধ জাতীয় খাদ্য,
৩) বাদাম জাতীয় খাদ্য,
৪) চিংড়ি মাছ এবং অন্যান্য শেলফিশ,
৫) গম,
৬) গ্লুটেন,
৭) ডিম
মূলত এই উপাদানগুলো খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
এবার জেনে নিন তাহলে কি কি খাদ্য খাদ্য তালিকায় সংযোজন করতে হবে। আমরা জানি একটা স্বাস্থ্যকর ডায়েট মানুষকে সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারে। তাই হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে এর অন্যথা নয়। হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে প্রত্যেকদিনের খাদ্যতালিকায় টাটকা ফল এবং শাকসবজি রাখতে হবে যাতে শরীরে যথাযথ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ সবকিছু পৌঁছায়। যার ফলে শ্বাসযন্ত্র সুস্থ থাকবে। জেনে নিন তাহলে কি কি খাবার খাবেন –
১) ফল – আপেল, কলা, কিউই, আনারস, বেরি।
২) শাকসবজি – গাজর, রসুন, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি, অঙ্কুরিত ছোলা, পালংশাক, মিষ্টি আলু, আদা, টমেটো।
এছাড়াও বিভিন্ন ফলের রস এবং সবজির জুস করে খেলে পরে তা হাঁপানি রোগীদের শরীরের জন্য ভালো। তবে যতটা পারবেন জাঙ্কফুড এবং অতিরিক্ত ভাজাভুজি জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে কি কি করা উচিত
আমরা প্রত্যেকেই জানি একটা সুস্থ খাদ্যতালিকা মানুষকে যেমন সুস্থ রাখতে সহায়তা করে, তার পাশাপাশি আমাদের জীবনযাপন পদ্ধতি ও যদি সুস্থ হয় এবং আমরা যদি সক্রিয় জীবনযাপন করে থাকি তাহলে যেকোনো রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে হাঁপানি হয়েছে মানে এই নয় আপনি সক্রিয় জীবন যাপন করতে পারবেন না। মূলত আপনি যদি দৈনন্দিন ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, হাঁটাচলা এবং সাঁতার কাটার মতন অভ্যাস গুলি নিজের দৈনন্দিন তালিকায় রাখেন তাহলে দেখবেন হাঁপানির সমস্যা থেকে খুব দ্রুতই মুক্তি পাবেন। এছাড়াও প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট সময় হাঁটাচলা করা, সাইকেল চালানো, হালকা দৌড়াদৌড়ির মতন ব্যায়ামগুলো শরীরের অতিরিক্ত জলকে ঘামের মধ্যে বাইরে বের করে দিতে সহায়তা করে যার ফলে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা তৈরি হতে পারে না। যার ফলস্বরূপ শ্বাস-প্রশ্বাসও বাধা দেওয়া যায় না। তাহলে জেনে নিন হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোন কোন অনুশীলন গুলি করবেন –
১) সাধারণ শ্বাস–প্রশ্বাস নেওয়া – সোজা হয়ে বসে ভালো করে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস নিন এবং নিঃশ্বাস ছাড়ুন। দেখবেন যাতে নিঃশ্বাস নাক দিয়ে টেনে মুখ দিয়ে ছাড়ার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার শ্বাসনালী যথাযথ অক্সিজেন ফুসফুসে পৌঁছে দিতে পারবে।
২) দীর্ঘ শ্বাস – ভালো করে সোজা হয়ে শিরদাঁড়া সোজা রেখে বসে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস টেনে নিন এবার নিঃশ্বাস টিকে বুকের মধ্যে কয়েক সেকেন্ড রেখে আস্তে আস্তে মুখ দিয়ে ছাড়ুন। এটি ৫ বার করুন।
৩) ঠোঁটের সহায়তায় ব্যায়াম – সোজা হয়ে বসে নাক দুটো হাত দিয়ে বন্ধ করে মুখটাকে ফু দেওয়ার মতন করে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস নিন এবং নিঃশ্বাসটা বুকের ভেতর রেখে আবার ফু দেওয়ার মতন করেই আস্তে আস্তে ছেড়ে দিন। এমনভাবে ৫ বার করুন। দৈনিক এই তিনটি ব্যায়াম যদি হাঁপানি রোগীরা করেন এতে তাদের বুকের পেশী গুলি ও আরাম পাবে এবং ফুসফুস আরো বেশি সচল থাকবে।
কখন ডাক্তার দেখাতে হবে?
দিনের-পর-দিন কাশি এবং শ্লেষ্মা বাড়তে থাকলে এবং শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে তখন ঘরোয়া প্রতিকার এর ভরসায় না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা শ্বাসনালী যদি অত্যধিক সংক্রমিত হয়ে যায় এবং ফুলে যায় সে ক্ষেত্রে অক্সিজেন সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছাতে পারবে না, তখন হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে আরো সমস্যা দেখা দেবে এবং অবস্থা জটিল হলে প্রয়োজনে আলাদা করে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই অবস্থা যদি খানিকটা জটিল মনে হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
হাঁপানি রোগের চিকিৎসা
হাঁপানি রোগের চিকিৎসা বহু পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। একটা অ্যালোপ্যাথি, একটা আয়ুর্বেদ এবং অন্যটি হলো হোমিওপ্যাথি। এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা দ্রুত হয়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে এবং হোমিওপ্যাথি শাস্ত্র অনুযায়ী তা কিছুটা সময় লাগে।
- অ্যালোপ্যাথি – মূলত হাঁপানির তীব্র কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য তাৎক্ষণিক আরাম দেওয়ার জন্য যে ওষুধ গুলো ব্যবহার করা হয় কিংবা অক্সিজেন ব্যবহার করা হয় এগুলি দ্রুত চিকিৎসা করতে থাকে।এগুলো মূলত হাঁপানি যখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায় সেক্ষেত্রে এগুলি ব্যবহার করা হয়। এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় ইনহেলার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ডাক্তারবাবুদের প্রেসক্রাইব করা বিভিন্ন ধরনের ত্রাণকারী ওষুধ ব্যবহার করা হয় যে গুলো হাঁপানি কে খুব কম সময়ের মধ্যে কমিয়ে দিতে সহায়তা করে।
- আয়ুর্বেদ – যাদের ক্ষেত্রে হয়তো খুব কম সময়ে হাঁপানি রোগের দেখা দিয়েছে বা বলা যেতে পারে সবে শুরু হয়েছে সেই সময় থেকে আস্তে আস্তে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে চিকিৎসা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে অনেক সময় হাঁপানি রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যদিও বা এই রোগের পুরোপুরি কোন নিরাময় নেই কিন্তু এটিকে সাধ্যের মধ্যে রাখা যেতে পারে অর্থাৎ তীব্রতা কম রাখতে পারে। তাই আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী বেশ কিছু নিয়মাবলী আছে যেগুলি গ্রহণ করার পাশাপাশি যেমন হালকা ব্যায়াম, ধূমপান পরিত্যাগ, হাটা এগুলো করার পাশাপাশি কিছু কিছু আয়ুর্বেদিক ওষুধ গ্রহণ করলে হাঁপানি রোগ থেকে সামরিক মুক্তি পাওয়া যায়।
- হোমিওপ্যাথি – হাঁপানির চিকিৎসার ক্ষেত্রে যারা হোমিওপ্যাথি ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন এক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি অর্থাৎ যারা শুরু থেকে এটি ব্যবহার করে আসছেন এই ওষুধ ব্যবহার করার ফলে আপনার হাঁপানি সাধ্যের মধ্যে থাকবে। হঠাৎ করে বেড়ে যাবার বা কমে যাওয়ার মতন সমস্যা হবে না। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ওষুধ সেবন করতে হবে। তাতে আপনার হাঁপানি তুলনামূলক কম থাকবে।
তাহলে আজকের নিবন্ধ থেকে আমরা অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হাঁপানির মতন সমস্যা সম্পর্কে অনেক তথ্য পেলাম। বর্তমান বিশ্বের বহু মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। কেউ জন্মসূত্রে পেয়েছে কেউবা পেশাগত কারণে। তবে যারা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত তাদের কষ্ট অন্যের বোঝার ক্ষমতা নেই। তাই হাঁপানি কে রোগ হিসেবে না দেখে দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ ভাবা উচিত এবং সেই মতো জীবন ধারণ করা উচিত। আজকে আমরা হাঁপানি রোগের ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে জেনে গিয়েছি যেগুলো সহজেই আমরা করতে পারবো এবং নিজেরা কিছুটা মেনে চললে সুস্থ থাকতে পারব। তাই আর না ভেবে আজ থেকেই সুস্থ জীবনযাপন করা শুরু করুন, যাতে সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এবং আপনার পাশের মানুষটিকে ও ভাল রাখবেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্নাবলী :
হাঁপানি কি সম্পূর্ণ নির্মূল হয়?
না, হাঁপানি সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না। যাদের বংশ-পরম্পরা এই রোগ চলে আসছে তারা যদি সঠিকভাবে মেনে চলেন তাহলে হয়তো কম থাকবে, কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল হয় না।
হাঁপানি কি কোনও রোগ?
হাঁপানিকে সরাসরি রোগ না বলে ফুসফুসের অসুস্থতা বলা যেতে পারে।
হাঁপানি কিভাবে বোঝা যায়?
নিয়মিত কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকের ব্যথা, বুকের ভেতর শো শো আওয়াজ এই উপসর্গগুলি দেখা দিলেই হাঁপানির সূচনা বোঝা যায়।
হাঁপানি কি পুরোপুরি কমে যায়?
পুরোপুরি হয়তো কমে যায় না, তবে যদি ঠিকঠাক মেনে চলেন এটি বাড়বেও না।
ইনহেলার ছাড়া কিভাবে আমি হাঁপানি কমাতে পারি?
যারা দীর্ঘদিন ইনহেলার ব্যবহার করে আসছেন তাদের হঠাৎ করে হয়ত ছাড়তে সময় লাগবে, তবে যখন শ্বাসকষ্ট শুরু হবে তখন প্লাস্টিক, ঠোঙ্গা জাতীয় কোন জিনিস নিয়ে তার ভেতরে নিঃশ্বাসটা ছাড়বেন এবং টেনে নেবেন। এইভাবে করতে থাকলে হয়তো আরাম পেতে পারেন তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
হাঁপানিতে কি ধরনের জটিলতা দেখা যায়?
হাঁপানি মূলত খুব বেশী জটিল হয়ে ওঠে না। তবে যদি কাশি কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায় সে ক্ষেত্রে এটি জটিলতার সৃষ্টি হয়।
হঠাৎ করে হাঁপানি শুরু হয়ে যেতে পারে ?
হঠাৎ কোনও খাবার গ্রহণ করলে যাতে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিংবা হঠাৎ করে কিছু গন্ধ নাকে গেলে যাতে অ্যালার্জি সৃষ্টি হতে পারে এমন কিছু গ্রহণ করলে পরে হঠাৎ হাঁপানি শুরু হতে পারে। তবে এর পূর্ববর্তী উপসর্গ থাকে কাশি, শ্বাসকষ্টের মত সমস্যাগুলো থাকে। সেগুলো যদি না থাকে তাহলে হঠাৎ করে শুরু হবার সম্ভাবনা খুব কমই থাকে।
11 sources
- Asthma
https://www.nhlbi.nih.gov/health-topics/asthma - Signs, Symptoms, and Complications
https://www.nhlbi.nih.gov/health-topics/asthma#signs-symptoms-and-complications - Types of Asthma
https://www.webmd.com/asthma/types-asthma - Medicinal and cosmetic uses of Bee’s Honey – A review
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3611628/ - Effects of Ginger and Its Constituents on Airway Smooth Muscle Relaxation and Calcium Regulation
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3604064/ - Purified aged garlic extract modulates allergic airway inflammation in BALB/c mice
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/18780948/ - Evaluation of Efficacy of Curcumin as an Add-on therapy in Patients of Bronchial Asthma
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4190737/ - Lavender essential oil inhalation suppresses allergic airway inflammation and mucous cell hyperplasia in a murine model of asthma
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/24909715/ - Anti-asthmatic effects of onions. Alk(en)ylsulfinothioic acid alk(en)yl-esters inhibit histamine release, leukotriene and thromboxane biosynthesis in vitro and counteract PAF and allergen-induced bronchial obstruction in vivo
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/2462422/ - Vitamin D and asthma in children
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/23069123/ - Vitamin C for asthma and exercise-induced bronchoconstriction
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/24154977/

Latest posts by StyleCraze (see all)
- কৃমির সংক্রমণ চিকিৎসার ঘরোয়া প্রতিকার | Pinworms Home Remedies in Bengali - February 28, 2021
- কুষ্ঠ রোগের কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা – Leprosy Causes, Symptoms and Treatment in Bengali - February 26, 2021
- সামুদ্রিক লবণের উপকারীতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Sea Salt Benefits and Side Effects - February 26, 2021
- তেজপাতা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য | All About Bay Leaf (Tej Patta) in Bengali - February 26, 2021
- ভিটামিন ডি-3 এর উপকারিতা, এর ঘাটতির কারণ এবং লক্ষণ | Vitamin D3 Benefits in Bengali - February 26, 2021
