জলপাইয়ের উপকারীতা, ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Olive (Jaitun) Benefits, Uses and Side Effects

আমরা সকলেই খাদ্যে জলপাই তেলের ব্যবহার এবং তার স্বাস্থ্যোপযোগীতার বিষয়ে অবগত কিন্তু একটা জিনিস কখনও খেয়ালই করা হয়নি যে সরাসরি জলপাইয়ের ব্যবহারও রয়েছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন জলপাই হলো একটি অতি উপাদেয় ফল যা অন্যান্য ফলের মতন সরাসরি খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ জলপাইয়ের উপযোগ করলে অনেক কঠিন এবং গুরুতর রোগের উপশম হয়। রোগ নিরামায়ক গুণাবলীর কারণে জলপাইকে কিছু মানুষ ঔষধের ভাণ্ডার হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই প্রবপ্নধ থেকে আমরা জলপাইয়ের উপকারীতা, ব্যবহার এবং গুণাবলী সম্পর্কে বিশদে জানতে পারবো। তবে একথাও মাথায় রাখা দরকার যে যে কোনো অসুখের ক্ষেত্রেই ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা একমাত্র রোগ নিরামায়ক পদ্ধতি হতে পারেনা। প্রয়োজন মতন চিকিৎসকেরও পরামর্শ নেওয়া দরকার। সুস্থ্য এবং নিরোগ শরীর আমাদের সকলের জীবনেরই লক্ষ্য এবং কাম্যও।
এবার জেনে নেওয়া যাক জলপাইয়ের স্বাস্থ্যোপযোগীতা গুলির সম্বদ্ধে।
In This Article
জলপাইয়ের স্বাস্থ্যোপযোগীতা
জলপাইয়ের স্বাস্থ্যোপযোগীতা গুলি হলো যথাক্রমে –
১। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর – জলপাই হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে পরিপূর্ণ একটি ফল। এনসিবিআই এর একটি গবেষণা সূত্রে জানা যায় যে জলপাইতে আনুমানিক ৫০% ফেনোলিক যৌগ বর্তমান থাকে। যা মুলত হাইড্রোক্সিটাইরোসোল নামে একটি উপাদান ধারণ করে এবং একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে জলপাইয়ের এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য কোলেস্টেরলের উপর ক্রমবর্ধমান ফ্রি র্যাডিক্যালসের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। তবে মানবদেহে ওপর এর গুরুত্ব আরোও বিশদে জানার জন্য এখনও অনেক গবেষণার প্রয়োজন। তবে জলপাইয়ের এই বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় যে জলপাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দ্বারা সৃষ্ট সমস্যা নিয়ন্ত্রণে জলপাইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। (1)
২। ক্যান্সার প্রতিরোধক – ক্যান্সারের মতন মারাত্মক রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে জলপাইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। জার্মান ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে জলপাই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, জলপাই কিছু উপাদান আছে যেমন স্কোয়ালিন এবং টারপেনয়েড। এগুলির উপস্থিতির কারণে জলপাই ব্যবহার ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে একথাও মাথায় রাখা দরকার যে ক্যান্সারের মতন রোগের চিকিৎসায় ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা দরকার। (2)
৩। হার্টের সুস্বাস্থ্য রক্ষক – জলপাই কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য উন্নত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এনসিবিআই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে বিশুদ্ধ জলপাই তেলের ব্যবহার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। একইসাথে উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে। প্রসঙ্গত উচ্চ রক্তচাপ এবং মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তাই বলা হয় যে জলপাই তেল হার্টের স্বাস্থ্যোন্নতির ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। (3)
৪। অস্টিওপোরেসিসের ক্ষেত্রে উপকারী – জলপাইয়ের উপর মালয়েশিয়া মেডিকেল সেন্টার দ্বারা পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় আরোও উল্লেখ করা হয়েছে যে জলপাইয়ের মধ্যে উপস্থিত পলিফেনল হাড়ের গঠন সুদৃঢ় করে তোলে। এই পলিফেনল হাড়ের উপর ফ্রি র্যাডিক্যালসের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। উল্লেখ্য এই ফ্রি র্যাডিক্যালসই হাড়ের ক্ষয় করে। জলপাই এবং জলপাইয়ের তেলের হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে তাই এটা ধারণা করা যেতে পারে যে জলপাই ব্যবহার অস্টিওপরোসিস সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে। যাইহোক, হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর জলপাইয়ের প্রভাব গভীরভাবে বোঝার জন্য আরো গবেষণা করা প্রয়োজন। (4)
৫। পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়ক – পরিপাক ক্রিয়া সুস্থ্য এবং স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে জলপাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিক্যিউলার সায়েন্সেস অনুসারে, জলপাইতে এন্টিইনফোমেট্রি প্রভাব আছে। যা ইনফ্লেটেবল অন্ত্রের রোগ (প্রদাহের কারণে পেটের সমস্যা) দূর করতে সহায়তা করে, এবং হজম শক্তিকে প্রভাবিত করে। তাই একথা বলা যেতেই পারে যে পেটের প্রদাহ নাশ করে হজম শক্তিকে উন্নত করে তোলার ক্ষেত্রে জলপাইয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে পরিপাক তন্ত্রের ওপর জলপাই এর সরাসরি প্রভাব জানতে আরো গবেষণা প্রয়োজন। (5)
৬। ওজন হ্রাসে সহায়ক – জলপাইয়ের ওপর হওয়া একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে জলপাইয়ের মধ্যে রয়েছে লিনোলিক অ্যাসিড যা শরীরের জমা মেদ হ্রাসে সহায়তা করে। এছাড়াও জানা গেছে যে জলপাই বা জলপাই তেল হজমের সময় এই বিশেষ অ্যাসিড বেশ কিছুটা পরিমাণে উৎপাদিত হয় যা শরীরে জমে থাকা চর্বি গলিয়ে ওজন হ্রাসের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। (6)
৭। মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে – জলপাইয়ের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটা মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। গেরিয়াট্রিক রিসার্চ এডুকেশনাল অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সেন্টার (ইউএসএ) দ্বারা পরিচালিত জলপাই তেল উপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। গবেষণা সূত্রে জানা যায় যে বিশুদ্ধ জলপাই তেল গ্রহণ অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। একইসাথে ক্রমবর্দ্ধমান বয়সের কারণে স্মৃতি ভ্রংশ হওয়ার এবং কোনো কিছু শেখার ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখা যায় তার প্রতিকার হয়। তাই এটা বলা যেতে পারে যে খাদ্য হিসেবে জলপাই তেল গ্রহণ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। (7)
৮। মধুমেহ বা ডায়বিটিস রোগ নিয়ন্ত্রক – জলপাই মধুমেহ বা ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের উপর জলপাই তেলের প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য পরিচালিত একটি গবেষণা এই বিষয়ে নিশ্চিত করে। গবেষণা সূত্রে জানা যায় যে অলিভ অয়েল ইনসুলিনের কার্যকলাপ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এই কারণে মনে করা হয় জলপাই তেলের ব্যবহার ডায়বিটিসের সমস্যা থেকে শরীরকে সুস্থ্য এবং নিরাপদে রাখে। (8)
৯। দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে – বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশুদ্ধ জলপাই তেলের ব্যবহার এজ-ইনসুলেটেড ম্যাকুলার ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করতে পারে (বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া।)। এই বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করেই বলা যেতে পারে যে খাদ্য হিসেবে জলপাই বা জলপাই তেলের ব্যবহার করলে চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত হয়। (9)
১০। ত্বক এবং চুলের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় উপযোগী – অলিভ অয়েল ত্বককে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে, ক্ষত সারিয়ে তুলতে এবং পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিক্যিউলার সায়েন্সেস-এর একটি গবেষণা এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইঁদুরের উপর পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে, জলপাই পাতায় ওলোরোওপিইন নামে একটি নির্দিষ্ট উপাদান রয়েছে। এই উপাদান দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। এর ভিত্তিতে, এটা বলা যেতে পারে যে জলপাই ফল এবং এর পাতা ব্যবহার ত্বক এবং চুল সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। (10) (11)
জলপাইয়ের পৌষ্টিক গুরুত্ব
জলপাইয়ের পৌষ্টিক উপাদান গুলি হলো নিম্নরূপ –
পৌষ্টিক উপাদান | প্রতি ১০০ গ্রামে পরিমাণ |
---|---|
জল | ৭৫.২৮ গ্রাম |
শক্তি | ১৪৫ কিক্যাল |
প্রোটিন | ১.০৩ গ্রাম |
মোট লিপিড | ১৫.৩২ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৩.৮৪ গ্রাম |
ফাইবার | ৩.৩ গ্রাম |
শর্করা | ০.৫৪ গ্রাম |
মিনারেলস | |
ক্যালসিয়াম | ৫২ মিলিগ্রাম |
আয়রণ | ০.৪৯ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেশিয়াম | ১১ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৪ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ৪২ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ১৫.৫৬ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ০.০৪ মিলিগ্রাম |
কপার | ০.১২ মিলিগ্রাম |
সেলেনিয়াম | ০.৯ আরএই |
ভিটামিন | |
থিয়ামিন | ০.০২১ মিলিগ্রাম |
রাইবোফ্লাবিন | ০.০০৭ মিলিগ্রাম |
নিয়াসিন | ০.২৩৭ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৬ | ০.০৩১ মিলিগ্রাম |
ফলেট | ৩ আরএই |
ভিটামিন এ | ২০ আরএই |
ভিটামিন এ | ৩৯৩ আইইউ |
ভিটামিন ই | ৩.৮১ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন কে | ১.৪ আরএই |
লিপিড | |
ফ্যাটি অ্যাসিড (স্যাচুরেটেড) | ২.০২৯ গ্রাম |
মনো অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ১১.৩১৪ গ্রাম |
পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ১.৩০৭ গ্রাম |
জলপাইয়ের ব্যবহার
জলপাইয়ের ব্যবহার গুলি হলো যথা –
- ২ – ৩ টি জলপাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
- ২ – ৪ চামচ অলিভ অয়েল খাবার রান্না করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
- এছাড়াও চুল এবং ত্বকের মালিশের ক্ষেত্রে জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়।
জলপাইয়ের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া –
আমরা জলপাইয়ের উপকারীতা গুলির বিষয়ে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়ে গেছি। এবার এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক –
- জলপাই এবং জলপাই তেল রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রন করে তাই ইতিমধ্যে যেসব ব্যক্তিরা মধুমেহ রোগাক্রান্ত হওয়ার কারণে ওষুধ সেবন করেন তাদের এই তেলের অতিরিক্ত সেবন থেকে বিরত থাকা দরকার।
- যাদের সংবেদনশীল ত্বক অলিভ অয়েলে ত্বক বা চুল মালিশের ক্ষেত্রে একটু সচেতন হওয়া উচিৎ। কারণ এসব ক্ষেত্রে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
- গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া দরকার।
- খাদ্য পদার্থে অ্যালার্জির সম্ভবনা থাকলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করেই জলপাই সেবন করা দরকার।
জলপাইয়ের স্বাস্থ্যোপযোগীতা গুলির সম্পর্কে পাঠকের নিশ্চই একটা সম্যক ধারণা হয়েছে। তাই আজ থেকে আপনার খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করুন এবং অনেক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার হাত থেকে শরীরকে মুক্ত রাখুন।
Sources
Articles on StyleCraze are backed by verified information from peer-reviewed and academic research papers, reputed organizations, research institutions, and medical associations to ensure accuracy and relevance. Read our editorial policy to learn more.
- Antioxidant activity of olive polyphenols in humans: a review
- Olives and olive oil in cancer prevention
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/15554560/ - Olive oil intake and risk of cardiovascular disease and mortality in the PREDIMED Study
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4030221/ - Olives and Bone: A Green Osteoporosis Prevention Option
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4997441/ - Olive Tree Biophenols in Inflammatory Bowel Disease: When Bitter is Betterhttps://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6471980/
- Nutraceutical effects of table green olives: a pilot study with Nocellara del Belice oliveshttps://immunityageing.biomedcentral.com/articles/10.1186/s12979-016-0067-y
- Extra virgin olive oil improves learning and memory in SAMP8 mice
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/21955812/ - Olive oil in the prevention and management of type 2 diabetes mellitus: a systematic review and meta-analysis of cohort studies and intervention trials
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5436092/ - Olive Oil Consumption and Age-Related Macular Degeneration: The Alienor Study
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4965131/ - Anti-Inflammatory and Skin Barrier Repair Effects of Topical Application of Some Plant Oils
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5796020/ - Topical Application of Oleuropein Induces Anagen Hair Growth in Telogen Mouse Skin
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4462586/ - USDA
https://fdc.nal.usda.gov/fdc-app.html#/food-details/169096/nutrients