
কাসুরি মেথির উপকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Dried Fenugreek Leaves Benefits and Side Effects in Bengali
আমাদের রান্না ঘরের প্রয়োজনীয় আনাজপাতি গুলির মধ্যে অন্যতম একটি উপাদান হল মেথি। বিভিন্ন রান্নায় মেথির ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মেথির বহু স্বাস্থ্য গুনাগুন রয়েছে। আজকে আমরা মেথি গাছের শুকনো পাতা নিয়ে আলোচনা করব। এই শুকনো মেথি পাতা কে কাসুরি মেথি বলা হয়। মেথি গাছের পাতাকে রোদে শুকিয়ে বাড়িতে বসেই তৈরি করা যায় কাসুরি মেথি এটি হলো এক ধরনের তিতা স্বাদ যুক্ত উপাদান। আমাদের রান্নায় ব্যবহৃত বিভিন্ন মসলা গুলির মধ্যে অন্যতম সুগন্ধি মসলা হল মেথি। মেথি গাছের পাতাগুলো বাছাই করে ভালো করে মুছে নিয়ে রোদে শুকিয়ে বাড়িতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে কিংবা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডেড কাসুরি মেথি ব্যবহার করতে পারেন। আসুন তাহলে জেনে নিন আজকে কাসুরি মেথি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য। (1)
Table Of Contents
কাসুরি মেথি কি?
মেথি হলো ভারতীয় মসলাগুলির অন্যতম একটি মসলা। এটি মূলত পশ্চিম এশিয়ার কিছু অংশে, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এবং দক্ষিণ ইউরোপের উৎপন্ন হয়ে থাকে। মেথির বীজ এবং মেথি গাছের পাতার বিভিন্ন সুস্বাদু গুণাগুণ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও মেথি গাছের বীজ এবং পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মেথি চাষের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং উর্বর জমির প্রয়োজন। কিন্তু যথাযথ যত্নআত্তি নিয়ে যদি করতে পারেন তবে বাড়ির ছাদেও মেথি চাষ করা যায়। মেথি গাছের পাতা বিভিন্ন সবজিতে ব্যবহার করা যায়। অনেকে মেথি গাছের পাতাকে শাক হিসেবেও গ্রহণ করেন। নানা রকম ওষুধ তৈরিতে মেথি গাছের নির্যাস নেওয়া হয়। মেথি গাছের পাতাগুলো রোদে শুকিয়ে নিয়ে এক ধরনের শুকনো পাতা তৈরি করা হয়, এগুলোকে কাসুরি মেথি বলা হয়। বাজারেও কাসুরি মেথি কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু আপনি প্রয়োজনে বাড়িতেও এটি তৈরি করে নিতে পারেন। কাসুরি মেথির বহু গুনাগুন রয়েছে। বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করার পাশাপাশি এগুলোর বহু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। রান্নায় আলাদা স্বাদ যোগ করে এই কাসুরি মেথি। এর পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতেও এর বহু পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাহলে আজকে জেনে নিন কাসুরি মেথির কি কি উপকারিতা রয়েছে, কি কি গুণ রয়েছে, এর পাশাপাশি এর কীরূপ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
কাসুরি মেথির উপকারিতা
বিভিন্ন রান্নায় কাসুরি মেথি ব্যবহার আমরা অনেকেই শুনেছি। রান্নাকে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলাতে এর জুড়ি মেলা ভার। এবার এই শুকনো মেথি পাতা অর্থাৎ কাসুরি মেথির উপকারিতা গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন যে, এই মেথি পাতার কি কি গুণ রয়েছে, তাহলে ভবিষ্যতে এটি ব্যবহার করতে আপনার আরও বেশি সুবিধা হবে। (2)
১) ওজন কম করতে কাসুরি মেথির ভূমিকা
মেথির মধ্যে রয়েছে গ্যালাকটোমান্নান নামক এক ধরনের উপাদান যা আমাদের শরীরের ক্ষিদে কে কম করতে সহায়তা করে। যার ফলে খিদে কম পায় ওজন বৃদ্ধির সমস্যা কম হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই ক্ষুধা ভাব জাগে, যেটাকে আমরা ক্রেভিং বলে থাকি অর্থাৎ এটি প্রয়োজনীয় ক্ষুধা নয়। এক্ষেত্রে দৈনিক যদি রান্নায় কাসুরি মেথি ব্যবহার করা যায় এই ক্ষিদের প্রবণতাটা কম করে। এছাড়াও মেথি পাতার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের হজম ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলতে এবং ফ্যাট কে ক্ষয় করতে সহায়তা করে। মেথি পাতা এক ধরনের ডায়েটারি ফাইবার, এটি হজম হতে সময় লাগে। যার ফলে এই কাসুরি মেথি খেলে পরে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি মনে হয় এবং বারবার খিদে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। মেথি পাতাগুলো কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় এগুলি খাদ্যতালিকায় রাখলে পরে অনেকটা গ্রহণ করলেও অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়া হয়ে ওঠে না। যার ফলে মেথি শাক কিংবা কাসুরি মেথি রান্নায় ব্যবহার করলে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা হয় না।
২) কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাসুরি মেথির ব্যবহার
মেথির পাতা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ এলডিএল এর মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। যার ফলস্বরূপ স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এর মতন হার্ট সম্পর্কিত সমস্যা গুলি কম দেখা দেয়। নিয়মিত যারা কাসুরি মেথি গ্রহণ করেন তাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে, কেননা দৈনিক কাসরি মেথি গ্রহণের ফলে এটি শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে নষ্ট করে দেয়। এছাড়াও যেকোনো শুকনো মসলা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কম করতে এবং রক্তের থেকে ট্রাই গ্লিসারাইড এর মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। (3)
৩) ডায়াবেটিস নিরাময়ে কাসুরি মেথির ভূমিকা
শরীরে ডায়াবেটিস এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্যতম একটি সহায়ক উপাদান হল মেথি। মেথির মধ্যে থাকা ফাইবার এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ শরীরে চিনির মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। দৈনিক যদি ১০ গ্রাম মত শুকনো মেথির পাতা কিংবা মেথির বীজ গ্রহণ করা যায় এক্ষেত্রে টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা রয়েছে। কিংবা যারা ডায়াবেটিস রোগের সমস্যায় ভুগছেন তারা যদি দৈনিক মেথি শাক খাদ্যতালিকায় রাখেন তা শরীরে শর্করার মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। (4)
৪) মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনে মেথির ভূমিকা
সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়েদের শরীরে মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনের জন্য যে প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি প্রয়োজন হয় তার মধ্যে অন্যতম উপাদান হলো মেথি। এটি প্রসূতি নারীদের শরীরে মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। অনেক সময় দেখা যায় প্রসূতি মায়েরা যখন তার সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করান তখন তার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যায়। অনেক সময় এর কারণ হিসেবে মানসিক চাপ, শারীরিক সমস্যা বিভিন্ন কারণ দেখা যায়। এক্ষেত্রে যদি মনে হয় কখনো মাতৃদুগ্ধ যথাযথ তৈরি হচ্ছে না সেক্ষেত্রে এটিকে শরীরের ভেতরে তৈরীর জন্য অন্যতম একটি উপাদান হলো মেথি। প্রসূতি মায়েরা যদি দৈনিক খাদ্য তালিকায় মেথি কিংবা রান্নায় কাসুরি মেথি ব্যবহার করেন এক্ষেত্রে তাঁর মাতৃদুগ্ধের যোগান ভালো মতো সম্পন্ন হবে। (5)
৫) হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় মেথির ভূমিকা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হার্টকে সুস্থ রাখতে অন্যতম একটি উপাদান হলো মেথি। মেথি পাতার মধ্যে রয়েছে ফাইবার জাতীয় উপাদান। যেগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র কে রক্ষা করতে সহায়তা করে। কাসুরি মেথি শরীরে গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হজমে সহায়তা করে। দৈনিক যদি কাসুরি মেথি তরকারিতে কিংবা ডালের মাধ্যমে খাওয়া যায় এক্ষেত্রে টাইপ টু ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা যেমন কমে তার পাশাপাশি হার্টের সমস্যা থেকেও দূরে থাকা যায়।(6)
৬) অন্ত্রের সমস্যার সমাধানে কাসুরি মেথির ভূমিকা
দৈনিক যদি খাদ্যতালিকায় কাসুরি মেথি রাখা যায় এটি অন্ত্রের যেকোন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে হজমের সমস্যা, কোষ্টকাঠিন্য কিংবা ডায়েরিয়ার মতন সমস্যা যদি দেখা যায় এক্ষেত্রে এর একমাত্র আয়ুর্বেদিক উপাদান হলো মেথি। মেথি পাতা দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখলে পরে এটি আমাদের হজম ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলবে, যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের সেই সমস্যাকে নিরাময় করবে কিংবা যথাযথভাবে খাবার হজম না হওয়ার ফলে যাদের ডায়েরিয়ার সমস্যা রয়েছে সেই সমস্যা থেকেও মুক্তি দেবে। তাই অন্ত্রের যেকোন সমস্যার সমাধানে খাদ্যতালিকায় কাসুরি মেথি ব্যবহার করুন।
৭) রক্তাল্পতা নিরাময়ে কাসুরি মেথির ব্যবহার
মেথি গাছের পাতা হল আয়রনের উৎকৃষ্ট উৎস। মূলত শরীরে আয়রনের অভাবে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যদি খাদ্যতালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাদ্য রাখা যায় এগুলি রক্তাল্পতা নিরাময়ে সহায়তা করে। শরীরে যথাযথ আয়রন গ্রহণ করলে সেগুলি আমাদের রক্ত তৈরি করতে এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। তাই যে সমস্ত রোগীরা রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছেন তারা দৈনিক খাদ্য তালিকায় শুকনো মেথি পাতা অর্থাৎ কাসুরি মেথি, মেথি শাক খাদ্যতালিকায় রাখুন। এক্ষেত্রে তাহলে রক্তাল্পতা থেকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবেন।
৮) ত্বক সুন্দর রাখতে কাসুরি মেথির ভূমিকা
কাসুরি মেথি স্বাদে তিতা প্রকৃতির হলেও এটির ব্যবহার খুব সুন্দর। আমাদের ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রেও কাসুরি মেথির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। মূলত ত্বক থেকে যেকোন দাগ ছোপ, বার্ধক্যজনিত দাগ ছোপ, চামড়া কুচকে যাওয়া এই সমস্যাগুলি সমাধানে কাসুরি মেথি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও ত্বকের রোদে পোড়া ভাব কমাতেও এটি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে মেথি গাছের শুকনো পাতার সাথে কয়েক ফোঁটা জল মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে যদি ত্বকের দাগ যুক্ত জায়গায় লাগানো যায় এটি খুব তাড়াতাড়ি ত্বকের দাগ ছোপ করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও দৈনিক খাদ্য তালিকায় যদি মেথি রাখা যায় সেটি ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে। (7)
৯) চুল পরিচর্যায় কাসুরি মেথির ব্যবহার
চুল পরিচর্যার ক্ষেত্রে একটি অসম্ভব ভাল উপাদান হলো মেথি। মেথি গাছের বীজ, পাতা সবকটি উপাদানই আমাদের চুল পরিচর্যার ক্ষেত্রে ভীষণ ভালো ভাবে কাজ করে। প্রাচীন যুগে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে চুল পরিচর্যার বিভিন্ন উপাদান তৈরির সময় এটি ব্যবহার করা হতো। মেথির মধ্যে থাকা উপাদানগুলো মাথার চুলের নিষ্প্রান ভাব সরিয়ে চুলকে উজ্জ্বল করতে, ভেতর থেকে শক্তিশালী করতে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে মেথি গাছের শুকনো পাতা গুলো জল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলের গোড়ায় যদি লাগানো যায় তাহলে মাথা থেকে খুশকির সমস্যা কম করার পাশাপাশি নতুন চুল গজাবে এবং চুল আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। যদি সপ্তাহে দু’দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করা যায় তাহলে এটি চুলকে ভালো রাখতে সহায়তা করবে। (8)
কিভাবে কাসুরি মেথি ব্যবহার করা যায়?
কাসুরি মেথি মূলত রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১) বিভিন্ন তরিতরকারি, শাকসবজি রান্না করার সময় এগুলো তরকারিতে মসলা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
২) এটি দিনের যেকোনো সময়ে খাওয়া যেতে পারে।
৩) এ ছাড়াও এটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কোন পরিমান নেই। রান্নায় যতটুকু পরিমাণ প্রয়োজন হয় কসুরি মেথি স্বাদের জন্য ততটুকু ব্যবহার করে খাওয়া যেতে পারে।
৪) কসুরি মেথি তরকারিতে ব্যবহার করার পাশাপাশি রুটি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
৫) আলু, গাজর দিয়ে তৈরি সবজির ক্ষেত্রে গ্রেভি বানানোর জন্য কিংবা তরকারিতে স্বাদ আনার জন্য কসুরি মেথি ব্যবহার করা যেতে পারে।
কাসুরি মেথি কেবল মাত্র খাবারের স্বাদই যোগ করে না এর পাশাপাশি এর পুষ্টিগুণ ও রয়েছে প্রচুর। তাই কাসুরি মেথি দৈনিক খাদ্য তালিকায় আজ থেকেই সংযোগ করুন।
কাসুরি মেথির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
কাসুরি মেথির যেমন বহু স্বাস্থ্য গুণ রয়েছে তেমনি এটি যদি মাত্রাতিরিক্ত হারে গ্রহণ করা হতে থাকে সেক্ষেত্রে এর বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেগুলো আমাদের শরীরকে খারাপ করে তোলে। জেনে নিন অতিরিক্ত কাসুরি মেথি ব্যবহার করার ফলে আমাদের কি কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
১) খাদ্যতালিকায় কাসুরি মেথি রাখার ফলে অনেকেরই শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গায়ে লাল লাল ছোট ছোট এলার্জি কিংবা গলার ভেতর এলার্জি দেখা দিতে পারে।
২) যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে অত্যধিক কাসুরি মেথি গ্রহণ করার ফলে তাদের হাঁপানির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩) রান্নায় বেশি পরিমাণে কাসুরি মেথি ব্যবহার করার ফলে হজমে সমস্যা এবং ডায়েরিয়া দেখা দিতে পারে। যা মারাত্মক আকার গ্রহণ করতে পারে। তাই অতিরিক্ত গ্রহণের আগে সচেতন হন।
৪) কাসুরি মেথি দৈনিক ব্যবহারের ফলে পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫) অতিরিক্ত কাসুরি মেথি গ্রহণের ফলে রক্তে নিম্ন শর্করা অর্থাৎ হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৬) শিশুদের ক্ষেত্রে কাসুরি মেথি গ্রহণের ফলে চেতনা হ্রাস, পেট খারাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭) খাদ্যতালিকায় কাসুরি মেথি রাখার ফলে শরীরে অস্বাভাবিক গন্ধ দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার পাশাপাশি এই গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে।
৮) গর্ভবতী মহিলারা কাসুরি মেথি গ্রহণ করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে কাসুরি মেথি খাওয়া বন্ধ করুন এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
আমাদের রান্নাঘরে নিয়মিত ব্যবহৃত কাসুরি মেথির বিভিন্ন গুনাগুন, স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলি সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নিলাম। এগুলি আমাদের শরীরের পক্ষে কি কি ভালো প্রভাব ফেলে, কি কি খারাপ প্রভাব ফেলে এগুলি সম্পর্কিত আলোচনা করা গেল। এমনিতেই মেথির ব্যবহার আমাদের রান্নার ক্ষেত্রে সর্বত্রই। এর পাশাপাশি কাসুরি মেথির ব্যবহারও রান্নার স্বাদ আনতে জুড়ি মেলা ভার। তাই আজ থেকেই রান্নায় পরিমাণমতো কাসুরি মেথি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এটি আপনার রান্না কে আরো সুস্বাদু করে তোলার পাশাপাশি আরও বেশি স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। কেননা যেকোনো শুকনো মশলাপাতি আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ভালো। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে দৈনিক খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন মসলা রাখার চেষ্টা করুন।। খাদ্যতালিকায় কাসুরি মেথি রাখার ফলে আপনার কি কি উপকার হয়েছে সেগুলো আমাদের জানাতে ভুলবেন না। ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
য়শঃ জিজ্ঞাস্য :
কাসুরি মেথি কি আপনার জন্য ভালো?
উত্তরঃ কাসুরি মেথির প্রচুর স্বাস্থ্য গুনাগুন রয়েছে। তাই দৈনিক পরিমিত পরিমাণে এটি খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে।
কাসুরি মেথি কতদিন রাখা যায়?
উত্তরঃ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে কাসুরি মেথি বহুদিন রাখা যায়।
আমি কি কাসুরি মেথির বদলে গোটা মেথি ব্যবহার করতে পারি?
উত্তরঃ কাসুরি মেথিতে যা গুনাগুন রয়েছে, মেথির বীজেও সেই গুণাগুণ রয়েছে। তবে বীজের তুলনায় পাতার ব্যবহার সহজ। তাই কাসুরি মেথি ব্যবহার করা বেশি ভালো।
কাসুরি মেথির স্বাদ কেমন?
উত্তরঃ কাসুরি মেথির স্বাদও মেথির মত তিতা প্রকৃতির।
কারিপাতা আর মেথি পাতা কি একই?
উত্তরঃ কারি পাতা এবং মেথি পাতা দুটি আলাদা উপাদান।
8 Sources

Latest posts by StyleCraze (see all)
- কৃমির সংক্রমণ চিকিৎসার ঘরোয়া প্রতিকার | Pinworms Home Remedies in Bengali - February 28, 2021
- কুষ্ঠ রোগের কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা – Leprosy Causes, Symptoms and Treatment in Bengali - February 26, 2021
- সামুদ্রিক লবণের উপকারীতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Sea Salt Benefits and Side Effects - February 26, 2021
- তেজপাতা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য | All About Bay Leaf (Tej Patta) in Bengali - February 26, 2021
- ভিটামিন ডি-3 এর উপকারিতা, এর ঘাটতির কারণ এবং লক্ষণ | Vitamin D3 Benefits in Bengali - February 26, 2021
