পেঁয়াজের এত উপকার জানলে অবাক হবেন- Onion Benefits, Uses and Side Effects in Bengali

পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কেঁদে কেটে একসা! এমন অবস্থা আমাদের প্রায়ই হয়ে থাকে। কিন্তু পেঁয়াজের যেমন ঝাঁজ, তেমনই এর কাজ। আমাদের রোজকার খাবারে ব্যবহৃত সামান্য একটি পেঁয়াজের মধ্যে এমন সব গুণ রয়েছে, যা জানলে আপনি হয়ত অবাক হবেন। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের মধ্যে বেশকিছু উপাদান রয়েছে যা নানান শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় দারুণভাবে কার্যকরী। আমাদের এই প্রতিবেদনে পেঁয়াজের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল। সেইসঙ্গে এর ব্যবহার এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নানান খুঁটিনাটি তথ্য তুলে ধরা হল।
পেঁয়াজ কী ?
পেঁয়াজ সাধারণভাবে সবজি হিসেবে বিবেচিত। এর ব্যবহার কেবলমাত্র এদেশেই নয়, সারা বিশ্বে নানা খাবার তৈরিতে হয়ে থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম এলিয়াম সেপা (Allium Cepa)। এদেশে পেঁয়াজ বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। এটি রান্নায় যেমন স্বাদ বাড়ায় তেমন কাঁচা পেঁয়াজ স্যালাড এবং অন্যান্যভাবেও খাওয়া হয়ে থাকে।
In This Article
পেঁয়াজের বিভিন্ন প্রকার
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রকারের পেঁয়াজ পাওয়া যায়। তার মধ্যে কিছু ধরণের পেঁয়াজ সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হল –
- হলুদ পেঁয়াজ : পেঁয়াজের ভিতরটা আইভরি সাদা রঙের হয়, তবে এর বাইরের স্তরটি বাদামী রঙের। এর গন্ধ খুব গাঢ় এবং সালফারের মতো।
- মিষ্টি পেঁয়াজ : এর খোসা খুব হালকা আঁশের মতো এবং এই পেঁয়াজ মিষ্টি স্বাদের।
- সাদা পেঁয়াজ : বাইরে থেকে এই পেঁয়াজ সাদা রঙের এবং অন্যান্য পেঁয়াজের থেকে মিষ্টি হয়।
- লাল পেঁয়াজ : এই পেঁয়াজ হালকা মিষ্টি এবং কাঁচা খাওয়া হয়ে থাকে। এর বাইরের স্তর গাঢ় ম্যাজেন্ডা রঙের।
- স্যালোটস : ছোটো আকারের এই পেঁয়াজ ব্রাউন রঙের এবং ভিতরের স্তর পার্পল রঙের।
- সবুজ পেঁয়াজ : পেঁয়াজ পুরোপুরি বিকশিত হয় না। পেঁয়াজের সবুজ পাতা রান্না, স্যালাড সহ একাধিক পদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
পেঁয়াজ কী স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?
পেঁয়াজ বিভিন্ন দিক থেকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আপনি চাইলে কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারেন আবার রান্না করেও খেতে পারেন। এটি ফোলেট, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি ও বি ৬-এর অন্যতম উৎস। এছাড়াও এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, যা আপনাকে সর্দি, ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করতে পারে।
এতে অ্যালিয়াম এবং অ্যালিল ডিসফ্লাইডের মতো প্রয়োজনীয় ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে যা অ্যালিসিনে রূপান্তরিত হয়। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে অ্যালিসিন নামক উপাদান ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম (1)। পেঁয়াজ শিরার ফোলাভাব, ব্যথা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
পেঁয়াজের মধ্যে কোয়ার্সেটিন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে (2)। এই উপাদানের কারণে পেঁয়াজ শরীরের জ্বালা, ব্যথা কম করতে পারে। পেঁয়াজের তেলও খুব উপকারী। এর তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে (3)। অবশ্যই পেঁয়াজ উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর। তবে এটি কোনও গুরুতর রোগ নিরাময় করতে পারে না। এটি কেবলমাত্র কিছু শারীরিক সমস্যার লক্ষণগুলি কমায় এবং সাময়িক আরাম দিতে পারে।
কাঁচা না রান্না করা – কীভাবে পেঁয়াজ খাওয়া ভালো?
পেঁয়াজ কাঁচা না রান্না করে খাবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার উপর। কাঁচা পেঁয়াজ যদি খান তাহলে বলি, এতে প্রচুর পরিমাণে জৈব সালফার রয়েছে, যার অনেক উপকারিতা রয়েছে। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের বাইরের স্তরে অনেক বেশি ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই পেঁয়াজ কাটার সময় যতটা সম্ভব এই স্তরটি কম বাদ দিন। এটি অনেক ক্ষেত্রে আপনার জন্য উপকারী (4)।
অন্যদিকে রান্না করা পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুর ফাইবার এবং কপার পাওয়া যায়। ফাইবার হজমে সাহায্য করে, কপার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য উপকারী। তাই পেঁয়াজ কাঁচা বা রান্না করা যে কোনওভাবেই খেতে পারেন।
পেঁয়াজের স্বাস্থ্য উপকারিতা
- ডায়াবেটিস : ইঁদুরের উপর করা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, যে পেঁয়াজের রস রক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পরীক্ষা অনুযায়ী, পেঁয়াজে ক্রোমিয়াম রয়েছে যার কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এতে সালফার, কোরেসেটিন এবং অ্যান্টিডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্ত শর্করার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে (5)। তাই ডায়াবেটিসের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পেঁয়াজের রস খাওয়া যেতে পারে। যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ওষুধের সাথে পেঁয়াজের রস খাবেন কিনা সেবিষয়ে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
- ক্যান্সার : বিজ্ঞানীদের মতে, পেঁয়াজের মধ্যে স্তন এবং পেটের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কোষগুলি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। পেঁয়াজে কোরেসেটিন এবং অ্যান্থোসায়ানিন বেশি থাকে। কোরেসেটিন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো কাজ করে (2)। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরে ফ্রি রেডিক্যালস তৈরি রোধ করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কম করে। পেঁয়াজ শরীরে ক্যান্সার রোধ করে। পেঁয়াজ খেলে মুখের ক্যান্সারও এড়ানো যায় (6)। নানা গবেষণায় দেখা গেছে যারা বেশি পেঁয়াজ খান তাদের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কম। তবে ক্যান্সার মারাত্মক একটি রোগ। তাই যদি কেউ এই রোগে আক্রান্ত হন তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যান, সঠিক চিকিৎসা করান।
- পাচন তন্ত্র : পেঁয়াজের অন্যতম ঔষধি গুণ হল এটি পাচনতন্ত্রের কাজ উন্নত করে। পেঁয়াজের মধ্যে বেশি ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকলে পাচনতন্ত্র ভালোভাবে কাজ করবে। পেঁয়াজে উপস্থিত ফাইবারকে অলিগোফ্রুক্টোস বলা হয় (7)। এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যাতে অন্ত্রটি ভালোভাবে কাজ করতে পারে। শুধু তাই নয়, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাতেও অলিগোফ্রুক্টোস উপকারী হতে পারে।
পেঁয়াজে উপস্থিত পাইথোকেমিক্যালগুলি গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে (8)। এছাড়াও এটি পেট ব্যথা, পেটে কৃমির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তবে এই নিয়ে আরও গবেষণা দরকার।
- হার্টের সুস্বাস্থ্য : পেঁয়াজে উপস্থিত কোরেসটিন বৈশিষ্ট্য হার্টের জন্য উপকারী। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা হার্টের কার্যকারিতা আরও ভালো করে তুলতে পারে. পেঁয়াজ কোলেস্টেরলের মাত্রারও ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে যা হার্টের সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, পেঁয়াজে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে যা স্থূল ব্যক্তির মধ্য খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতে পারে (9)।
পেঁয়াজ রক্তে প্লেটলেটগুলির একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিরোধ করতে পারে, যাতে রক্ত জমাট না বাঁধে। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটা কম হয়। এছাড়া পেঁয়াজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা হার্টের জন্য একেবারেই ভালো নয়।
- হাড়ের মজবুতি : গবেষণা অনুযায়ী, পেঁয়াজ বয়সজনিত কারণে হওয়া অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কম করতে পারে। একইসঙ্গে অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, যে মহিলারা প্রতিদিন পেঁয়াজ খান, তাদের হাড় যে মহিলারা পেঁয়াজ খান না তাদের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেশি শক্তিশালী (10)। সেইসঙ্গে ৫০ বছরের বেশি বয়সের মহিলারা পেঁয়াজ খেলে তাদের হাড়ের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আর্থারাইটিস ফাউন্ডেশনের মতে, পেঁয়াজে উপস্থিত কোরেসেটিন এতো কার্যকরী যে এটি লিউকোট্রিন, প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনস এবং হিস্টামিনের প্রভাবকে কম করতে পারে। এইসব অস্টিওআর্থারাইটিস এবং রিইম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসে প্রদাহ সৃষ্টি করে (11)। এছাড়া পেঁয়াজ খেলে জয়েন্টের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
- জ্বালা এবং অ্যালার্জি থেকে মুক্তি : ইতিমধ্যে আপনি জেনে গেছেন, পেঁয়াজ কোরেসেটিন সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কম করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোরোসেটিনের মধ্যে অ্যান্টিহিস্টামাইন নামক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনাকে অ্যালার্জির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। অনেকের বিশ্বাস, খাবারে পেঁয়াজের ব্যবহার সাইনাসের সমস্যা অনেকখানি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে (12)। আপনি যদি রাতে কাঁচা পেঁয়াজ খান, তবে এতে উপস্থিত সালফার নামক যৌগটি শ্লেষ্মা বের করতে সাহায্য করতে পারে।
পেঁয়াজের মধ্যে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর রস খেলে দাঁত নষ্ট হওয়া এবং অ্যালার্জির পিছনে দায়ী স্ট্রেপ্টোকোকাস মিটানস এবং স্ট্রেপ্টোকোকাস সোব্রিনাস ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাব কম করা যেতে পারে (13)।
- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা : রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি-এর প্রয়োজন এবং পেঁয়াজে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যালস দেহে ভিটামিন সি বাড়াতে কাজ করে। পেঁয়াজের মধযেও সেলেনিয়াম থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেঁয়াজ খাওয়ার ফলে শরীরে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ বেড়ে যায়। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে উপস্থিত ফ্রি রেডিকেলগুলি নির্মূল করে এবং টক্সিনগুলি পরিষ্কার করে (14)।
- মুখের সুস্বাস্থ্য : কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার পর মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আপনি হয়ত জানলে অবাক হবে যে কাঁচা পেঁয়াজ মুখের স্বাস্থ্য়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে থিওসালফ্রেটস এবং থিওসালফোনেটস নামে দুটি সালফার যৌগ রয়েছে, যা দাঁতে পচে যাওয়া ব্যাক্টেরিয়া দূর করতে পারে। পেঁয়াজে ভিটামিন সি রয়েছে, যা দাঁত সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। কেবল তাই নয়, পেঁয়াজ মুখের ক্যান্সারের বৃদ্ধি রোধ করতেও সাহায্য করতে পারে (15)।
- কানের ব্যথায় আরামদায়ক : অনেকের বিশ্বাস পেঁয়াজ কানের ব্যথা কম করতে পারে। এর জন্য পেঁয়াজ গরম করে রস বের করা হয় এবং যে কানে ব্যথা সেখানে ঢেলে দেওয়া হয়। এমন আরও অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেখানে পেঁয়াজ ব্যবহার করে কানের ব্যথা নিরাময় করা যায়।
- দ্রষ্টব্য : এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি এবং কানের ব্যথার জন্য পেঁয়াজ উপকারী তা স্পষ্ট করে বলা শক্ত (16)। তাই এর ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন।
- চোখের সুস্বাস্থ্য : পেঁয়াজ ও চোখের সম্পর্ক খুবই অদ্ভূত। পেঁয়াজ কাটলে চোখ থেকে জল বের হয় ঠিকই তবে পেঁয়াজ খেলে দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ হয়। পেঁয়াজ খাওয়ার ফলে শরীরে গ্লুটাথিয়ন তৈরি হয় যা এক ধরণের প্রোটিন। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। গ্লুটাথিয়ন ছানি এবং চোখের অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে (17) (18)। পেঁয়াজের মধ্যে সেলিনিয়াম রয়েছে, যার কারণে শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন ই পায় এবং চোখের জন্য ভিটামিন ই প্রয়োজনীয়। সুতরাং এটি বলা যেতে পারে যে পেঁয়াজ খাওয়ার অন্যতম উপকারিতা হল এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
- যৌনক্ষমতা বাড়ায় : পেঁয়াজ কেবলমাত্র সবজি নয়, এটি একটি আয়ুর্বেদক ওষুধ। যৌন ক্ষমতা বাড়াতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকের বিশ্বাস, পেঁয়াজের রস খেলে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এই নিয়ে বৈজ্ঞানিকরা গবেষণাও করেছেন। এনসিবিআই (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজিক ইনফরমেশন) সাইটে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, যে পেঁয়াজ বা পেঁয়াজের নির্যাস ব্যবহার পুরু।দের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রাকে উন্নত করতে পারে। পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতার জন্য এই হরমোনটি ভারসামন্যপূরণ হওয়ার প্রয়োজন (19)।
- সর্দি ও কাশি : সর্দি, জ্বর হলে পেঁয়াজ ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ব্যবহারের ফলে জ্বর থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। আজও অনেকে জ্বর, কাশি হলে পেঁয়াজ ব্যবহার করেন (20) (21) (22)। শুধু তাই নয়, কিছু মানুষের নাক থেকে রক্তক্ষরণের সমস্যা রয়েছে, পেঁয়াজের ধোঁয়া তাদের জন্য উপকারী হতে পারে। একইভাবে মধু ও পেঁয়াজের রস মিশিয়ে খেলে কাশির সমস্যায় উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
- মোনোপজের সমস্যা : মোনোপজের সময় মহিলাদের নানা শারীরিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে পেঁয়াজ বেশ উপকারী। এইসময় মহিলাদের হাড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে পেঁয়াজের রস খেলে হাড়েন ঘনত্ব বাড়ে। এনসিবিআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, যে পেঁয়াজের রস মোনোপজে উপকারী (21)।
- শ্বাসনালীর সুস্বাস্থ্য : যদি কেউ হাপানির মতো শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন তাহলে পেঁয়াজ খান। এটি একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরির মতো কাজ করে। এতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে, যা হাঁপানি এবং অ্যালার্জি রাইনাইটিসের মতো সমস্যার জন্য ভালো। তাই পেঁয়াজ প্রতিদিনের খাবারে রাখতে পারেন। সবজি বানিয়ে অথবা কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারেন। এটি সবদিক থেকে উপকারী (22) (23)।
- ভালো ঘুম হয় : এই প্রতিবেদনে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, পেঁয়াজের মধ্যে প্রোবায়োটিক রয়েছে, যা ভালো ঘুমাতে এবং ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ খেলে অন্ত্রে ভালো ব্যাক্টেরিয়া জন্মায় য়া হজমে সাহায্য করে, পেট ভালো রাখে। এই উপাদানগুলি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা উন্নত করে এবং ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করে (24)।
- রক্ত জমাট বাধেঁ না : পেঁয়াজের মধ্যে রুটিন নামে একটি উপাদান রয়েছে যা শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে রুটিন অ্যান্টিথ্রোমোটিক হিসেবে কাজ করে, রক্তে জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায়। এই রক্ত জমাট ধমনী এবং শিরাগুলিতে হতে পারে। ক্লট তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এনজাইম গঠিত হয় এবং রুটিন এই এনজাইমগুলিকে বাধা দিতে সাহায্য করে (25)।
- কলেরিয়ার চিকিৎসা : গবেষণায় দেখা গেছে পেঁয়াজের মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কিছুটা হলেও কলেরা নিরাময়ে সক্ষম। এতে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই কলেরার ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে পেঁয়াজ ব্যবহার করা যেতে পারে (26)।
- মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ পেঁয়াজ মস্তিষ্কের জন্য ভালো। এটি মস্তিষ্কে বিষাক্ত পদার্থ জমতে দেয় না। এতে সালফারও রয়েছে যা উন্নত স্মৃতিশক্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করে (27)। গবেষকদের মতে, পেঁয়াজের এই সুবিধা পেতে চাইলে কাঁচা না খেয়ে রান্না করা পেঁয়াজ খান।
- অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় : গবেষণা অনুযায়ী, পেঁয়াজের রস অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে পারে। সেইসঙ্গে পেঁয়াজে উপস্থিত কোরেসেটিন বৈশিষ্ট্যগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের প্রভাব কম করতে পারে (28) (29)।
- কিডনি স্টোন : যদি কিডনি স্টোনের কারণে ভুগছেন তাহলে পেঁয়াজ উপকার দিতে পারে। এটি আয়ুর্বেদিক ওষুধের মতো কাজ করে। পেঁয়াজ কেবল কিডনি থেকে পাথর সরিয়ে দেয় না, পেটও পরিষ্কার রাখে। কিডনি স্টোন বের করতে পেঁয়াজের রসে চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেকটাই উপকার পাবেন।
- ত্বকের সুস্বাস্থ্য : উজ্জ্বল, ঝলমলে ত্বকের জন্য ভিটামিন এ, সি এবং ই প্রয়োজন। আর এই সমস্ত উপাদান রয়েছে পেঁয়াজের মধ্যে। পেঁয়াজ অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। ত্বককে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পেঁয়াজ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন। কীভাবে ফ্যাসপ্যাক তৈরি করবেন –
সামগ্রী :
- দুই চামচ বেসন
- দের চামচ পেঁয়াজের রস
- অর্ধেক চামচ দুধ
- সামান্য জায়ফল
কীভাবে ব্যবহার করবেন :
- সমস্ত উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি বেশি ঘন হলে তাতে সামান্য দুধ মেশাতে পারেন।
- তারপর মিশ্রণটি মুখ ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।
- ফেসপ্যাক শুকিয়ে গেলে, হাতে সামান্য দুধ নিয়ে ভালো করে ত্বক ম্যাসাজ করে নিন।
- এই ফেসপ্যাক কেবল ত্বক উজ্জ্বল করবে না এক্সফোলিয়েটও হবে।
নোট : ফেসপ্যাকে পেঁয়াজের গন্ধ খুব বেশি হলে তাতে ল্যাভেন্ডার অয়েল মেশাতে পারেন।
আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে, পেঁয়াজের মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই সমস্ত উপাদান ত্বকের জন্য উপকারী। এটি ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, পিম্পলস রোধ করে। ডার্ক সার্কেল, বলিরেখা দূর করে, ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে দেয় না। এছাড়াও পোকামাকড়ে কামড়ালে ত্বকের উপর সামান্য পেঁয়াজের টুকরো ঘষে নিন, জ্বালা, যন্ত্রণা, ফোলাভাব দূর হবে।
- চুলের সুস্বাস্থ্য : পেঁয়াজের মধ্যে সালফার এবং কেরাটিন জাতীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা চুলের জন্য প্রয়োজনীয়। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় লাগালে চুল লম্বা, ঘন এবং শক্ত হতে পারে। কিছু গবেষণায় এও দেখা গেছে পেঁয়াজের রস দিয়ে চুল ধুলে চুলের সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে। এছাড়াও খুশকির সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। এটি খুশকি সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াকে মেরে ফেলে। এক্ষেত্রে পেঁয়াজের প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন। চুলের অরিজিনাল রঙ ধরে রাখতে সাহায্য করে। অকাল পক্যতা রোধ করে।
- ব্যবহার বিধি : পেঁয়াজের রস চুল ও স্কাল্পে ভালো করে মালিশ করুন। ২০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন।
- ইউটিআই (UTI) থেকে মুক্তি : অনেক মহিলা মূত্রনালীর সংক্রমণে (Urinary Tract Infection) ভোগেন। এইরকম পরিস্থিতিতে মূত্রনালীতে প্রচণ্ড জ্বালা হয়। অবস্থার আরও খারাপ হলে জ্বালা, যন্ত্রণার সঙ্গে জ্বরও আসে। এক্ষেত্রে পেঁয়াজ খাওয়া উপকারী হতে পারে। এতে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সংক্রমণের কারণ হিসেবে দায়ী ব্যাক্টেরিয়া নির্মূল করতে পারে (28) (29)। ১০০ গ্রাম পেঁয়াজ ৬০ গ্রাম জলে ফোটান, যতক্ষণ না জল অর্ধেক হয়ে যায়। তারপর সেই জল খান। এই ঘরোয়া উপায়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ইউটিআই এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পেঁয়াজের পুষ্টিগত মান
উপাদান | মান | আরডিএ শতাংশ |
---|---|---|
এনার্জি | ৪০ ক্যালোরি | ২% |
কার্বোহাইড্রেট | ৯.৩৪ গ্রাম | ৭% |
প্রোটিন | ১.১০ গ্রাম | ২% |
টোটাল ফ্যাট | ০.১০ গ্রাম | ০.৫% |
কোলেস্টেরল | ০ মাইক্রোগ্রাম | ০% |
ডায়েটারি ফাইবার | ১.৭ গ্রাম | ৪.৫% |
ভিটামিন | ||
ফোলেটস | ১৯ µg | ৫% |
নিয়াসিন | ০.১১৬ মাইক্রোগ্রাম | ১% |
প্যান্থেটিক অ্যাসিড | ০.১২৩ মাইক্রোগ্রাম | ২.৫% |
পাইরোক্সাইড | ০.১২০ মাইক্রোগ্রাম | ৯% |
রাইবোফ্ল্যাভিন | ০.০২৭ মাইক্রোগ্রাম | ২% |
থায়ামিন | ০.০৪৬ মাইক্রোগ্রাম | ৪% |
ভিটামিন এ | ২IU | ০% |
ভিটামিন সি | ৭.৪ মাইক্রোগ্রাম | ১২% |
ভিটামিন ই | ০.০২মাইক্রোগ্রাম | ০% |
ইলেক্ট্রোলাইটস | ||
সোডিয়াম | ৪ মাইক্রোগ্রাম | ০% |
পটাসিয়াম | ১৪৬ মাইক্রোগ্রাম | ৩% |
মিনারেল | ||
ক্যালসিয়াম | ২৩ মাইক্রোগ্রাম | ২% |
কপার | ০.০৩৯ মাইক্রোগ্রাম | ৪% |
আয়রন | ০.০২১ মাইক্রোগ্রাম | ৩% |
ম্যাগনেসিয়াম | ১০ মাইক্রোগ্রাম | ২.৫% |
ম্যাঙ্গানিজ | ০.১২৯ মাইক্রোগ্রাম | ৫.৫% |
ফসফরাস | ২৯ মাইক্রোগ্রাম | ৪% |
জিঙ্ক | ০.১৭ মাইক্রোগ্রাম | ১.৫% |
ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট | ||
ক্যারোটিন – বিটা | ১ µg | – |
ক্রিপ্টোক্সানথাইন – বিটা | ০ µg | – |
লুটেইন-জ্যানথাইন | ৪ µg | – |
পেঁয়াজের ব্যবহার
পেঁয়াজ বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে। সে আপনি কাঁচা খান বা রান্না করে। সাধারণ বাঙালির রান্নাঘরে এর নিয়মিত ব্যবহার চলে। সে পান্তা ভাতে কাঁচা পেঁয়াজ হোক বা পেঁয়াজ কুচো দিয়ে মুসুর ডাল ফোঁড়ন। এর বাইরেও নানাভাবে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন :
- যদি আপনি ইটালিয়ান স্যালাড খেতে পছন্দ করেন তাহলে তাতে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন। টম্যাটো এবং মোজিরেলা চিজের সঙ্গে পেঁয়াজ মিশিয়ে স্যালাড তৈরি করে খেতে পারেন।
- পেঁয়াজ ছোটো ছোটো টুকরো করে কেটে পাস্তা বা স্যুপে দিতে পারেন। তাতে পাস্তা ও স্যুপ খেতে আরও সুস্বাদু হবে।
- সামান্য জিরে এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাত কড়াইতে নেড়ে খেতে পারেন। সাধারণ ভাতই তখন আরও সুস্বাদু হয়ে উঠবে।
- যে কোনও তরকারি বা ডাল তৈরির সময় কড়াইতে পেঁয়াজ ফোঁড়ন দিতে তার স্বাদই বদলে যায়।
- অনেকে টম্যাটো এবং পেঁয়াজের কারিও খুব পছন্দ করেন।
কীভাবে পেঁয়াজ বাছবেন এবং দীর্ঘদিন সংকরক্ষণ করবেন
পেঁয়াজ কেনার সময় এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন :
- পেঁয়াজের আকার যেন ঠিক হয় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়, কাটা পেঁয়াজ বাদ দিন।
- পেঁয়াজের ভিতর শক্ত কাঠির মতো যেন না থাকে।
- পেঁয়াজের খোসা যেন পরিষ্কার এবং ঝকঝকে হয়।
- পেঁয়াজে কোথাও কোনও দাগ বা পচা হলে সেগুলি বাদ দিন।
- কিছু পেঁয়াজে সবুজ গাছ বেরিয়া থাকে। কেনার সময় সেগুলি বাদ দিয়ে কিনুন।
পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার উপায় :
- পেঁয়াজ ঠান্ডা, শুকনো জায়গায় রাখুন।
- পেঁয়াজ কখনও ফ্রিজে রাখবেন না, তাতে পেঁয়াজ নরম হয়ে যেতে পারে।
- বাড়তি কাটা পেঁয়াজ ভালো করে প্লাস্টিকে ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন।
- নিয়মিত পেঁয়াজ বাছা দরকার। কোনও পেঁয়াজ পচে গেলে তাড়াতাড়ি সেটিকে সরিয়ে দিন। নয়তো অন্য পেঁয়াজে পচন ধরতে পারে।
পেঁয়াজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- গাঢ় গন্ধ : কাঁচা পেঁয়াজ খেলে মুখ থেকে খুব গাঢ় গন্ধ বের হয়। অনেকে সেটা পছন্দ করেন না। পেঁয়াজে উপস্থিত সালফারের কারণে এই গন্ধ হয়।
- কম রক্ত শর্করা : এটি রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটা কমিয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত পেঁয়াজ খাওয়ার আগে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করুন।
- ত্বকে র্যাশ : পেঁয়াজের রস লাগানোর কারণে অনেকের ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং র্যাশ দেখা দেয়। তাই ত্বকে লাগানোর আগে একবার পরীক্ষা করে দেখে নিন।
- গ্যাস : অতিরিক্ত পেঁয়াজ খাওয়ার কারণে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। পেটে জ্বালা, বমি এবং মাথা ঘোরাতে পারে।
- গর্ভাবস্থা : গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কম পেঁয়াজ খাওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত পেঁয়াজ খেলে হার্ট বার্নের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- লিথিয়াম : পেঁয়াজ খেলে শরীরে লিথিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই ডিপ্রেশনে লিথিয়ামের ওষুধ খাওয়ার সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবে পেঁয়াজ খান।
- রক্তচাপ : পেঁয়াজ খাওয়ার কারণে সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপের স্তর কম হতে পারে। সুতরাং রক্তচাপের রোগীদের পেঁয়াজ না খাওয়াই ভালো, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
পেঁয়াজ প্রায় আমাদের সকলের ঘরেই মজুত থাকে। ইচ্ছেমতো খাবারে পেঁয়াজ দিয়ে নানা পদ তৈরি করেন। তবে পেঁয়াজের যে কত গুণ তা নিশ্চয় এবার জেনে গেলেন। পাশাপাশি যারা অতিরিক্ত পেঁয়াজ খান তারাও জেনে গেলেন এর খারাপ দিকগুলো। তাহলে নিশ্চয় এবার পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করবেন। তাতে পেঁয়াজের উপকারিতাগুলি পেতে পারবেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
কাঁচা পেঁয়াজ এবং রসুন একসঙ্গে খাওয়া কী নিরাপদ?
হ্যাঁ, আপনি যদি এই দুটি একসঙ্গে খেতে পারেন তাহলে খেতে পারেন।
কাঁচা পেঁয়াজের তুলনায় কী রান্না করা পেঁয়াজ বেশি পুষ্টিকর?
কাঁচা হোক রান্না করা, পেঁয়াজের স্বাস্থ্যগুণ অনেক। তবে সীমিত মাত্রায় ব্যবহার জরুরি।
পেঁয়াজ জলের উপকারিতা কী?
পেঁয়াজের জল নয়, পেঁয়াজের রস হয়। যা পাচন তন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। সেইসঙ্গে এটি ত্বক এবং চুলের জন্যও উপকারী।
পেঁয়াজের খোঁসায় কোনও পুষ্টিগুণ আছে?
হ্যাঁ, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে।
কেটে রাখা পেঁয়াজ কী ক্ষতিকারক?
না, আপনি এর ব্যবহার করতে পারেন।
স্প্রিং অনিয়ন কী?
এটি পেঁয়াজেরই একটি অংশ। এটি আকারে ছোটো এবং সুস্বাদু হয়। এতেও নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে।
একদিনে কতগুলি পেঁয়াজ খাওয়া যেতে পারে?
এর নির্দিষ্ট কোনও সীমা নেই। তবে প্রয়োজনের বেশি কোনও জিনিসই শরীরের জন্য ভালো নয়। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও তাই। সারা দিনের সবজিতে এক থেকে দুটি পেঁয়াজ দিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত পেঁয়াজ খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
Sources
Articles on StyleCraze are backed by verified information from peer-reviewed and academic research papers, reputed organizations, research institutions, and medical associations to ensure accuracy and relevance. Read our editorial policy to learn more.
- Garlic and onions: Their cancer prevention properties – ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4366009/ - Quercetin in onion (Allium Cera L.) after heat-treatment simulating home preparation,
https://www.academia.edu/24486992/Quercetin_in_onion_Allium_cepa_L_after_heat_treatment_simulating_home_preparation - Antioxidant effect of onion oil (Allium cepa. Linn) on the damages induced by nicotine in rats as compared to alpha-tocopherol -,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/10906423/ - Antioxidative compounds from the outer scales of onion -,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/16218662/ - The antidiabetic effect of onion and garlic in experimental diabetic rats: meta-analysis -,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/19627203/ - Eating garlic and onion: a matter of life or death – ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC2364754/ - An Investigation of the Acute Effects of Oligofructose-Enriched Inulin on Subjective Wellbeing, Mood and Cognitive Performance,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/26516908/ - Fiber and Prebiotics: Mechanisms and Health Benefits,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3705355/ - Quercetin reduces systolic blood pressure and plasma oxidised low-density lipoprotein concentrations in overweight subjects with a high-cardiovascular disease risk phenotype: a double-blinded, placebo-controlled cross-over study ,
https://www.cambridge.org/core/journals/british-journal-of-nutrition/article/quercetin-reduces-systolic-blood-pressure-and-plasma-oxidised-lowdensity-lipoprotein-concentrations-in-overweight-subjects-with-a-highcardiovascular-disease-risk-phenotype-a-doubleblinded-placebocontrolled-crossover-study/8DB47B7FB4C09E5D3995A2F3F577D473 - The association between onion consumption and bone density in perimenopausal and postmenopausal non-Hispanic white women 50 years and older-,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/19240657/ - Quercetin, Inflammation and Immunity – ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4808895/ - Traditional and modern uses of onion bulb (Allium cepa L.) : A systematic review – ,
https://www.researchgate.net/publication/326262045_Traditional_and_modern_uses_of_onion_bulb_Allium_cepa_L_A_systematic_review - Anti-bacterial action of onion (Allium cepa L.) extracts against oral pathogenic bacteria,
 https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/9354029/ - Effect of onion extract on immune response in rabbits -,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/9103661/ - Peeling Back the Onion: An Outsider’s Observations -,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5426173/ - What can parents do about middle ear infections? – ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK279380/ - Effect of onion extract on corneal haze suppression after air assisted lamellar keratectomy -,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4829509/ - Effects of Onion Juice on the Normal Flora of Eyelids and Conjunctiva in an Animal Model,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4138639/ - Testosterone in Males as Enhanced by Onion (Allium Cepa L.)Â ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6406961/ - The Utilization of Traditional Medicine to Treat Fever in Children in Western Javanese Culture,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/29166189/ - Onion breeding program in turkey ,
https://pubag.nal.usda.gov/catalog/315859 - Allium cepa L. ,
 http://florawww.eeb.uconn.edu/198501260.html - Quercetin and Its Anti-Allergic Immune Response ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6273625/ - Effects of Probiotics on Cognitive Reactivity, Mood, and Sleep Quality  ,
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6445894/ - Effect of quercetin-rich onion peel extracts on arterial thrombosis in rats ,
 https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/23524316/ - In vitro antibacterial activity of onion (Allium cepa) against clinical isolates of Vibrio cholerae ,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/21702293/ - Antioxidative activity and ameliorative effects of memory impairment of sulfur-containing compounds in Allium species,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/16823099/ - Consumption of onion juice modulates oxidative stress and attenuates the risk of bone disorders in middle-aged and post-menopausal healthy subjects,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/26686359/ - Garlic and onion attenuates vascular inflammation and oxidative stress in fructose-fed rats ,
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/21876795/