অমরান্থ বা রাজগিরার স্বাস্থ্যোপযোগীতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Rajgira (Amaranth) Benefits and Side Effects

রাজগিরা বা অমরান্থ নামক দ্রব্যটির ব্যবহার প্রধাণত ব্রত পালন এবং পূজা অর্চনার সময়ই বেশি দেখতে পাওয়া যায়। তবে এর স্বাস্থ্যোপযোগীতার কথা মাথায় রেখে একে দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যায়। অমরান্থ কে চিনির রসের সাথে মিলিয়ে লাড্ডু তৈরী করা হয় এবং ছোলার সাথেও মিলিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও অমরান্থ বা অনন্তমূল এর উপকারীতা, ব্যবহার পদ্ধতি, পুষ্টি গুণ একইসাথে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধে বিশদে আলচনা করা হবে।
তবে তার আগে জেনে নেওয়া যাক এই অমরান্থ বা রাজগিরা আসলে কী।
In This Article
অমরান্থ বা রাজগিরা আসলে কী ?
অমরান্থ বা রাজগিরা, রামদানা নামেও পরিচিত। চৌলাই নামক উদ্ভিদ থেকে এই বীজ গুলি পাওয়া যায়। যে কোনো মুদি দোকান বা সুপার মার্কেটে এই রামদানা পাওয়া যায়। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হলো অমরান্থাস এবং ইংরিজি ভাষায় এটা অমরান্থাস নামেই পরিচিত। আমাদের দেশের বেশিরভাগ রাজ্যেই এই রামদানা বা অমরান্থাস পাওয়া যায় তবে স্থানভেদে দামের তফাৎ হয়। এটা ভারত সরকারের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ক্রয় করা যেতে পারে। রাজগিরা লাড্ডু, পুডিং এবং চিক্কি ইত্যাদি খাওয়ারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়।(1)
রাজগিরার উপকারীতা
রাজগিরার একাধিক স্বাস্থ্যোপযোগীতা রয়েছে। সেগুলি হলো নিম্নরূপ –
১. গ্লুটেন মুক্ত খাদ্য – রাজগিরাকে গ্লুটেন মুক্ত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গম, যব, এবং রাই থেকেই মূলত গ্লুটেন পাওয়া যায়(2) । অনেক সময় গ্লুটেন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রূপে কাজ করে। একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন থেকে জানতে পারা যায় যে গ্লুটেন গ্রহণ সেলিয়াক রোগের ( ক্ষুদ্রান্ত্রের হওয়া একটি অসুখ বিশেষ ) ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে (3)। এদিকে রাজগিরা যেহেতু গ্লুটেন মুক্ত হয় তাই বহু রোগের প্রকোপ থেকেই মানব দেহকে নিরাপদে রাখতে পারে। (4)
২. পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনের উৎস – শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য মানুষ একাধিক খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে রাজগিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ রাজগিরাকে পর্যাওত পরিমাণ প্রোটিনের উৎস বলে মনে করা হয়। দেহ কোষের মেরামত করতে এবং নতুন কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞ কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানতে পারা যায় যে, রাজগিরা শরীরে প্রোটিনের পরিমান বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম বিকল্প খাদ্য হিসেবে কাজ করে। (5) (6)
৩. প্রদাহ নাশক – শরীরে প্রদাহের সমস্যা দূরীকরণের ক্ষেত্রে অমরান্থাস বা রাজগিরার ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটি বৈজ্ঞাণিক গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে জানা গেছে যে এর মধ্যস্থিত অ্যান্টিইনফ্লেমেটারি বৈশিষ্ট্য প্রদাহের সমস্যা দূর করে। (7)
৪. হাড়ের স্বাস্থ্যোন্নতি করে – হাড়ের জোর বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে রাজগিরার ব্যবহার করা যেতে পারে। আসলে রাজগিরায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম। আমাদের সকলেরই একথা জানা যে হাড়ের গঠন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের কতটা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
৫. হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী – হার্টের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যাবতীয় বৈশিষ্ট্যও রাজগিরায় লক্ষ্যণীয়। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি হার্টের স্বাস্থ্যের পক্ষে অতি ক্ষতিকারক একটি অবস্থা। রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে হার্টের একাধিক রকম সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। রাজগিরা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (8) (9)
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে রাজগিরা থেকে প্রস্তুত তেল মোট কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ( রক্তে উপস্থিত ফ্যাট), এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) এর পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। (10)
৬. মধুমেহ বা ডায়বিটিস রোগের ভয়াভয়তা নাশক – মধুমেহ রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে হলে রাজগিরার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, রাজগিরা এবং রাজগিরার তেলের সাপ্লিমেন্ট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থেরাপি রূপে কাজ করে। যা হাইপারগ্লাইসিমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিতে নিরামায়ক রূপে কাজ করে এবং মধুমেহ রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করে।
অন্য একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে পর্যাপত ইনসুলিনের উপস্থিতির অভাবে রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ টাইপ ২ ডায়বিটিস সৃষ্টি করে। রাজগিরা এবং রাজগিরা তেলের মিশ্রণে প্রস্তুত সিরাম রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। (11) (12)
৭. ক্যান্সার প্রতিরোধক – ক্যান্সারের সম্ভবনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে রাজগিরার অবদান গুরুত্বপূর্ণ। রাজগিরায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যা শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে। এবং এতে করে ক্যান্সারের প্রকোপ থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। (13)
এছাড়াও রাজগিরায় ভিটামিন ই এর উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতন কাজ করে। এটা ফ্রি র্যাডিক্যালসের সাহায্যে কোষের আয়ু বৃদ্ধি করে এবং একাধিক রকমের ক্যান্সারের প্রকোপ থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। (14)
৮. লাইসিন (অ্যামিনো অ্যাসিডের) অন্যতম উৎস – লাইসিন এক ধরণের অ্যামিনো অ্যাসিড এবং অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরে প্রোটিন সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। রাজগিরার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে অ্যামিনো অ্যাসিড। (15)
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে – রাজগিরা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ জিঙ্ক, যা শরীরের অনাক্রম্যতা শক্তি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও রাজগিরায় রয়েছে ভিটামিন এ। শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে ভিটামিন এ এরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। (16)
১০. পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়ক – সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য হজম শক্তি উন্নত হওয়া বা পরিপাক ক্রিয়া উন্নত হওয়া জরুরী। এক্ষেত্রে রাজগিরার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ রাজগিরাতে অধিক মাত্রায় ফাইবার। আর ফাইবার হজম শক্তি উন্নত করতে সহায়ক। একইসাথে ফাইবার কোষ্ঠ্য কাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে। (17)
১১. ওজন নিয়ন্ত্রক – ওজন নিয়ন্ত্রন করার ক্ষেত্রেও রাজগিরার অবদান রয়েছে। এই ক্ষেত্রে আরোও একবার ফাইবারের কথা বলতে হয়। ফাইবার কেবলমাত্র কোষ্ঠ্য কাঠিন্যের নিরাময় করে তাই নয় একইসাথে হজম শক্তি উন্নত করে ওজন নিয়ন্ত্রনও করে থাকে। আসলে ফাইবারযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে দীর্ঘ সময় ব্যাপী পেট ভর্তি থাকে এবং বেশি খাওয়ার প্রবণতাও কমে যায়।
১২. দৃষ্টি শক্তি উন্নত হয় – চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো করার জন্যও রাজগিরা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ রাজগিরায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন এ। আর ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। রাজগিরা গ্রহণের ফলে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে চোখের যাবতীয় সমস্যা দূরীভূত হয় এবং দৃষ্টি শক্তি ও উন্নত হয়। (18)
১৩. গর্ভাবস্থায় উপকারী – গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। আর সেই কারণেই গর্ভবতীদের খাদ্য তালিকায় অমরান্থ বা রাজগিরার পস্থিতি একান্ত ভাবেই কাম্য। রাজগিরা গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যার পাশাপাশি অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যাও হ্রাস করে। কারণ এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন এ যা শরীরে আয়রণের ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়াও যেসব মহিলারা গর্ভাবস্থায় ধূমপান করেন তাদের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি এর প্রয়োজন হয়। যার রাজগিরা গ্রহণের মাধ্যমে সম্ভব হয়। অবশ্য গর্ভাবস্থায় রাজগিরা সেবনের আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। একইসাথে একথাও জেনে রাখা জরুরী যে ধূমপান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। (19) (20)
১৪. চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী – মাথার চুল এবং ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্যও রাজগিরা খুবই উপকারী। চুলের গোড়া মজবুত রাখার জন্য রাজগিরা খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর কারণ হলো রাজগিরা পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক সমৃদ্ধ আর জিঙ্ক সেবন চুলের পক্ষে খুবই উপকারী। মাথার ত্বকের যাবতীয় সমস্যা, চুলকুনি ইত্যাদির উপশম করে জিঙ্ক। এরফলে চুল পড়াও রোধ হয়।
ত্বকের স্বাস্থ্যোন্নতির ক্ষেত্রেও রাজগিরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, যা ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন সি হলো এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনী রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বকের রক্ষা করে।
১৫. রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া নাশক – রাজগিরা রক্তাল্পতা দূর করার ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রক্তাল্পতা এমন একটি অবস্থা যা শরীরে লোহিত কোনিকার অভাবেই প্রধাণত সৃষ্টি হয়। যেহেতু রাজগিরায় রয়েছে আয়রন আর আয়রণ লোহিত কণিকা উৎপাদন বৃদ্ধি করে রক্তাল্পতা দূর করে।
রাজগিরার পুষ্টি গুণ
রাজগিরা বা অমরান্থর পুষ্টি গুণ গুলি হলো নিম্নরূপ –
পৌষ্টিক উপাদান | প্রতি ১০০ গ্রামে পরিমাণ |
জল | ১১.২৯ গ্রাম |
শক্তি | ৩৭১ কিক্যাল |
প্রোটিন | ১৩.৫৬ গ্রাম |
মোট লিপিড | ৭.০২ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৬৫.২৫ গ্রাম |
মোট ডায়টারী ফাইবার | ৬.৭ গ্রাম |
মোট শর্করা | ১.৬৯ গ্রাম |
মিনারেলস | |
ক্যালসিয়াম | ১৫৯ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ৭.৬১ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেশিয়াম | ২৪৮ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৫৫৭ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ৫০৮ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ৪ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ২.৮৭ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন | |
ভিটামিন সি | ৪.২ মিলিগ্রাম |
থায়মিন | ০.১১৬ মিলিগ্রাম |
রাইবোফ্লাবিন | ০.২০০ মিলিগ্রাম |
নিয়াসিন | ০.৯২৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৬ | ০.৫৯১ মিলিগ্রাম |
ফলেট | ৮২ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন এ | ২ আইইউ |
ভিটামিন ই | ১.১৯ মিলিগ্রাম |
লিপিড | |
মোট স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ১.৪৫৯ গ্রাম |
মোট মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ১.৬৮৫ গ্রাম |
মোট পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ২.৭৭৮ গ্রাম |
সূত্র – USDA (21)
রাজগিরার ব্যবহার
নিম্নলিখিত উপায়ে রাজগিরা ব্যবহার করা যেতে পারে।
- রাজগিরা দিয়ে পুডিং তৈরী করে খাওয়া যেতে পারে।
- রাজগিরা দানাকে ঘিয়ে ভেজে, তারপর তা দুধে ফুটিয়ে করলে একটা খাওয়ার পদ তৈরী হয়।
- ভাজা রাজগিরা দানার সাথে চিনির রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- রাজগিরা দিয়ে লাড্ডূ তৈরীও করা যায়।
- রাজগিরার দানা কে সুজির মতন ব্যবহার করে গুঁজিয়া তৈরী করা যায়।
- এছাড়াও ভাজা রাজগিরার সাথে দুশ মিশিয়ে পায়েস তৈরী করা যেতে পারে।
কোন সময়ে রাজগিরা ব্যবহার করা যেতে পারে ?
পুজো বা উপসের দিন রাজগিরা ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও দিনে বা রাতে যে কোনো সময়েই রাজগিরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
রাজগিরা গ্রহণের পরিমাণ
দৈনিক ৫০ গ্রাম পর্যন্ত রাজগিরা গ্রহণ করা যায়। তবে আপনার স্বাস্থ্য অনুসারে রাজগিরা গ্রহণের সঠিক পরিমাপ জানতে হলে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করা দরকার।
রাজগিরার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
পরিমিত পরিমান রাজগিরা গ্রহণ না করে অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণের ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। রাজগিরা গ্রহণের ফলে সৃষ্ট পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি হলো নিম্নরূপ –
- অনেকক্ষেত্রে রাজগিরা গ্রহণ ক্যান্সারের মতন দীর্ঘস্থায়ী অসুখের সম্ভবনা বৃদ্ধি করে।
- রাজগিরার মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত ফসফরাস। শরীরে ফসফরাসের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে হাড়ের গঠন দুর্বল হয়ে পরে।
- রাজগিরায় রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম। অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে প্রোস্ট্রেট ক্যান্সার এবং হার্টের অসুখের প্রবণতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়।
- পটাশিয়ামও রাজগিরার মধ্যস্থ একটি গুরুত্বপূর্ণ পৌষ্টিক উপাদান। শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। একইসাথে কিডনিতে স্টোনের সম্ভবনাও বৃদ্ধি পায়।
- শরীরে ফাইবারের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে গেলে ফ্যাটুলেন্স এবং পেটে খিঁচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আশা করা যায় উপরিক্তো প্রবন্ধ রাজগিরা বা অমরান্থাস সম্বদ্ধে যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে রাজগিরা গ্রহণের ক্ষেত্রে কতকগুলি সতর্কতা গ্রহণ জরুরী। অন্যথায় একাধিক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী –
রাজগিরা এবং ক্কিনাআ মধ্যে পার্থক্য কী? রাজগিরায় কী ক্কিনাআয়ের মতন স্যাপোনিন থাকে?
রাজগিরা এবং ক্কিনাআ স্বাস্থ্যোপযোগীতা মোটামুটি একইরকম হয়। কিন্নাআয়াতে রাজগিরার মতন স্যোপানিনও পাওয়া যায়। এছাড়াও এটা ক্যান্সার এবং ডায়বিটিসের সমস্যা প্রতিরোধ করার কাজেও ব্যবহৃত হয়।
রাজগিরা কীভাবে জন্মায়?
রাজগিরার বীজ জমিতে চাষ করা হয়। এরপর বীজ থেকে উদ্ভিদের জন্ম হয় এবং ফলন শুরু হয়। এইসময় রাজগিরার দানা উদ্ভিদ থেকে পৃথক করা হয়।
রাজগিরা স্বাদে কেমন হয়?
এটা এমনিতে স্বাদহীনই হয়ে থাকে। তবে চিবিয়ে খাওয়ার সময় হালকা মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়।
রাজগিরার কী কোনো বিকল্প দ্রব্য আছে ?
রাজগিরার একমাত্র বিকল্প হতে পারে ক্কিনাআ। কারণ রাজগিরার মতন সম পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ খাদ্য হলো ক্কিন্নাআ।
রাজগিরা চাষের পদ্ধতি কী?
রাজগিরা বীজ বপন করতে হলে প্রথমে একটি পাত্রে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সকালে ঐ ভেজা বীজ গুলি শুকনো করার জন্য সেটা জল থেকে বের করে শুকনো কাপড় জড়িয়ে রাখতে হবে। এবার ঐ কাপড়ে দিনে অন্তত ৪-৫ বার জলের ছিটে দিতে হবে আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য। সারাদিন এইভাবে জলের ছিটে দিয়ে রাখার পর রাতটা ওভাবেই রেখে দিতে হবে। পরদিন সকালে ঐ বীজ গুলি অঙ্কুরিত হতে দেখা যাবে।
রাজগিরার থেকে প্রাপ্ত আটার উপকারীতা কী?
রাজগিরা এবং তা থেকে প্রাপ্ত আটার বৈশিষ্ট্য এবং পুষ্টি গুণ একই। রাজগিরা দানার মতো তা থেকে প্রাপ্ত আটাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি এবং ফাইবার। এগুলি ত্বক, হাড়, রক্ত এবং কোষ্ঠ্য কাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
Sources
- Variety-wise Daily Market Prices of Amaranthus 2019 –
https://data.gov.in/resources/variety-wise-daily-market-prices-amaranthus-2019 - Gluten: A Benefit or Harm to the Body?
https://www.hsph.harvard.edu/nutritionsource/gluten/ - Celiac disease – sprue –
https://medlineplus.gov/ency/article/000233.htm - Learn about gluten-free diets –
https://medlineplus.gov/ency/patientinstructions/000813.htm - Protein in diet –
https://medlineplus.gov/ency/article/002467.htm - Healthy grocery shopping –
https://medlineplus.gov/ency/patientinstructions/000336.htm - Extrusion improved the anti-inflammatory effect of amaranth (Amaranthus hypochondriacus) hydrolysates in LPS-induced human THP-1 macrophage-like and mouse RAW 264.7 macrophages by preventing activation of NF-κB signaling –
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/24431078/ - High Blood Cholesterol What you need to know –
https://www.nhlbi.nih.gov/files/docs/public/heart/wyntk.pdf - Simple, heart-smart substitutions –
https://medlineplus.gov/ency/patientinstructions/000746.htm - Amaranth oil application for coronary heart disease and hypertension
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC1779269/ - Antioxidative and anti-diabetic effects of amaranth (Amaranthus esculantus) in streptozotocin-induced diabetic rats
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/16634092/ - Insulin Resistance & Prediabetes –
https://www.niddk.nih.gov/health-information/diabetes/overview/what-is-diabetes/prediabetes-insulin-resistance - Amaranth
https://nesfp.nutrition.tufts.edu/world-peas-food-hub/world-peas-csa/produce-recipes/amaranth - vitamin E
https://www.cancer.gov/publications/dictionaries/cancer-terms/def/vitamin-e - Amino acids –
https://medlineplus.gov/ency/article/002222.htm - Role of Vitamin A in the Immune System
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6162863/ - Fiber –
https://medlineplus.gov/ency/article/002470.htm - Vitamin A
https://medlineplus.gov/vitamina.html - The Effects of Vegetarian and Vegan Diet during Pregnancy on the Health of Mothers and Offspring –
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6470702/ - Vitamin C
https://medlineplus.gov/ency/article/002404.htm - USDA
https://fdc.nal.usda.gov/ndb/foods/show/20001?fgcd=&manu=&format=&count=&max=25&offset=&sort=default&order=asc&qlookup=Amaranth&ds=&qt=&qp=&qa=&qn=&q=&ing=