
সবেদার উপকারীতা, ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া | Sapota Benefits, Uses and Side Effects
প্রত্যেক ফলেরই নিজস্ব গুণাগুণ এবং বৈশিষ্ট্য থাকে। সবেদাও এর ব্যতিক্রম নয়। স্বাদে মিষ্টি এই ফলে রয়েছে এমন কিছু পৌষ্টিক উপাদান যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপযোগী। বহু যুগ ধরেই স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় একাধিক সমস্যায় সবেদা পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা সবেদার পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্যোপযোগীতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হবে। আশা করা যায় এই প্রবন্ধ পাঠকের সুবিধার্থে আসবে।
সবেদার উপকারীতা
ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সবেদা স্বাস্থ্য, চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। তবে শুধু সবেদা নয় সবেদা পাতা, গাছের শিকড় এবং গাছের ছালও স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপযোগী। সবেদার স্বাস্থ্যোপযোগীতার ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যে সামাণ্য হলেও ইঙ্গিত পেয়েছি। প্রবন্ধের পরবর্তী অংশে বিশদে জানা যাবে। (1)
Table Of Contents
সবেদার স্বাস্থ্যোপযোগীতা
সবেদার স্বাস্থ্যোপযোগীতা গুলি হলো নিম্নরূপ –
১। মেদ হ্রাসক বা ওজন নিয়ন্ত্রক – কম শারীরিক সচলতার দরুন ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে সবেদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মনে করা হয় যে খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ করলে প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ ভাবে ওজন হ্রাস পায়। ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যাণ্ড নিউট্রিশান কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণা সূত্রে জানা গিয়েছে যে সবেদা গ্যাস্ট্রিক এনজাইম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রন করতে পারে যা মেটাবলিজমকে প্রভাবিত করে। তবে সবেদার পুষ্টি গুণ সম্পর্কে জানতে এখনও আরোও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
২। ক্যান্সার প্রতিরোধক – দীর্ঘদিন যাবত সবেদায় ক্যান্সার প্রতিরোধক গুণাবলী রয়েছে কিনা সে বিষয়ে গবেষণা করা হচ্ছিলো। এবং সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা থেকে সবেদার ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা গিয়েছে। এই গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে সবেদার মিথানল নির্যাস ক্যান্সারের সম্ভবনা প্রবণ টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। একইসাথে আরোও জানতে পারা গিয়েছে যে, সবেদা এবং ফুলের নির্যাস স্তন ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে মানুষের ক্যান্সার প্রতিরোধের ওপর সবেদার প্রভাব খতিয়ে দেখতে আরোও গবেষণার প্রয়োজন আছে। প্রসঙ্গত ক্যান্সার একটি দুরারোগ্য অসুখ। তাই এই অসুখে আক্রান্ত হলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা রীতি অবলম্বন না করে অবিলম্বে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা দরকার।(2)
৩। শক্তি বর্দ্ধক – ফল হিসেবে সবেদা শক্তির একটি অন্যতম প্রধান উৎস বলে মনে করা হয়। আসলে সবেদায় উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগান দেয়। এছাড়াও সবেদায় রয়েছে সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজ নামক প্রাকৃতিক শর্করা যা শরীরে শক্তির ঘাটতি মেটায়। এই কারণে সবেদাকে শক্তির উদ্ভিজজাত উৎস বলে চিহ্নিত করা হয়। সারাদিন শরীরকে কর্মোদ্যমী থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির সরবরাহ করে। (3) (4)
৪। হাড়ের শক্তি বর্দ্ধক – হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবেদায় এই তিনটি পৌষ্টিক উপাদানই পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। তাই সবেদা হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে তলার ক্ষেত্রে খুবই উপাদেয়। এছাড়াও সবেদায় রয়েছে তামাজাত উপাদান যা হাড় এবং হাড় সংযুক্ত দেহ কোষ এবং পেশীর জন্য অপরিহার্য। তামা অস্টিওপোরেসিস, (হাড়ের ক্ষয় রোগ), পেশীর দূর্বলতা, দুর্বল জয়েন্টের শক্তি হ্রাস ইত্যাদির উপশমে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করে। শুধু তাই নয় সবেদায় উপস্থিত তামা, ম্যাঙ্গানীজ, জিঙ্ক, এবং ক্যালসিয়াম বার্ধক্যজনিত কারণে হাড়ের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
৫। অনাক্রম্যতা – সবেদার স্বাস্থ্যোপযোগীতার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বা অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। হরিয়ানার গুরু জামেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায় যে সবেদায় উপস্থিত ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে একইসাথে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমনের ক্ষমতা উন্নত করে। মানসিক চাপের কারণে যে শারীরিক দূর্বলতা দেখা যায় সেটাও প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি এর জুরী মেলা ভার।
৬। গর্ভাবস্থায় উপকারী – গর্ভাবস্থায় উপযোগী একাধিক ফলের মধ্যে সবেদা হলো একটি অন্যতম নাম। সবেদায় উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, ভিটামিন সি, ইত্যাদি পৌষ্টিক উপাদান গর্ভবতী মহিলা এবং স্তনদায়ী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। খাদ্য হিসেবে সবেদা, গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ক্ষেত্রে এবং একইসাথে গর্ভবস্থার বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ যেমন গা বমি ভাব, মাথা ঘোরা ইত্যাদির সহজেই উপশম করে। এছাড়াও সবেদায় উপস্থিত ফলেট এবং আয়রন গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রক্তাল্পতার ঝুঁকি হ্রাস করে। একইসাথে ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে।
৭। পরিপাকে সহায়ক এবং কোষ্ঠ্য কাঠিন্য নাশক – পরিপাক ক্রিয়া সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের জন্য ফাইবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এবং একইসাথে মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্র্য পদার্থ বিয়োগ করতে সহায়তা করে। মনে করা হয় যে সবেদায় উপস্থিত ফাইবার হজমে সহায়ক। এবং সুষ্ঠভাবে মল ত্যাগের কারণে কোষ্ঠ্য কাঠিন্যের সমস্যাও দূরীভুত হয়। শোনা যায় যে সবেদা জলে ফুটিয়ে সেদ্ধ করে গ্রহণ করলে তা অনায়াসেই ডায়রিয়া নিরাময় করে। এছাড়াও সবেদায় উপস্থিত ট্যানিন অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি বা প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। যা ইসোফাটাইটিস, এন্টারাইটিস, অন্ত্রের অসুখ, পেট ব্যথা, এবং সর্বোপরি গ্যাসের সমস্যা নাশ করতে সহায়তা করে।
৮। রক্তচাপ হ্রাসক – সবেদায় উপস্থিত ম্যাগনেশিয়াম রক্তবাহিকা গুলি সচল রাখে। এছাড়াও সবেদায় উপস্থিত পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে। প্রতিদিন সবেদা সেদ্ধ করার পর সেই জল পান করলে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৯। দাঁতের ক্ষয় রোগ নিরাময় – দাঁতের ক্ষয় রোগ এখনকার দিনে একটি অতি পরিচিত অসুখ। যা প্রধানত ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমনের কারণে হয় বলে মনে করা হয়। সবেদা এক্ষেত্রে একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সবেদায় উপস্থিত অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সংক্রমন সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করে দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। একটি গবেষণা সূত্রে জানা যায় যে সবেদা থেকে তৈরী এক ধরণের চুইংগাম দাঁতের গহ্বর পূরণ করতে সহায়তা করে। একইসাথে সবেদাথিত ভিটামিন এ মুখ গহ্বরের মধ্যেকার ক্যান্সারের সম্ভবনাও প্রতিরোধ করে। (5)
১০। কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা হ্রাসক – অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণের অভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন কিডনিতে পাথরের মতন শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে এই সমস্যার থেকে অনায়াসে মুক্তি পেতে হলে খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ অপরিহার্য। কিডনির পাথর থেকে রক্ষা পেতে হলে এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিলে সবেদা ফলের বীজ গুঁড়ো করে তা গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়। সবেদা বীজের গুঁড়ো গ্রহণ করলে প্রসাবের সাথে কিডনিতে উপস্থিত পাথর বেরিয়ে যায় বলে মনে করা হয়।
১১। সর্দি কাশি প্রতিরোধক – সর্দি কাশি দূর করার ক্ষেত্রেও সবেদা খুবই উপকারী একটি ফল। এটি নাসারন্ধ্র, শ্বাসনালী, এবং মিউকাস থেকে শ্লেষ্মা দূর করে শরীরে আরাম দেয়। এনসিবিআই (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, সবেদা পাতা প্রাচীনকাল থেকেই সর্দি এবং কাশির নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। মনে করা হয় যে সবেদা পাতা ফুটিয়ে সেই জল ঠাণ্ডা করে পান করলে সর্দি – কাশির উপশম হয়। তবে একথা এখনও প্রমাণিত হয়নি যে সবেদায় কোন রাসয়নিক যৌগের উপস্থিতির জন্য এমনটা হয়। (6)
১২। মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে – সবেদা মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ্য রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মনে করা হয় যে সবেদা স্নায়বিক চাপ কম করে যার ফলে মস্তিষ্কের স্নায়ু শান্ত থাকে। এছাড়াও অনিদ্রা, অবসাদ, এবং বিষন্নতা ও উদ্বেগে জর্জরিত মানুষদের খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত সবেদায় উপস্থিত আয়রন মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে। যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে বৃদ্ধি করে তোলে। প্রসঙ্গত আয়রনের অভাব শারীরিক অস্বস্তি, জ্বালাভাব এবং একাগ্রতার অভাব ঘটায়। তাই মনে করা হয় যে খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যোন্নতি ঘটে।
১৩। প্রদাহ নাশক – পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্যানিনের উপস্থিতির কারণে সবেদাকে প্রদাহ নাশক এজেন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি পেটের সমস্যা এবং প্রদাহ জনিত ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এর প্রভাবে শরীরের যে কোনো অংশে তরল সঞ্চয়ে বাধা প্রদত্ত হয়। ফলে ইডিমা বা প্রদাহ প্রতিরোধ হয়। এছাড়াও শ্বাস প্রশ্বাস সম্পর্কিত অন্যান্য রোগ উপশম করে সবেদা। প্রদাহের ফলে সৃষ্ট রোগের মধ্যে রয়েছে আর্থ্রাইটিস, লুপাস, মাল্টিপল স্ক্লোরোসিস ইত্যাদি। (7)
১৪। ত্বকের সুস্বাস্থ্য রক্ষা – ত্বকের সুস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে সবেদা অপরিহার্য। এটা একাধারে যেমন ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে অন্যদিকে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমন থেকে ত্বককে রক্ষা করে। সবেদায় উপস্থিত ভিটামিন এ, সি, ই ত্বকের পুষ্টি জোগায়। এছাড়াও সবেদার অ্যান্টি – অক্সিডেন্ট প্রভাব সহ পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড যৌগের উপস্থিতি ত্বকের বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে। সবেদা গাছের পাতা থেকে নিঃসৃত দুগ্ধজাত পদার্থ ছত্রাক সংক্রমন প্রতিরোধ এবং হ্রাসে সহায়তা করে।
১৫। চুলের স্বাস্থ্যোন্নতি – চুলের স্বাস্থ্যোন্নতির ক্ষেত্রেও সবেদা খুবই উপযোগী একটি ফল। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ ত্বকের গ্রন্থিতে সিবাম নামক তৈলাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে। শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি হলে অ্যালোপেসিয়া বা টাক পরার মতন সমস্যা প্রতিরোধ করে। মনে করা হয় যে সবেদার বীজ থেকে নিষ্কাশিত তেল স্ক্যাল্প ময়শ্চারাইজ করে চুল নরম করতে সাহায্য করে। নরম চুল মাথার আলাদা রকম সৌন্দর্য এনে দেয়। এছাড়াও সবেদা বীজ ক্যাস্টর অয়েলের সাথে মিশিয়ে প্রলেপ তৈরী করে সেটা মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখলে তা খুসকি নাশ করে।
সবেদার পুষ্টি গুণ
তাহলে এবার সবেদার পুষ্টি গুণের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক –
পৌষ্টিক উপাদান | প্রতি ১০০ গ্রামে পরিমাণ |
---|---|
জল | ৭৮ গ্রাম |
শক্তি | ৮৩ কিক্যালোরি |
প্রোটিন | ০.৪৪ গ্রাম |
মোট ফ্যাট | ১.১ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ১৯.৯৬ গ্রাম |
ফাইবার | ৫.৩ গ্রাম |
মিনারেলস | |
ক্যালসিয়াম | ২১ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৮ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেশিয়াম | ১২মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১২ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ১৯৩ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ১২ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ০.১ মিলিগ্রাম |
কপার | ০.০৮৬ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন | |
ভিটামিন সি | ১৪.৭ মিলিগ্রাম |
নিয়াসিন | ০.২ মিলিগ্রাম |
মোট ফলেট | ১৪ মাইক্রোগ্রাম |
কোলিন | ৩৪.৪ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ৩ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন এ আইইউ | ৬০ আইইউ |
সূত্র – (8) USDA
সবেদার ব্যবহার পদ্ধতি
সবেদার উপকারীতার বিষয়ে জানার পর স্বাভাবিকভাবেই এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে করবে। তাহলে এবার সবেদার ব্যবহার গুলি সম্বদ্ধে জেনে নেওয়া যাক –
- সবেদা একটি ফলের মতন খাওয়া যেতে পারে।
- এটি ফলের স্যালাডে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সবেদার জুস বা স্মুথি বানিয়ে বেভারেজ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
- সবেদা ব্যবহার করে সবেদার স্বাদযুক্ত আইসক্রিম তৈরী করা যায়।
- ফ্রুট বার তৈরী করে খাওয়া যেতে পারে।
- সবেদার সাহায্যে পুডিং ব্যবহার করা যায়।
- এছাড়াও সবেদা থেকে সবেদার জ্যাম তৈরী করা যায়।
- মিষ্টি সস তৈরী করেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক সবেদার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি কি কি ।
সবেদার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
সবেদার যেমন উপকারীতা রয়েছে তেমনি এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সবেদার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি হলো নিম্নরূপ –
- কাঁচা সবেদা ফল স্বাদে তিক্ত হয় এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ল্যাটেক্স এবং ট্যানিনের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। তাই কাঁচা সবেদা খেলে মুখে আলসার হওয়ার সম্ভবনা দেখা যায়।
- গলায় চুলকুনি হতে পারে।
- বদহজমের সমস্যা দেখা যায়।
- সবেদা বীজের গুঁড়ো অনেক সময় পেটে ব্যথার সৃষ্টি করে। কারন এতে রয়েছে সাপোটিন এবং সাপোটাইন নামক রাসয়নিক পদার্থ।
- সবেদা পাতার ব্যবহারে ডায়রিয়া এবং ত্বকে চুলকুনির উপক্রম হয়।
ওপরের প্রবন্ধ থেকে সবেদার উপকারিতা , স্বাস্থ্যোপযোগীতা, ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্বদ্ধে একটা বিস্তারিত ধারণা পাওয়া গেলো। তবে একথাও মনে রাখা দরকার যে কোনো গুরুতর অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণের পূর্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা দরকার। ক্যান্সারের মতন অসুখের চিকিৎসায় সবেদার সাহায্যে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসায় না গিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসকের অধীনে অসুখের পূর্ণাঙ্গ নিরাময় করা উচিৎ।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ করলে কী ওজন বাড়ে?
খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা বেশ কম। বরং ওজন হ্রাস পায় সবেদা গ্রহণের ফলে।
সবেদা কী লিভারের জন্য উপকারী?
সবেদা পরিপাক ক্রিয়া উন্নত করে। তাই মনে করা হয় সবেদা লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সবেদা ত্বকের জন্য উপকারী ?
হ্যাঁ, সবেদা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।
কিডনির অসুখে আক্রান্ত মানুষদের জন্য কী সবেদা উপকারী?
সবেদা কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভবনা একেবারে কমিয়ে দেয় ঠিকই তবে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষদের সবেদা খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ।
8 Reference
Stylecraze has strict sourcing guidelines and relies on peer-reviewed studies, academic research institutions, and medical associations. We avoid using tertiary references. You can learn more about how we ensure our content is accurate and current by reading our editorial policy.
- A study on nutritional and health importance of “Sapotas”
http://www.foodsciencejournal.com/archives/2018/vol3/issue1/3-4-63 - INTERNATIONAL JOURNAL OF ADVANCE RESEARCH, IDEAS AND INNOVATIONS IN TECHNOLOGY
https://www.ijariit.com/manuscripts/v3i6/V3I6-1490.pdf - CHICKOO: A WONDERFUL GIFT FROM NATURE
https://ijrap.net/admin/php/uploads/1389_pdf.pdf - Development of Fruit Bar Using Sapodilla (Manilkara zapota L.): Development of Fruit Bar Using Sapodilla
https://www.researchgate.net/publication/303835003_Development_of_Fruit_Bar_Using_Sapodilla_Manilkara_zapota_L_Development_of_Fruit_Bar_Using_Sapodilla_Manilkara_zapota_L - Tooth Decay Is the Most Prevalent Disease
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6373711/ - In-vivo anti-inflammatory and anti-pyretic activities of Manilkara zapota leaves in albino Wistar rats
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4027313/ - Chronic inflammatory systemic diseases
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4753361/ - USDA
https://fdc.nal.usda.gov/fdc-app.html#/food-details/167759/nutrients

Latest posts by StyleCraze (see all)
- বাঁধাকপির স্বাস্থ্যোপযোগীতা, গুণাগুণ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এবং ব্যবহার | All About Cabbage - January 22, 2021
- রোগা হওয়ার উপায় খুঁজছেন? জেনে নিন ৪ সপ্তাহের কিটো ডায়েট প্ল্যান, উপকারিতা এবং অন্যান্য টিপস | Keto Diet in Bengali - January 22, 2021
- অরিগ্যানোর ব্যবহার, উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া – Oregano Benefits and Side Effects - January 21, 2021
- সূর্য প্রণামের প্রকারভেদ এবং উপকারিতা | Surya Namaskar (Sun Salutation) Types and Benefits in Bengali - January 21, 2021
- ওজন হ্রাসে প্যালিয়ো ডায়েট (Paleo Diet) -এর ভূমিকা | Paleo Diet For Weight Loss in Bengali - January 21, 2021
