সামনেই ৩০-এ পা দিচ্ছেন বলে বিয়ের চাপ ? জেনে নিন কিছু কথা

‘মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি’ কথাটা আমাদের সমাজে খুবই প্রচলিত এবং এই রকমের কথা বা ধারণার জন্যই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া নিয়ে সবার খুব মাথা ব্যাথা থাকে। আদৌ মেয়েটি কি চায় তা নিয়ে কারোর কোনো কিছু এসে যায় না। আজকাল গ্রাজুয়েশন বা মাস্টার্স শেষ করার পর বা সবে চাকরিতে ঢুকেছে এই সময় থেকেই মেয়েদের ‘কিরে বিয়ে কবে করবি ?’ এ ধরনের মন্তব্য শুনতে হয়। আগে তো মেয়ে স্কুল পাশ করেছে বা কলেজে পড়ছে মানেই বিয়ের কথা-বার্তা শুরু হয়ে যেত। সমাজ কিছুটা এগোলেও মূল ধ্যান ধারণার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
নিজের ইচ্ছে হলে তবেই
নিজে যখন মনে করবেন, আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত অর্থাৎ অন্য কাউকে নিজের জীবনে পাকাপাকিভাবে আনতে প্রস্তুত, তখনই এই সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো আত্মীয় পরিজন বা বন্ধু বান্ধব বা বাবা মা এর চাপে পড়ে নিজের জীবনের এতো বড়ো সিদ্ধান্ত নেবেন না। অন্য একজন মানুষ নিজের জীবনে এলে আপনার জীবনযাত্রার কিন্তু অনেক পরিবর্তন আসবে। সেগুলো জানেন তো ? আজকাল মেয়েরা নিজেরদের বিষয়টা নিজেরাই বুঝে নেয়, অন্য কেউ সেই বিষয়ে কিছু বলুক তা চায় না। তাই এ ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিজে নিন।
মূল্যবোধের দাম অনেক বেশি
ছেলেদের মধ্যে অনেকসময়ই মূল্যবোধের অভাব দেখা যায়, আর সেই জন্য হয়তো মেয়েরা তাদের ভরসা করতে পারে না। যে সম্পর্কে মূল্যবোধের অভাব, সেখানে জানবেন প্রকৃত সম্মান পাবেন না। তাই যেখানে আপনাকে কেউ সম্মান করছে না কিন্তু বিয়ের জন্য আপনার বাড়ির থেকে চাপ আসছে বয়স বেড়ে যাচ্ছে বলে, সেখানে কখনোই মত দেবেন না।
এখনকার মেয়েরা দেখাশোনার বিয়েতে খুব একটা আগ্রহী হন না
দেখাশোনার বিয়ে যে খুব খারাপ বা কেউই সুখী হয় না তা নয়। কিন্তু এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়। অনেক শর্ত মানার ব্যাপার চলে আসে। তাই এসব ঝামেলায় অনেকেই পড়তে চান না। কিন্তু যারা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে সম্মতি দেয়, তাদের অবশ্যই উচিত বিয়ের আগে মেলামেশা করে নেওয়া কারণ এখন আর সেই দিন নেই যে বর যা বলবে বৌ মানবে। এখন সবার মত প্রকাশ করার অধিকার আছে আর না থাকলেও এখনকার মেয়েরা তা অর্জন করে নিতে জানে।
বিয়ের সঠিক সময় বলে কিছু হয়না
বিয়ে করার সঠিক বয়স কোথাও কিন্তু লেখা নেই। কিন্তু আমাদের সমাজ বিয়ের আগেই মেয়েদের সংসার, সন্তান অনেক কিছু নিয়েই ভাবনা মাথায় ঢুকিয়ে দেয়। মেয়েরা ৩০ বছর বয়সে সঙ্গী না পেলে মেয়েরা নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন বা ৩০ বছরের পর বিয়ে হলে নাকি মেয়েদের সন্তান ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। এই ধরণের কথা বার্তা আমরা সবাই শুনে থাকি। তাই এসবে কান না দিয়ে সঠিক জীবনসঙ্গী খুঁজে পেলে তবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিন। সেখানে ৩০ বা ৩৩ সেটা কোনও বড় বিষয় নয়, এই ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জরুরি।
সমাজকে বোঝানোর সময় এসেছে যে মেয়েরা কারোর দয়ার পাত্রী হয়ে থাকতে চান না, তাঁরা নিজেদের মতো করে নিজেদের জীবন কাটাতে চান আর সেই জন্যই তারা নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে চান।